
অনলাইন ডেস্কঃ
এবার ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাতের ভোট জালিয়াতির তথ্য জানিয়েছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নূরুল হুদা।
আদালতের জবানবন্দিতে সাবেক সিইসি বলেন, পুলিশ ছিল সরকারের অনুগত। এ ছাড়া রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারা সরকারের আজ্ঞাবহ ছিলেন। তখন ভোট নিয়ন্ত্রণ করেছিল এনএসআই ও ডিজিএফআই। সহযোগিতায় ছিলেন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী। তারা দিনের ভোট রাতে শেষ করে।
গত মঙ্গলবার ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা বলেন তিনি।
জবানবন্দিতে সাবেক সিইসি নূরুল হুদা আরও বলেন, তৎকালীন ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ ছিলেন প্রশাসন ক্যাডারের লোক। রিটার্নিং কর্মকর্তা ও মাঠ প্রশাসন নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি তার মাধ্যমে ‘ডিল’ হয়েছে। সরকারের অতিউৎসাহী কর্মকর্তারা এতে সহযোগিতা করেছেন। নির্বাচনের সময় মাঠপর্যায়ের সব কর্মকর্তা তৎকালীন ইসি সচিব হেলালুদ্দীনের অধীনে ছিলেন। সরকারের হয়ে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের ওপর প্রভাব বিস্তার করেন তিনি।
একার পক্ষে কিছুই করার ছিল না উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা অন্ধভাবে সরকারকে সমর্থন দিয়েছিল, তারাও জালিয়াতিতে সহযোগিতা করেছে। এটা না হলে ভোট নিয়ে এত বড় জালিয়াতি সম্ভব হতো না। ভোট জালিয়াতিতে অনেক রাজনৈতিক নেতা প্রভাব খাটান। তারা সরাসরি জড়িত ছিলেন। তাদের মধ্যে অনেকে পরে সুবিধাভোগী ছিলেন।
নূরুল হুদা আরও দাবি করেন, নির্বাচন কমিশনারকে অন্ধকারে রেখে পুরো প্রক্রিয়া শেষ করেন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা পিবিআই উত্তর বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি এনায়েত হোসেন মান্নান গণমাধ্যমে বলেন, ‘এই মামলায় আমরা স্বচ্ছতার সঙ্গে দৃষ্টান্তমূলক তদন্ত প্রতিবেদন দিতে চাই। ভোটে নানা অনিয়ম ও অসংগতির কথা স্বীকার করেছেন নূরুল হুদা। আমাদের কাছে যখন ছিলেন তখন তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে চেয়েছেন। তাই মঙ্গলবার তাকে আদালতে পাঠানো হয়।’
২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সাবেক সচিব নূরুল হুদা প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের ১২তম সিইসি। তার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ স্থানীয় পর্যায়ের সব নির্বাচন পরিচালনা করে।
সূত্র: দৈনিক সমকাল