
অনলাইন ডেস্কঃ
খাদ্য এবং ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, দেশে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় খাদ্য পরিস্থিতি অত্যন্ত সন্তোষজনক পরিস্থিতিতে রয়েছে।
আজ শুক্রবার পটুয়াখালি জেলা সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত চলতি মৌসুমের বোরো সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, মজুদ ও বিতরণ বিষয়ে পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।
খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, তবে আমরা সন্তোষজনক অবস্থানে থাকলেও, বসে থাকলে চলবে না। কারণ খাদ্য দ্রব্য ক্রমাগত খরচ হচ্ছে, আবার যোগ হচ্ছে। এ বছর বোরো আবাদ যেমন ভাল হয়েছে, আমনটাও যদি ভাল হয়, তাহলে বিদেশ থেকে আর চাল আমদানি করতে হবে না।
সভায় জানানো হয়, পটুয়াখালী জেলার বোরো সংগ্রহের ধান ও চালের লক্ষ্যমাত্রা যথাক্রমে ১ হাজার ৯২৫ টন এবং ৫ হাজার ৬৯৫ টন। ইতোমধ্যে ১ হাজার ৯২৫ টন ধান এবং ৪ হাজার ৯৯৭ টন চাল সংগ্রহ হয়েছে।
বরগুনা জেলার বোরো ধান ও চালের লক্ষ্যমাত্রা যথাক্রমে ৫০০ টন এবং ১ হাজার ৫১৩ টন। ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ৫০০ টন ধান এবং ১ হাজার ৩৪৯ টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে।
এছাড়াও বরগুনা জেলার ছয়টি এলএসডি’র ধারণ ক্ষমতা ১৫ হাজার টন বলেও সভায় জানানো হয়।
খাদ্য উপদেষ্টা জেলার খাদ্য সংগ্রহ এবং বিতরণে জেলা প্রশাসকগণকে ক্লোজ মনিটরিং করার জন্য নির্দেশনা দেন।
এ ছাড়াও দুর্যোগ প্রবণ জেলা হিসেবে পটুয়াখালী ও বরগুনাকে বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে খাদ্য সরবরাহ চ্যানেল নিরবিচ্ছিন্ন রাখার উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
আলী ইমাম মজুমদার বলেন, বোরো মৌসুমে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে সাড়ে ১৭ লাখ টন ধান ও চাল সংগ্রহ করা হবে। এরমধ্যে সাড়ে ৩ লাখ টন ধান ও ১৪ লাখ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কৃষককে প্রাইস সাপোর্ট দেয়ার জন্য গত বছরের তুলনায় কেজি প্রতি চার টাকা বৃদ্ধি করে ধান ৩৬ টাকা এবং চাল ৪৯ টাকা কেজি দরে কেনা হচ্ছে। ২৪ এপ্রিল থেকে সারাদেশে বোরো মৌসুমের ধান-চাল কেনা শুরু হয়েছে এবং এ সংগ্রহ অভিযান ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চলবে।
খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সাশ্রয়ী দামে খাদ্য নিশ্চিত করতে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে খাদ্য ভর্তুকিতে বরাদ্দ বাড়িয়ে ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বরাদ্দের প্রস্তাব করেছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে খাদ্য ভর্তুকিতে বরাদ্দ রয়েছে ৮ হাজার ৫৯ কোটি টাকা।
তিনি বলেন, সরকার ওএমএস এবং টিসিবি মাধ্যমে খাদ্য বিতরণ কার্যক্রম সম্প্রসারণ করেছে। আগামী অর্থবছরে এসব কর্মসূচির আওতায় উপকারভোগী পরিবারের সংখ্যা ৫০ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৫৫ লাখে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রতিটি পরিবারকে মাসে ১৫ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি চাল দেওয়া হবে। বর্তমানে এ কার্যক্রম বছরে পাঁচ মাস চালু আছে, আগামী অর্থবছর থেকে পাঁচ মাসের স্থলে ছয় মাস চালু থাকবে।
সভায় পটুয়াখালী জেলার জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীনের সভাপতিত্বে বরিশাল বিভাগের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার ডিসি ফুডসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।