
অনলাইন ডেস্কঃ
সোমবার ভোর পৌনে ৫টার দিকে নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের একটি গ্রামীণ সড়কের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ওই নারী বাদী হয়ে মঙ্গলবার বিকালে মামলা করেন। পরে আটকদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
আটক হওয়া যুবকেরা হলেন- নেত্রকোনা সদর উপজেলার ঠাকুরাকোনা ইউনিয়নের সতশ্রী গ্রামের মারুফ মিয়া (২৪), ইমন মিয়া (২৭) ও সিংড়াজান গ্রামের সাব্বির মিয়া (১৯)।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা, প্রত্যক্ষদর্শী, ভুক্তভোগীর স্বামী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঈদ করতে ওই দম্পতি রোববার গভীর রাতে সিএনজিতে করে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা থেকে বারহাট্টার রায়পুর ইউনিয়নের নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। রাত সাড়ে ৩টার দিকে তারা মোহনগঞ্জ-নেত্রকোনা সড়কের ঠাকুরাকোনা এলাকায় নেমে পড়েন। সেখানে কোনরকম যানবাহন না থাকায় ঠাকুরাকোনা-ফকিরের বাজার সড়ক দিয়ে হেঁটে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন। সোমবার ভোর পৌনে ৫টার দিকে তাতিয়র এলাকায় কংস নদের ওপরে সেতু পার হওয়ার পর মোটরসাইকেলে করে চার বখাটে তাদের পথরোধ করেন। এ সময় সেখানে আরও দুই বখাটে এসে তাদের সঙ্গে যোগ দেন।
বখাটেরা নিজেদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে ওই দম্পতিকে প্রশ্ন করেন তারা স্বামী-স্ত্রী কি-না? পরে ওই দম্পতি নিজেদের পরিচয় দিয়ে তাদের ছেলে সঙ্গে মোবাইল ফোনে বখাটেদের কথা বলা। কিন্তু বখাটেরা ওই দম্পতিদের পাশে থাকা একটি ফিসারির ঘরে তাদের বড় অফিসারের সঙ্গে কথা বলাবেন বলে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে দুই বখাটে স্বামীকে আটকে রেখে অন্য চারজন গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা চালান বলে অভিযোগ উঠেছে।
এক পর্যায়ে গৃহবধূর স্বামী কোনো রকমে ছুটে তার স্ত্রীকে নিয়ে সেখান থেকে দৌড়ে পাশে থাকা একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। ওই যুবকেরাও তাদের পিছু নিলে স্থানীয় লোকজন ধাওয়া করে তিন যুবককে আটক করেন।
ভোর ৬টার দিকে গৃহবধূর ছেলে ফকিরের বাজার পুলিশ ফাঁড়ি থেকে পুলিশ নিয়ে মা-বাবাকে উদ্ধার করেন। পরে আটক তিন বখাটেকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
স্থানীয় কয়েকজনের অভিযোগ, এ ঘটনা নিয়ে সোমবার দিনভর তিন লাখ টাকার বিনিময়ে দফারফার চেষ্টা করা হয়। অবশ্য পরে এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে ওই গৃহবধূ বারহাট্টা থানায় চারজনকে আসামি করে দস্যুতার অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় উল্লেখ করা হয় ওই গৃহবধূর কানের দুল, টাকা-পয়সা ও একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। মামলার পর আটক তিন যুবককে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ফকিরের বাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) আনিসুর রহমান বলেন, ওই নারী ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। স্থানীয় কয়েকজন বিষয়টি আপোষ মীমাংসার চেষ্টা করেছিল বলে শুনেছি। কিন্তু ভুক্তভোগী নারী দস্যুতার অভিযোগে মামলা করেছেন।
বারহাট্টা থানার ওসি মো. কামরুল হাসান মোবাইল ফোনে বলেন, ওই নারী দস্যুতার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আটক তিনজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ধর্ষণচেষ্টার কথা ওই নারী আমাদের কাছে স্বীকার করেননি।