
অনলাইন ডেস্কঃ
ফরিদপুর-৪ সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বাহালের দাবিতে ডাকা তিন দিনের মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচির একদিন আগেই প্রত্যাহার করেছেন আন্দোলনকারীরা। এতে কোন ভোগান্তি ছাড়াই চলছে ঢাকা থেকে দক্ষিণ বঙ্গের সবধরনের যানবাহন চলাচল।
এদিকে, সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ তৎপরতা ও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এতে সড়কে আন্দোলনকারীদের অবস্থান নিতে দেখা যায়নি।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সোমবার ভোর থেকে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা টোলপ্লাজায়, ফরিদপুর বরিশাল মহাসড়কের পুখুরিয়া, হামেরদী, ভাঙ্গা দক্ষিণপাড় বাসস্ট্যান্ড ও ঢাকা খুলনা মহাসড়কের সুয়াদী, মুনসুরাবাদ বাসস্ট্যান্ডে এলাকায় মহাসড়কে কোন অবরোধ কর্মসূচি পালন করতে দেখা যা নি। বরং যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ, র্যাব, বিপিএনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়।
স্থানীয়রা জানায়, টানা কয়েক দিনের সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ কর্মসূচির কারণে কিছুটা স্থবির হয়েছে জনজীবন। তবুও তারা চায় ভাঙ্গাবাসীর দাবি পূরণ করুক সরকার। ট্রাক চালক ইকবাল ও কয়েকজন শ্রমিকরা জানায়, সকাল থেকে ভাঙ্গা থেকে ঢাকাগামী অল্প সংখ্যক কিছু যানবাহন যাওয়া আসা করছে। টানা অবরোধের কারণে ঢাকা থেকে দক্ষিণ বঙ্গের প্রবেশপথ ভাঙ্গা ইন্টারচেঞ্জ হয়ে ২১টি জেলায় যাতায়াত করতে দেখা যায়নি। তবে সড়কে কোন ঝামেলা না থাকলে ফের স্বাভাবিক হবে জনজীবন ও যানবাহন।
ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ আশরাফ হোসেন জানান, যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বিভাগীয় ও জেলা সদর থেকে ১ হাজার পুলিশ, দুইশত সেনাবাহিনী, র্যাব, বিপিএনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছেন।
হাইওয়ে থানার ওসি রোকিবুজ্জামান জানান, সকাল থেকে মহাসড়কে যানবাহন চলছে। কোথাও কোন অবরোধের খবর পাওয়া যায়নি।
ভাঙ্গা রেলওয়ে ষ্টেশন মাষ্টার রনি ব্যাপারী জানান, ঢাকা থেকে দক্ষিণ বঙ্গের ট্রেন চলাচল করছে। কোথাও কোন অবরোধের খবর পাওয়া যায়নি।
উপজেলা ইউএনও মিজানুর রহমান জানান, সড়কের যানবাহন স্বাভাবিক রাখতে ভোর ৫টা থেকে ভাঙ্গা উপজেলা ও পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে অবস্থান করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সড়কে মানুষের ভোগান্তি নিরসনে ও জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন সর্বোচ্চ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে।
আন্দোলনকারী ভাঙ্গা হামিরদী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক লিটু মিয়া জানান, আমাদের সড়ক অবরোধ কর্মসূচি সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আন্দোলনের অন্যান্য সমন্বয়কদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হবে।
প্রসঙ্গত, ফরিদপুর-৪ আসনটি (ভাঙ্গা-সদরপুর চরভদ্রাসন) উপজেলা নিয়ে গঠিত। আর নগনরকান্দা ও সালথা উপজেলা ছিলো ফরিদপুর-২ আসনে। কিন্তু গত ৪ সেপ্টেম্বও নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত গেজেট অনুযায়ী, ফরিদপুর-৪ আসনের হামিরদী ও আলগী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-২ আসনে যুক্ত করে সংসদীয় আসনের সীমানা পুননির্ধারণ করা হয়। এরপর ৫ সেপ্টেম্বর থেকেই ফুঁসে উঠেন ভাঙ্গার আন্দোলনকারীরা। তাদের দুই ইউনিয়ন ফিরে পেতে টানা কয়েক দিনের অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনকারীরা।