
বিশেষ প্রতিনিধি:
গত বারো দিনেও খুলনার সাংবাদিক ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলু হত্যা রহস্য উম্মোচন হয় নি। ৩১ শে আগস্ট খুলনার খানজাহান আলী (রূপসা) সেতুর নিচে তার লাশ পাওয়া যায়। স্বেচ্ছায় ঝাঁপ দিয়ে সাংবাদিক বুলু আত্মহত্যা করেছেন এমন দাবি নৌ পুলিশের। সেতুর ওপর থাকা দুটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য জানিয়েছিলেন খুলনা নৌ পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) পুলিশের পক্ষ সেতুর সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে গত ৩১ আগস্ট সন্ধ্যায় রূপসা সেতুর দুই নম্বর পিলারের বেজমেন্টের ওপর থেকে থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মরদেহটি সাংবাদিক ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলুর বলে শনাক্ত করা হয়। নিহত বুলু ব্যক্তিগত জীবনে একজন সৎ সাংবাদিক ছিলেন। সবার সাথেই তার ভালো সম্পর্ক ছিলো। তার শত্রু ছিলো এমন তথ্য পাওয়া যায় নি। সাংবাদিকতার পাশাপাশি বুলু খুলনায় বিভিন্ন সামাজিক- সাংস্কৃতিক অরাজনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন।
এ ঘটনায় বুলুর ভাই আনিসুজ্জামান দুলু নগরীর লবণচরা থানায় অপমৃত্যু মামলা করেন। মামলায় তিনি কাউকেই সন্দেহভাজন হিসাবে আসামি করেন নি। বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম সময়ের সাথে আলাপকালে দুলু জানান, নানা কারনে বুলু মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন।
দুলু আরও জানান, ডুমুরিয়াতে বুলুর দ্বিতীয় বিয়ের খবর তারাও শুনেছেন, কিন্তু বিস্তারিত কিছু বলতে পারেননি। পারিবারিকভাবে এই বিয়ের খবর তাদের জানা নেই। তিনি জানান, রূপসা নৌপুলিশ ফাঁড়িকে মামলার তদন্তের দায়িত্বে রয়েছে। দুলু জানান, অপমৃত্যু না হত্যাকান্ড সেটি মুলত জানা যাবে ময়না তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাবার পরে। আত্মহত্যা হিসাবে এখনও পর্যন্ত বলা হলেও নিহতের শরীরের পেছনে কালো দাগ পাওয়া গেছে যা আঘাতের চিহ্ন বলে মনে হচ্ছে। দুলু জানান, সিসি ফুটেজ নিয়ে পুলিশ যে বক্তব্য দিয়েছে সেটার এখনও ফরেনসিক রিপোর্ট পাওয়া যায় নি। ফরেনসিক রিপোর্ট পেলেই বুঝা যাবে, বুলুর প্রকৃত মৃত্য রহস্য।
নৌ পুলিশ খুলনা অঞ্চলের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মঞ্জুর মোর্শেদ এর আগে গনমাধ্যমকে জানান, মামলা তদন্তকালে রূপসা সেতুর ওপর থাকা দুটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, সাংবাদিক বুলু ৩১ আগস্ট দুপুর ২টা ২০ মিনিটে নিজেই সেতুর ওপর থেকে ঝাঁপ দিয়ে নিচে পড়েন। এসময় নদীতে না পড়ে সরাসরি তিনি কংক্রিটের পাইলক্যাপের ওপর পড়ায় ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। প্রায় ৬০ ফুট উঁচু থেকে পড়ায় তার চোয়াল, হাত ও পা ভেঙে যায়।
সাংবাদিক বুলু দৈনিক বঙ্গবাণী, আজকের কাগজ, চ্যানেল ওয়ান, ইউএনবি ও দৈনিক প্রবাহসহ বিভিন্ন পত্রিকায় কাজ করেছেন। সর্বশেষ তিনি দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকায় কর্মরত ছিলেন। তিনি খুলনা প্রেসক্লাব ও খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য ছিলেন।