
অনলাইন ডেস্কঃ
২০ শতাংশ পারস্পরিক শুল্কের সুফল পেতে শুরু করেছে পোশাক খাত। কারণ, মোট পোশাক রফতানির ২০ শতাংশের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। আমেরিকায় চীন ও ভারতের শুল্ক যেখানে যথাক্রমে ৩০ ও ৫০ শতাংশ, সেখানে এই দুই দেশের চেয়ে বাংলাদেশের শুল্ক অনেক কম।
এছাড়া, ভিয়েতনাম ও মিয়ানমানসহ অন্যান্য প্রতিযোগী দেশের সমান বাংলাদেশের শুল্কহার। তাই উদ্যোক্তোদের মধ্যে স্বস্তি। চীন ও ভারতের ক্রেতারাও আগ্রহ দেখাচ্ছে।
তবে বিপুল চাহিদা পূরণে কি সক্ষম বাংলাদেশ? ব্যাংক, বিদ্যুৎ-জ্বালানিসহ নানা ক্ষেত্রে জেঁকে বসেছে সংকট। উদ্যোক্তারা বলছেন, সক্ষমতা অর্জনে সরকারের সুনজর দরকার।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেছেন, আমদানি-রফতানির জন্য সবচেয়ে এক নাম্বার চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ব্যাংক। ব্যাক টু ব্যাকের পেমেন্ট আজকে দেয়ার কথা, আজকে দিতে পারি নাই। কোনও কারণে আমার হয়তো রফতানির টাকাটা আসে নাই। না আসার কারণে রাত থেকেই ওভারডিউ; বাংলাদেশ ব্যাংকের ড্যাশবোর্ডে অ্যাকাউন্টে রেডমার্ক দেখা দেবে। রেডমার্ক হয়ে গেলে যেকোনো ব্যাংকে ওই কোম্পানির সব কার্যক্রম বন্ধ।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ইনামুল হক খান বাবলু প্রশ্ন তুললেন, ১৩-১৪ শতাংশ সুদের হারে ব্যবসা করে কীভাবে ছোট ছোট ফ্যাক্টরিগুলো টিকে থাকবে?
শুধু ব্যাংকই নয়, পুরনো সমস্যা গ্যাস ও বিদ্যুৎ। এখনও বড় সংখ্যক কারখানার উৎপাদন ব্যহ্যত হবার নৈপণ্যে জ্বালানি। নানামুখী প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও পরিস্থিতির উত্তরণ নেই।
ইনামুল হক খান বাবলু বলেন, বাংলাদেশে জ্বালানি বড় একটা চ্যালেঞ্জ। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের এই চ্যালেঞ্জ তো থেকেই যাচ্ছে। বিদ্যুতে কিছুটা উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু গ্যাসের অবস্থা খুবই খারাপ।
চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা নিয়েও আছে প্রশ্ন। পণ্য লোড-আনলোডের ক্ষেত্রে এখনও পোহাতে হয় রাজ্যের ঝক্কি-ঝামেলা।
ইনামুল হক খান বাবলু বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থা খুবই চ্যালেঞ্জিং। কার্যক্রম খুবই ধীর গতির, আউটার এংকারেজে জাহাজ বসে থাকছে ১২ থেকে ১৫ দিন। ভেতরে আসার পরে যেখানে একদিন বা দুইদিন থাকার কথা সেখানে জাহাজটা ৩-৪ দিন থাকতেছে। ফলে চট্টগ্রাম বন্দর আমাদের লিড টাইমটাকে একদম নষ্ট করে দিচ্ছে। আমরা একটা হিসাব করে কাজ করি, চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ ঢুকবে, মাল আনলোড হবে। কারখানায় আবার উৎপাদন করে চট্টগ্রাম বন্দরে পাঠাবো, আবার রফতানি হবে। এই জায়গাটায় আমাদের সময় নষ্ট হচ্ছে।
এদিকে, অবকাঠামোগত সংকট থেকে উত্তরণে নানামুখী উদ্যোগ হাতে নিয়েছে সরকার। তবে, দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি না হলে হাতছাড়া হতে পারে বাজার।