
অনলাইন ডেস্কঃ
পঞ্চগড়ে কোচিং সেন্টারে নবম শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে পঞ্চগড় সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমানকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী স্কুল ছাত্রীর বাবা পঞ্চগড় থানায় মামলা করেছেন। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে পঞ্চগড় সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এ সময় তারা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ বলে স্লোগান দেয়। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
পঞ্চগড় সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী নুসরাত জাহান নাফিজা বলেন, ‘আমরা এখন শিক্ষকদের কাছেও নিরাপদ নই। শুধু এই শিক্ষক নয় এমন অনেক শিক্ষক রয়েছেন যারা ছাত্রীদের সঙ্গে এমন আচরণ করেন। এই শিক্ষকের শাস্তি না হলে এমন ঘটনার আবারও পুনরাবৃত্তি হবে। আজ তার সঙ্গে হয়েছে কাল অন্যজনের সঙ্গে হবে।
স্কুলছাত্রী জেবা সামিহা বলেন, ওই স্যারের কাছে প্রাইভেট না পড়লে পরীক্ষায় মার্ক দেয়া হবে না বলেও হুমকি দেয়া হয়। তাই অনেকে নিরুপায় হয়ে তার কাছে পড়তে যায়। আমরা কি শিক্ষকদের কাছেও নিরাপদ নই? মেয়েরা নিরাপদ কোথায় আমি জানতে চাই? এখনো অনেক স্কুলে এমন শিক্ষক রয়েছে।
স্কুল ছাত্রী আনুশকা জাহান স্নেহা বলেন, এর আগেও দুই বার এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। সে সময় তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলেই আজ আমরা এখন ঘটনার সাক্ষী হলাম। আমাদের প্রতিষ্ঠানের নাম খারাপ হলো। আমরা চাই এবার তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক যেন আর কোনো শিক্ষক ছাত্রীদের সঙ্গে এমনটি করার সাহস না পায়।
পঞ্চগড় সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এইচএসএম সোহরাওয়ার্দী বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী স্কুল ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা করেছে। আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার দুপুরে পঞ্চগড় জেলা শহরের কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন পঞ্চগড় সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমানের কোচিং সেন্টারে তার স্কুলেরই নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে তাকে আপত্তিকর অবস্থায় স্থানীয়রা আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। রাতেই তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়। ভুক্তভোগী স্কুল ছাত্রীর পরিবারের দাবি তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। এর আগেও ওই স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের আপত্তিকর ম্যাসেজ বিনিময়সহ নানা অভিযোগ উঠেছিল।