
অনলাইন ডেস্কঃ
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. রাসেল ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তনয় রায়ের বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলন এবং ধর্ম অবমাননার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে মো. রাসেল ফেসবুকে জুলাই অভ্যুত্থানকে বিভিন্ন ভাবে কটাক্ষ করতে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে ইসলাম ধর্মের বিধিবিধান, আল্লাহকে বর্ণবাদী, কুরআনের আয়াত নিয়ে অবমাননাকর কথা, ইবাদাতকে ছোট করাসহ আলেম সমাজ নিয়ে একের পর এক অবমাননাকর পোস্ট করতে থাকেন। এই সময়ে দেশে স্বৈরাচারী সরকারের বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটলে রাসেল সেগুলোকে নিয়েও কটাক্ষ করেন। রাসেল ‘লাল গেঞ্জি’ বলে জেনারেশন “জি” অর্থাৎ জুলাই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীদের কটাক্ষ করেন। সম্প্রতি মুসলিমদের ধর্মীয় ফরজ বিধান ‘জিহাদ’ নিয়েও তিনি ফেসবুকে অবমাননাকর মন্তব্য করেন। রাসেলের মতো ‘২৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী তনয় রায়ও ইসলাম ধর্মের ফরজ বিধান নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে।
এ বিষয়ে ফিজিক্স ডিসিপ্লিনের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তালহা মাহমুদ বলেন, “মো. রাসেল দীর্ঘদিন ধরে ইসলাম, মুসলিম এবং জুলাই আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত ছাত্রদের হুমকি দিয়ে আসছেন। আমরা ইতোমধ্যে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জমা দিয়েছি। আশাকরি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন তদন্ত সাপেক্ষে সর্বোচ্চ শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এ বিষয়ে আর্কিটেকচার ডিসিপ্লিনের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান মুন্সি বলেন, ‘ও দীর্ঘদিন থেকে এ ধরনের কাজ করে আসছে। ও প্রায় সময় ছাত্রলীগের পোস্ট শেয়ার দিয়ে আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীদের হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে। পাশাপাশি ইসলাম ধর্মের সুরা অবমাননার মত বিষয় ও করছে। আমি চাইবো প্রশাসন বিশ্বিবদ্যালয়ের প্রচলিত ধারায় তার বিচার করবেন, যেনো পরবর্তীতে কেও এ ধরনের কাজ করতে না পারে।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান বলেন, আমার দৃষ্টিতে এটি একটি অপরাধ। কারণ আমি এদেশের তৌহিদি জনতার একজন। যারা শুধু নিজের ধর্মকেই নয়, অন্য ধর্মকে সম্মান করে। আমার কোনদিন মনে পড়ে না যে আমি যেদিন থেকে নামাজ পড়ি তারপর থেকে অন্য ধর্মকে কোনদিন অসম্মান করছি। সেহেতু তারা আমাদের ধর্মকে ছোট করে কথা বললে আমরা কেন চুপ থাকব।
রাসেল ও তনয়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে এ বিষয়ে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ইতোমধ্যে একটি অভিযোগ পেয়েছি এবং বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছি। প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’
এছাড়া শিক্ষার্থীদের ধারণা রাসেল নিষিদ্ধ সংগঠনের বিভিন্ন কার্যক্রমের সাথে জড়িত থাকতে পারে। সোস্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন পোস্ট, কমেন্ট, জুলাই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হুমকিমূলক কথা শিক্ষার্থীদের মনে সংশয়ের সৃষ্টি করেছে।
উল্লেখ্য, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চেয়ে প্রশাসনের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে।