
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল আদায় শুরু হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। প্রথম টোল দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এরপর চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) চেয়ারম্যান মো. নুরুল করিম টোল দিয়ে পার হন।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, চট্টগ্রামে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে প্রথম শাহাদাত বরণ করেছিলেন ওয়াসিম আকরাম। তার নামেই এই উড়াল সেতু। সারাদেশে যারা এই জুলাই অভ্যুত্থানে শাহাদাত বরণ করেছেন, তাদের জন্য আমরা বিভিন্ন জায়গায় স্মৃতিচিহ্ন তৈরি করছি, যেন সারাদেশের মানুষ এবং আগামী প্রজন্ম তাদের অবদানের কথা স্মরণ করতে পারে। চট্টগ্রামের মানুষ এ সংগ্রামে শামিল হয়েছিলেন, আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। পরবর্তী প্রজন্ম যাতে তাদের অবদানের কথা সব সময় স্মরণ করতে পারে সে জন্য আমরা আমাদের উদ্যোগ চালিয়ে যাব।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম, প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস প্রমুখ।
উল্লেখ্য, এর আগে ২ জানুয়ারি প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এবং সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নাম পরিবর্তন করে এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নাম জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ‘প্রথম শহীদ’ চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়াসিম আকরামের নামে নামকরণের সিদ্ধান্ত হয়। ২০২৪ সালের আগস্টের শেষ সপ্তাহ থেকে এলিভেটেডে গাড়ি চলাচল শুরু হয়েছিল টোল ছাড়া।
টোলের নির্ধারিত হার ॥ এক্সপ্রেসওয়েতে মোট ১০ ধরনের গাড়ি চলাচল করতে পারবে। টোলের নির্ধারিত হার হলো সিএনজিচালিত অটোরিক্সা ৩০ টাকা, প্রাইভেট কার ৮০ টাকা, জিপ ও মাইক্রোবাস ৫০ টাকা, পিকআপ ১৫০ টাকা, মিনিবাস ও চার চাকার ট্রাক ২০০ টাকা, বাস ২৮০ টাকা, ৬ চাকার ট্রাক ৩০০ টাকা এবং কাভার্ডভ্যান ৪৫০ টাকা। মোটরবাইক ও ট্রেইলার চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
২০১৭ সালের ২১ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদিত হয় চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প। প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই উড়াল পথ চট্টগ্রাম নগরীর প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে। এ প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ৪ হাজার ২৯৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা থেকে দেওয়ানহাট পর্যন্ত অংশে যানজটে জনভোগান্তি নিত্যদিনের চিত্র। যাত্রীবাহী যানবাহন ছাড়াও বন্দর থেকে আসা যাওয়ার পণ্যবাহী বিপুলসংখ্যক যানবাহনে স্থবির হয়ে পড়ে জনচলাচল। এতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় পতেঙ্গা ইপিজেডসহ ওই এলাকায় অবস্থিত শিল্প-কারখানাগুলোর লাখ লাখ শ্রমিক-কর্মচারীকে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পুরোপুরি চালু হয়ে গেলে যানবাহনের চাপ কমবে। এতে জনদুর্ভোগ অনেকটাই কমে আসবে বলে অভিমত নগরবিদদের।