
অনলাইন ডেস্কঃ
রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধন করে খসড়া অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। খসড়ায় নির্বাচনী প্রচারে প্রার্থীদের পোস্টার বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া এতে দলীয় অঙ্গীকারনামা, এক প্ল্যাটফর্মে সব প্রার্থীর ইশতেহার, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কড়াকড়ি এবং জরিমানা তিনগুণ বাড়িয়ে দেড় লাখ টাকার বিধান রাখা হয়েছে। আর কোনো উপদেষ্টা নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন, চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তবে বৈঠকে সংসদীয় আসনের সীমানা নিয়ে আলোচনা হলেও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি কমিশন, যা আগামী কমিশন সভায় আবারও আলোচনা হবে বলে কমিশন থেকে জানানো হয়েছে।
খসড়া আচরণবিধিতে পরিবেশ রক্ষার বিষয়টিও যুক্ত করা হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারে পরিবেশবান্ধব সামগ্রী ব্যবহারের ব্যাপারে জোর দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি নির্বাচনী প্রচারে মাইকের শব্দের মাত্রা ৬০ ডেসিবলের মধ্যে রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, বিলবোর্ডের ব্যবহার অতীতে ছিল না। এটাকে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে আমরাও নির্বাচনে পোস্টার ব্যবহার বাদ দেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছি। ব্যানার, ফেস্টুন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ইত্যাদি নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে প্রার্থিতা বাতিল করার আরপিও-এর ধারা ৯১(ঙ) আচরণবিধিতে সন্নিবেশিত করা হচ্ছে। বিভিন্ন সরকারি সুযোগ-সুবিধা ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে এই কমিশনার বলেন, সার্কিট হাউস, ডাকবাংলো, রেস্ট হাউস ব্যবহারের ওপরে কিছু বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে প্রার্থীরা এখন এসব সুযোগ-সুবিধা অবাধে গ্রহণ করতে পারবেন না।
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল বলেন, অস্ত্রের সংজ্ঞার মধ্যে দেশীয় অস্ত্রও যুক্ত করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপরে বিশদভাবে আলোকপাত করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ডিফাইন করা হয়েছে।
নির্বাচনী প্রচারের সময় তিন সপ্তাহই থাকবে উল্লেখ করে আবুল ফজল আরও বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেসব প্রার্থী সভাপতি বা সদস্য হিসেবে পরিচালনা পর্ষদে থাকবেন বা মনোনীত হয়েছেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তাদের প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার পরে সেখান থেকে পদত্যাগ করতে হবে।
খসড়ায় আচরণবিধি ভঙ্গ করলে আগের তুলনায় জরিমানার পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বিধিমালা লঙ্ঘনে ছয় মাস কারাদণ্ড এবং জরিমানা ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে দেড় লাখ টাকা করা হয়েছে। এটি সংস্কার কমিশনের একটা প্রস্তাব ছিল। আর এই বিধিমালা মেনে চলার ব্যাপারে প্রার্থী ও দলের জন্য অঙ্গীকারনামা নতুনভাবে সংযোজিত করা হয়েছে।
খসড়া আচরণবিধিতে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচনী প্রচারের ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তদারকিসহ একগুচ্ছ প্রস্তাব রয়েছে।
আবুল ফজল বলেন, খসড়া আচরণবিধি আজ কমিশন অনুমোদন দিয়েছে। এ বিধিমালার খসড়া শর্তসাপেক্ষে অনুমোদন দিয়ে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।