
অনলাইন ডেস্কঃ
নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই আগামী ছয় মাসের মধ্যে সব দলকে নিয়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দেশটির সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি।
রোববার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে কাটমান্ডু পোস্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সুশীলা কার্কি বলেন, আমার দল এবং আমি এখানে ক্ষমতার স্বাদ নিতে আসিনি। আমরা ছয় মাসের বেশি থাকব না। আমরা নতুন সংসদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করব। আপনাদের সমর্থন ছাড়া আমরা সফল হতে পারব না।
এনডিটিভি জানায়, বক্তব্যে ৭৩ বছর বয়সী সুশীলা কার্কি সাম্প্রতিক সময়ে দেশব্যাপী ‘জেন-জি’ আন্দোলনের প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, আন্দোলনে নিহতদের ‘শহীদ’ স্বীকৃতি দেওয়া হবে। তিনি প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ১০ লাখ নেপালি রুপি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দেন। এ ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকার আহতদের চিকিৎসার ব্যয় বহন করবে এবং তাদের আর্থিকভাবেও সহায়তা করবে।
দেশজুড়ে সাম্প্রতিক সহিংস বিক্ষোভ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মাত্র ২৭ ঘণ্টার বিক্ষোভে এমন রূপান্তর আমি আগে কখনও দেখিনি। আমাদের দৃঢ় সংকল্প নিয়ে কাজ করতে হবে। আন্দোলনে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটের ঘটনাগুলো তুলে ধরে তিনি জানান, সরকার সেগুলোর তদন্ত করবে এবং যারা সম্পত্তির ক্ষতির শিকার হয়েছেন, তাদের ক্ষতিপূরণ দেবে। তবে নেপালে প্রতিবাদের নামে যা ঘটেছে, তা দেখে মনে হচ্ছে, এটি একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। ব্যক্তিগত সম্পত্তিও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, আমরা তাদের ছেড়ে যাব না। সরকার তাদের কিছু ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করবে। এর মধ্যে সহজ শর্তে ঋণ বা অন্য কোনো ব্যবস্থা করা যেতে পারে। যারা ভাঙচুর, লুটপাটের ঘটনায় জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হবে।
সুশীলা কার্কি বলেন, নেপাল বর্তমানে একটি অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকার হবে পুনর্গঠন এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা।
দ্য হিমালয়ান টাইমসের খবর অনুযায়ী, নেপালে সাম্প্রতিক বিক্ষোভে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭২-এ পৌঁছেছে। এর মধ্যে ৫৯ জন বিক্ষোভকারী, ১০ জন কারাবন্দি এবং তিনজন পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন।
এদিকে নেপালের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কাটমান্ডুতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত আছে। গত রোববার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে নেপালে গত সপ্তাহের সহিংসতার পর দেশে শান্তি ও শৃঙ্খলা পুনর্বহালের বিষয়টিকে স্বাগত জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গণতান্ত্রিক পন্থায় সমাধানের প্রতি অঙ্গীকারের জন্য আমরা প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পাওদেল এবং তরুণ নেতাদের অভিনন্দন জানাই। নেপালে বিক্ষোভ থেকে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতায় প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনায় আমরাও শোকাহত।
অস্থিতিশীলতার সময় নেপালি সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগদেলের ভূমিকার প্রশংসাও করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিবৃতিতে বলা হয়, শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা এবং বেসামরিক সরকারের কাছে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় তাদের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।