
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
প্রজনন মৌসুমে মা’ ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। গত ১২ অক্টোবর মধ্য রাত থেকে ৩ নভেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত ২২ দিনের এ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।
আজ মধ্য রাত থেকে ইলিশ আহরণে নদীতে নামছে জেলেরা। এরই মধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করএছ তারা। এ নিয়ে আনন্দ উৎসবেরও কমতি নেই জেলে পাড়ায়।
ভোলা সদরের ইলিশা নদী থেকে মনপুরার চর পিয়াল পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার এবং ভোলার ভেদুরিয়া থেকে চর রুস্তম পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটারসহ মেঘনা ও তেঁতুলিয়ার ১৯০ কিলোমিটার ইলিশ অভয়াশ্রম এলাকায় মা’ ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। এই নিষেধাজ্ঞা শেষ হয় শনিবার দিবাগত রাত ১২টায়। ভোলা জেলার প্রায় ১ লাখ ৫৭ হাজার জেলে মেঘনা ও তেঁতুলিয়ায় মাছ আহরণ করতে নামবেন তারা।
তবে মা’ ইলিশ রক্ষায় সরকার যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তা বাস্তবায়ন করার জন্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ কঠোর নজরদারি ও প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিল বলে জানায় ভোলা জেলা মৎস্য অফিস।
ভোলার মেঘনা উপকূলীয় এলাকার অধিকাংশ মানুষই ইলিশ আহরণের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু এদের মধ্যে এক শ্রেণির অসাধু জেলে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে মা’ ইলিশ আহরণ করার প্রচেষ্টা চালায়। আইন অমান্য করে মা’ ইলিশ ধরায় প্রশাসনের হাতে আটক হয়ে জরিমানাসহ বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ভোগ করতে হচ্ছে জেলেদের। পাশাপাশি অভিযানে জব্দকৃত প্রায় অর্ধ কোটি টাকার জাল পুড়িয়ে দিয়েছে মৎস্য কর্মকর্তারা।
এদিকে ২২ দিন কর্মহীন থাকার পর নৌকা ও জাল মেরামত করে প্রস্তুতি নিয়েছে জেলেরা। সরে জমিনে ভোলা সদর উপজেলার ভোলার খাল, তুলাতলী, নছিরমাঝি, শিবপুর, দৌলতখান উপজেলার ফিস ঘাট, গুপ্তগঞ্জ, সাহেবের হাট, স্বরাজ গঞ্জ, আলীমুদ্দিন, বাংলাবাজার, বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাকিমুদ্দিন, মৃজাকালু, গংঙ্গাপুর মাছ ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জাল ও নৌকা নিয়ে নদীতে মাছ আহরণের জন্য অপেক্ষা করছে জেলেরা।
রাজাপুর জোড়খাল এলাকার জেলে আব্দুল মালেক মাঝি ও ভোলার খাল ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী খালেক হাওলাদার জানান, সরকার মা’ ইলিশ শিকারে সরকারের দেয়া এবারের নিষেধাজ্ঞা কঠোর ভাবে পালিত হয়েছে। তবে জেলে নামধারী কতিপয় ব্যক্তি তেঁতুলিয়া ও মেঘনা নদীতে জাল ফেলে মা’ ইলিশ ধরার চেষ্টা করেছে। কিন্তু নৌবাহীনি, কোস্ট গার্ড, নৌপুলিশ ও মৎস্য কর্মকর্তা কর্মকর্তাদের কঠোর নজরদারি ও অভিযানের কারণে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবাধে মা’ ইলিশ শিকারে নদীতে নামতে পারেনি অসাধু জেলেরা। অভিযান শেষ হলে আবার জাটকা অভিযান শুরু হয়। মা’ ইলিশ গুলো ডিম ছেড়ে সাগরে চলে যাওয়ার কারনে আমরা তেমন একটা মাছ পাইনা। আমাদের ঋণ করে নতুন জাল ক্রয়, নৌকা মেরামত কাজে শ্রমিকদের টাকা দিতে হয়। এরপর নদীতে মাছ না পাওয়া গেলে আমাদেরকে খুবই খারাপ পরিস্থিতিতে পড়তে হয়।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, জাতীয় সম্পদ ইলিশ, মা’ ইলিশ রক্ষা করাই আমাদের সফলতা। নিষেধাজ্ঞা সময়ে নির্বিঘ্নে বাধাহীনভাবে মা’ ইলিশ ডিম ছারতে পারে এব্যাপারে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। জেলেদেরকে সচেতন করতে বিভিন্ন এলাকার ঘাটগুলোতে ব্যানার, লিফলেট বিতরণ, মাইকিংসহ সভা সমাবেশ করা হয়েছে। লক্ষমাত্রার চেয়ে এবারে প্রজনন উৎপাদন বেশি হবে বলে আশাকরি। এছাড়া সকলের সহযোগিতায় সফল ভাবে অভিযান সম্পন্ন করেছি। আগামিতে আমরা ল্যক্ষমাত্রা অর্জনে সক্ষম হবো।