
অনলাইন ডেস্কঃ
দেশের জনগণ এবার দীর্ঘ দেড় দশক পর গুম, খুন, অপহরণের ভয়হীন-স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক পরিবেশে ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রোববার (৩০ মার্চ) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তারেক রহমান বলেন, ত্যাগ-তাকওয়া আর সংযমের শিক্ষা গ্রহণের মধ্য দিয়ে মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রীয় জীবনকে সুন্দর ও পরিশুদ্ধ করার পাশাপাশি মুসলিম উম্মাহর বিশ্বজনীন ঐক্য, সংহতি, সহমর্মিতা এবং অনাবিল আনন্দের বার্তা নিয়ে এলো পবিত্র ঈদুল ফিতর। আমি বাংলাদেশসহ বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা, অভিনন্দন ও মোবারকবাদ জানাই। ঈদ মোবারক।
তিনি আরও বলেন, বীর জনতার রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়ে দীর্ঘ দেড় দশক পর দেশের জনগণ ভয়হীন-স্বাধীন পরিবেশে ঈদ উদযাপন করছে। এবারের ঈদ আনন্দে তাই যোগ হয়েছে উচ্ছ্বাস-উৎসাহ ও উদ্দীপনার নতুন মাত্রা।
তবে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, অনেক মায়ের মনে এখনো আনন্দ নেই, অনেক পরিবারে নেই উৎসবের আমেজ। ফ্যাসিবাদের দীর্ঘ দেড় দশকের গুম, খুন, অপহরণ ও নির্যাতনে লাখো পরিবার সন্তান ও স্বজন হারিয়েছে। শুধুমাত্র জুলাই-আগস্ট মাসেই স্বৈরাচারের পতনের শেষ দিনগুলোতে প্রাণ হারিয়েছেন হাজারো মানুষ, আহত হয়েছেন ২০ সহস্রাধিক ব্যক্তি।
তারেক রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদ পতন আন্দোলনে হতাহতদের পরিবারগুলোর জন্য ঈদের আনন্দ নেই। ঈদের দিনেও সন্তানহারা কোনো মায়ের চোখে অশ্রু, স্বজনহারাদের হৃদয়ে নিঃশব্দ কান্না। অনেককে হাসপাতালের বেডে আহত স্বজনদের পাশে বসেই ঈদ কাটাতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, ঈদুল ফিতর নির্মল আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে ‘সকলের তরে সকলে আমরা’ এই গুরুত্বপূর্ণ মর্মবাণী মানবজাতির কাছে পৌঁছে দেয়। এটি সমাজের দরিদ্র, অবহেলিত ও বঞ্চিত মানুষের প্রতি সাহায্য ও সহমর্মিতার হাত বাড়ানোর প্রেরণা জাগায়।
তারেক রহমান আরও বলেন, যারা দীর্ঘ দেড় দশক ধরে মানুষের ঈদ আনন্দকে ধ্বংস করেছে, মায়েদের বুক খালি করেছে, অসংখ্য সন্তানকে পিতৃহারা-মাতৃহারা করেছে, তাদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করা হবে। দেশে আইন ও ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্বজনহারাদের মনে কিছুটা হলেও সান্ত্বনার বার্তা পৌঁছে দিতে হবে। এবারের ঈদে এটাই আমাদের অঙ্গীকার হওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব সত্ত্বেও ঈদ আমাদের জাতীয় জীবনের সংস্কৃতির অংশ। ঈদুল ফিতরের দিনে আমি আল্লাহর দরবারে মোনাজাত করি বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য।