
{"remix_data":[],"remix_entry_point":"challenges","source_tags":[],"origin":"unknown","total_draw_time":0,"total_draw_actions":0,"layers_used":0,"brushes_used":0,"photos_added":0,"total_editor_actions":{},"tools_used":{"selection":2},"is_sticker":false,"edited_since_last_sticker_save":true,"containsFTESticker":false}
বিশেষ প্রতিনিধি:
খুলনা মহানগর বিএনপির সম্মেলন সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে নেমেছেন। বর্তমান কমিটির নেতারা আবারও নেতৃত্বে আসবেন নাকি নতুন নেতৃত্বে আসবে সেটিই এখন খুলনা বিএনপিতে আলোচিত বিষয়। প্রার্থী হিসাবে দলের নেতারা নিজ নিজ ফোরামে তৎপর থাকার পাশাপাশি কেন্দ্রেও যে যার চ্যানেলে লবিং করছেন।
জানা গেছে, সম্মেলনের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি মোটামুটি ঠিক হয়ে আছে এমনটি জানিয়ে খুলনা মহানগর বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট শফিকুল আলম মনা শুক্রবার এই প্রতিবেদককে বলেছেন, আমরা মুলত অপেক্ষা করছি, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের শিডিউলের জন্য। আসন্ন সম্মেলনে তিনি ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন এবং গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখবেন। তারেক রহমানের শিডিউল সাপেক্ষে তারিখ পরিবর্তন হতে পারে, এমন আভাস দিয়েছেন মনা নিজেও।
ফেব্রুয়ারির সাত তারিখ সম্মেলনের সম্ভাব্য ডেট আমরাও শুনেছি এমনটি জানিয়ে নগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক, সাবেক যুবদল নেতা শের আলম সান্টু জানান, এখন ভোটার তালিকা চুড়ান্ত হয় নি, বা তালিকা প্রকাশও হয় নি।
সাবেক যুবদল নেতা সান্টু আরও বলেন, কাউন্সিলররাই তাদের ভোটে আগামী নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন। ফলে ভোটার তালিকা প্রকাশ খুব জরুরি। মহানগর বিএনপির আমরা সিনিয়র নেতারা বসেছিলাম, ভোটার তালিকা নিয়ে আমাদের নধ্যে আলোচনা হয়েছে। সম্মেলনের নেতৃত্বে নির্বাচনে স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে ভোটার তালিকা প্রকাশকে আমরা গুরুত্ব দিয়েছি। দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরাও স্বচ্ছ ব্যালট পদ্ধতিতে ভোট চান।
এদিকে, সম্প্রতি হয়ে যাওয়া বিভিন্ন ওয়ার্ড কমিটি ও থানা কমিটিতে আওয়ামী লীগের কেউ কেউ ঢুকে পড়েছেন এমন অভিযোগ আসায় দলের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে এই ব্যাপারে কেউই সরাসরি মুখ খুলতে চান নি। এমন বেশ কিছু অভিযোগ দলের নীতি নির্ধারনী মহলের সামনে প্রকাশ্যেই আলোচনা হয়। নেতারা সবার কথা মন দিয়ে শুনেছেন, কিন্তু কোন সিদ্ধান্ত হয় নি।
সুত্র বলছে, সম্প্রতি নগরীর একটি অভিজাত হোটেলে প্রায় সাত ঘন্টার ম্যারাথন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। খুলনার নগর নেতারা সেখানে খোলামেলা কথা বলেন। দলের দুই কেন্দ্রীয় নেতা আজিজুল বারী হেলাল ও রকিবুল ইসলাম বকুল উপস্থিত ছিলেন। এই দুই নেতা বর্তমানে খুলনা বিএনপি’র অভিভাবক হিসেবে সব কিছু দেখভাল করছেন।
জানা গেছে, কেন্দ্রীয় নেতাদের আহবানে সেদিনের বৈঠকে সুন্দরবন কলেজের সাবেক ভিপি জহির যোগ দেন। বেশ কিছু দিন ধরে নিস্ক্রিয় মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক তরিকুল ইসলাম জহির এবার খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি- সম্পাদক পদে জোরালো প্রার্থী। জহির সেদিন তার দীর্ঘ বক্তব্যে নিষ্ক্রিয় থাকার কারণসমুহ তুলে ধরেন। জহিরের বক্তব্যের জবাব দেন নগর বিএনপির আলোচিত এক নেতা। আবেগ ঘন বক্তব্যে তিনি দলের ক্রান্তিলগ্নে ভুলবুঝাবুঝি না করে ঐক্যবদ্ধ থেকে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।
আসন্ন সম্মেলনে সভাপতি পদে এখনো পর্যন্ত দুজন দুজন প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। এই দুজন হলেন, বর্তমান আহবায়ক এডভোকেট শফিকুল আলম মনা ও যুবদলের সাবেক নেতা ফখরুল আলম। শুক্রবার আলাপকালে মনা অবশ্য বলেছেন, প্রার্থী হবার বিষয়ে তিনি এখনও সিদ্ধান্ত নেন নি। আপাতত সম্মেলন সফলভাবে সম্পন্নের কথা ভাবছেন।
ভিন্ন সুত্রমতে, নিশ্চিত ভাবে সভাপতি হবেন, এমন নিশ্চয়তা থেকে সাবেক বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়নের নেতা, জিয়ার হাত ধরে জাগো দল, ১৯ দফা, বিএনপির তরুন তুর্কি নেতা, ৫৩ বছরের অভিজ্ঞ রাজনীতিক, খুলনা সিটির সাবেক কাউন্সিলর মনা প্রার্থী হিসেবে মাঠে থাকবেন। আর যদি মনে হয়, তার সভাপতি হওয়ার সম্ভবনা কম বা ঝুকিপূর্ণ তবে সেক্ষেত্রে তিনি আগেভাগেই প্রার্থী হওয়া থেকে নিজেকে সরিয়ে নেবেন।
অন্য দিকে, ফখরুল ৮০ এর দশকে এরশাদ জামানায় ছাত্রদল করেছেন। যুবদল খুলনা মহানগরের নেতৃত্ব দিয়েছেন। বিভাগীয় যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। বিএনপি খুলনা মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক পরিক্রমায় এবার ফখরুল খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি প্রার্থী। ফখরুল ও তুহিন আপন দুই ভাই, দলে দু’জনেরই অবদান আছে। দুই জনাই এই মুহুর্তে দলের জন্য অপরিহার্য নেতা। বিএনপির মধ্যে এই দুই ভাইয়ের প্রার্থী হওয়া রীতিমতো কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে।
সুত্র বলছে, সভাপতি পদে এডভোকেট শফিকুল আলম মনা প্রার্থী না হলে, সেক্ষেত্রে জহির বা তুহিন দুজনাই সভাপতি প্রার্থী হতে পারেন৷ জহির আলাপকালে প্রথম সময়কে বলেছেন, দল দায়িত্ব দিলে দায়িত্ব নেবো। তবে জহির দলে পরিশুদ্ধ করতে চান। সবার মাঝে একটা গ্রহনযোগ্য নেতৃত্বে চান।
অন্যদিকে, তুহিন নেতৃত্ব নির্বাচনে পুরাটাই কাউন্সিলরদের উপরে ছেড়ে দিয়েছেন। হেলাল- বকুল- পাপুলের ঘনিষ্ঠ অনুসারী তুহিন সম্মেলন সামনে রাখে ঘরোয়া একাধিক আড্ডায় নিজ অনুসারীদের বলেছেন, হাউজ চাইলে তিনি প্রার্থী হবেন, নতুবা নয়। প্রাপ্ত সুত্রমতে, নেতা হবার ক্ষেত্রে অন্যদের চেয়ে তুহিন যথেষ্ট এগিয়ে সুবিধাজনক অবস্থায় আছেন।
কারন হিসাবে দলের নেতারা বলেছেন, প্রথমত, খুলনার অভিভাবক হিসাবে পরিচিত দলের কেন্দ্রীয় নেতা হেলাল- বকুল- পাপুলের সর্বোচ্চ আস্থা ভাজন, দ্বিতীয়ত সম্মেলনে যারা কাউন্সিলর হবেন, তাদের মধ্যে তুহিনের গ্রহনযোগ্যতা আছে। অধিকাংশই তুহিনের হাত ধরে নেতা হয়েছেন। ওয়ার্ড বা থানার নেতৃত্বে এসেছেন। তৃতীয়ত তুহিন আপাদমস্তক একজন রাজনৈতিক কর্মী। দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ। সার্বক্ষণিক সক্রিয় কর্মী। তুহিনকে ডাকলেই সাড়া দেন, নেতা-কর্মীদের কাছে সব সময়েই এভেইলেবেল। দল চালানোর মতো অর্থ- বিত্ত, খরচ করবার মতো মন মানসিকতা রয়েছে।
অতীতে ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন এমন একজন ক্লিন ইমেজের সাবেক নেতা আলাপকালে এই প্রতিবেদককে বলেছেন, ৮০ এর দশকে বানিয়াখামারে বসবাসরত জাতীয় পার্টির প্রভাবশালী নেতাদের ডিংগিয়ে কমার্স কলেজ এসে ছাত্রদল করেছে বা খুলনা মহানগরীতে ছাত্রদলের হয়ে রাজনীতি করেছে, এটা অবশ্যই ধর্তব্যের ব্যাপার। তুহিন এটা ডিজার্ভ করে। তার মুল্যায়ন হওয়া উচিত। অন্যদিকে, সাধারণ সম্পাদক হিসাবে সাবেক ছাত্রনেতা কাজি মাহমুদ, সাবেক যুবদল নেতা সান্টু, সাগর, শেখ সাদির নাম আলোচিত হচ্ছে।
দলের বাইরে একটি সুত্রমতে, মঞ্জু গ্রুপের সাথে প্যাচআপ হয়ে গেলে মনি- জহির কমিটি আসার চেষ্টা করছেন কেউ কেউ, আবার তুহিন সভাপতি, কাজি মাহমুদ সাধারণ সম্পাদক কিংবা জহির সভাপতি, কাজি মাহমুদ এমন নানান আলোচনা চলছে।
মঞ্জু গ্রুপের লোকজন আলহামদুলিল্লাহ লিখে ফেস বুকে অভিনন্দন বার্তা জানাচ্ছেন, এমনটি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কাজী মাহমুদ জানান, এমন আলহামদুলিল্লাহ গত তিন বছর ধরে দেখে আসছি। শুনে আসছি। আলাপকালে কাজি মাহমুদ আরও বলেন, নানান জায়গায় কমিটি নিয়ে নানা আলোচনা হচ্ছে। এটা বিউটি অব ডেমোক্রেসি। কাজি মাহমুদের ধারনা, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, স্থানীয় অভিভাবক হেলাল- বকুল মিলে নিশ্চয়ই একটি ভালো কমিটি উপহার দেবেন।
জানা গেছে, তারিখ চুড়ান্ত হলেই বর্ণাঢ্য পরিসরে সম্মেলন করতে যাচ্ছে এবার খুলনা মহানগর বিএনপি। নগরীর সার্কিট হাউজ মাঠে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে এমনটিই জানিয়েছেন তিন বছর আগে দায়িত্ব পাওয়া মহানগর বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট শফিকুল আলম মনা।