
অনলাইন ডেস্কঃ
চব্বিশের আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর একটি জনকল্যাণকর রাষ্ট্র বিনির্মাণে জাতীয় সনদের দাবি তোলে আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থী ও সংগঠন। অবশেষে সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণে জুলাই সনদ প্রস্তুত করেছে ঐকমত্য কমিশন। যা রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নে ঐকমত্যের একটি রাজনৈতিক দলিল।
এই জুলাই সনদে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি পাবে। এছাড়া রাষ্ট্র ব্যবস্থায় কী কী সংস্কার করা হবে তার দিক নির্দেশনাও থাকবে সনদে। এ নিয়ে সব রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে ঐকমত্য কমিশনের। বেশিরভাগ বিষয়ে সকল দল একমত হলেও কয়েকটি ইস্যুতে দ্বিমত রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহান বলেছেন, জুলাই সনদ এক অর্থে মৌলিক রাজনৈতিক পরিবর্তন। যেটি ক্ষমতার ভারসাম্য আনবে ও নির্বাহী বিভাগকে অতি শক্তিশালী হওয়া ঠেকাবে। এ বিষয়ে দলগুলো এখনও ঐকমত্যে পৌঁছায়নি। কর্তৃত্ববাদ বা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা কোনোভাবেই যাতে ফিরে না আসতে পারে ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে এই কথা বার বার বলা হয়েছে। কিন্তু সেটি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। এ সময় দ্বিমত কমানো গেলে সনদ বাস্তবায়ন সহজ হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে, জুলাই সনদ চূড়ান্ত হলেও এর বাস্তবায়ন নিয়ে বড় প্রশ্ন রয়েছে। এবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বাস্তবায়নের দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। সহজে বা অল্প সময়ে বাস্তবায়ন এবং দীর্ঘমেয়াদী বাস্তবায়ন এই দুই ভাগে জুলাই চার্টার ভাগ করা হয়েছে।
জুলাই সনদের বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখেছেন শিক্ষক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী সাব্বির আহমেদ। তার মতে, শক্তিশালী বিরোধী দল পাওয়া গেলে এর বাস্তবায়ন সহজ হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ বলেছেন, সংসদে শক্তিশালী বিরোধী দল থাকলে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন সম্ভব। এটা এক দল বা একাধিক দল হতে পারে। বিরোধী দলগুলো একযোগে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে পারলে সনদ বাস্তবায়নের সম্ভাবনার দুয়ার আরও খুলবে।
আগামী সপ্তাহে আবারও জুলাই সনদ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকে বসবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এরপর সনদ বাস্তবায়নের উপায় সম্পর্কিত সুপারিশ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হবে।