
অনলাইন ডেস্কঃ
কর্মবিরতি থেকে সরে আসতে রানিং স্টাফদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা কিন্তু বৈঠকে কোনো সমাধান না হওয়ায় রানিং স্টাফরা বৈঠক থেকে বেরিয়ে যান। এদিকে রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিক চৌধুরী সন্ধ্যা ৭টার দিকে জানান, ভাতা ও পেনশন পুনর্বহাল করে প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত রানিং স্টাফরা ট্রেন চালাবেন না। ফলে আজও বন্ধ থাকতে পারে ট্রেন চলাচল।
মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের ভিআইপি রুমে অনুষ্ঠিত বৈঠক থেকে বের হয়ে রানিং স্টাফদের প্রতিনিধি সাইদুর রহমান বলেন, আমরা দীর্ঘক্ষণ রেল সচিব-মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তবে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারিনি বলে ওই বৈঠক চলাকালীনই আমি চলে এসেছি। আমাদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ যারা আছে, বিষয়টি নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করব। তবে আমরা আমাদের কর্মবিরতিতে অনড় আছি।
ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস।
এর আগে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরাসরি কোনো যোগাযোগ হচ্ছে না। তাদের সঙ্গে পরোক্ষভাবে (ইনডিরেক্টলি) যোগাযোগ হচ্ছে। তখন ফাহিমুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘আমাদের আলোচনার দ্বার খোলা আছে। তারা আসলে তাদের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে যেকোনো সময় ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে।’
মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে জটিলতা নিরসন না হওয়ায় কর্মবিরতিতে গেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। কর্মবিরতির অংশ হিসেবে সোমবার দিবাগত রাত ১২টার পর শিডিউলে থাকা ট্রেনগুলোতে ওঠেননি রানিং স্টাফরা। ফলে প্রারম্ভিক স্টেশন থেকে কোনো ট্রেন ছেড়ে যায়নি। রানিং স্টাফের মধ্যে রয়েছেন ট্রেনচালক, গার্ড ও টিকিট চেকার পদধারীরা।
এদিকে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন অগ্রিম টিকিট কাটা যাত্রীরা। টিকিট রিফান্ডের বিষয়ে স্টেশন ম্যানেজার মো. সাজেদুল ইসলাম বলেন, কোন যাত্রী যদি রিফান্ড চায় তাহলে তার টাকা ফেরত দেওয়া হবে। এবং পরবর্তীতে যদি কোন যাত্রী যাতায়াত করতে চায় তাহলে আবার নতুন করে ট্রেনের টিকেট কাটতে হবে। এই টিকেট দিয়ে আমরা শুধু রিফান্ডের ব্যবস্থা করেছি পরবর্তী যাত্রার জন্য কোন ব্যবস্থা করা হয়নি।
তিনি বলেন, যেহেতু পরবর্তী ট্রেনের টিকেটও ইতোমধ্যে কাটা হয়েছে। তাই এই যাত্রীদের যদি সেই ট্রেনের ব্যবস্থা করে দেয়া হয় তাহলে যারা টিকেট কেটেছে তাদের সঙ্গে এক ধরনের ঝামেলা সৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে টিকিট রিফান্ডের পাশাপাশি যাত্রীদের সুবিধার্থে ও যাত্রীদের বিকল্প যাতায়াতের জন্য বিআরটিসি বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে ১১টি, কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ১৭টি, চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে ৬টি, বগুড়া রেলস্টেশন থেকে ৫টি ও কুমিল্লা রেলস্টেশন থেকে ১টি নিয়ে মোট ৪০টি বাস বিভিন্ন গন্তব্য এ ছেড়েছে।
বিআরটিসি সার্ভিস কত দিন পর্যন্ত চলবে জানতে চাইলে স্টেশন ম্যানেজার বলেন, আমরা আশা করতেছি এই সমস্যা থেকে আমরা খুব দ্রুতই উত্তরোন করতে পারব। এ সমস্যা সমাধান হলে আমরা ট্রেনের মাধ্যমেই যাত্রীর যাতায়াতের ব্যবস্থা করব।