
অনলাইন ডেস্কঃ
বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সরকারের নাভিশ্বাস অবস্থা বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৫ সুষ্ঠুভাবে উদ্যাপনের লক্ষ্যে সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ কনে তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা দেয়ার দাবিতে যে আন্দোলন, তাতে জনগণের নাবিশ্বাস উঠেছে এবং সরকারেরও নাভিশ্বাস অবস্থা।
তিনি বলেন, দেশের লোকজনকে আন্দোলনকারীরা অতিষ্ঠ করে ফেলেছে।
তিনি জানান, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সারা দেশে যাতে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক থাকে, তার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে। ক্রমান্বয়ে আরও ভালো হবে।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এই আন্দোলনের পেছনে কারা জড়িত আপনারা সবাই তা বোঝেন, জানেন। শিক্ষার্থীদের রেললাইন ছেড়ে দিয়ে ক্যাম্পাসে গিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি পেশ করা উচিত।’
এ সময় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের বলেন, তিতুমীর কলেজকে একটি আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় করার যৌক্তিকতা থাকতে হবে। এই দাবির যৌক্তিকতা দেখা যাচ্ছে না। এ বিষয়টি আন্দোলনকারীদেরকে বুঝতে হবে। সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীরা চায় পড়াশোনা অব্যাহত থাকুক।
এদিকে বিকেল ৩টার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তিতুমীর কলেজের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে মহাখালীর আমতলী মোড়ের দিকে অগ্রসর হন। মিছিলে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিতি ছিল। এ সময় তাদেরকে ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘তিতুমীর আসছে, রাজপথ কাঁপছে’, ‘টিসি না টিউই, টিউই টিউই’, ‘আমার ভাই অনশনে, প্রশাসন কী করে’ ইত্যাদি স্লোগান ও বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করতে দেখা গেছে।
মিছিলটি লেভেল ক্রসিং এলাকায় পৌঁছায় বিকেল পৌনে ৪টার দিকে। মিছিলকারীদের সঙ্গে থাকা অনশনকারী শিক্ষার্থীরা প্রথমে রেললাইনে শুয়ে পড়েন। পরে আন্দোলনকারীরা রেলপথ অবরোধ করেন। এ সময় কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে আসা উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটি দেখতে পেয়ে শিক্ষার্থীরা লাল নিশানা দেখিয়ে ট্রেনটি থামান।
পরে শিক্ষার্থী আলী আহাম্মেদ মাইকে বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বা শিক্ষা উপদেষ্টাকে এখানে এসে তিতুমীরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা দিতে হবে। না হলে আমরা রেললাইন ছাড়ব না। আমাদের এইটাই দাবি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সাধারণ মানুষের কাছে ক্ষমা চাইছি। রাষ্ট্র আমাদের এখানে এনে দাঁড় করিয়েছে।’
বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ঘটনাস্থল থেকে সময় সংবাদের প্রতিবেদক জানান, শতাধিক শিক্ষার্থী মহাখালী রেলক্রসিংয়ে অবস্থান করছেন। দাবি আদায়ে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন তারা।
অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি বাড়ানোর পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। একইসঙ্গে একটি জলকামানও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপকমিশনার ডিসি মোহাম্মদ তারেক মাহমুদ গণমাধ্যমকে বলেনন, ‘জনদুর্ভোগ না হয় এমন কর্মসূচি দিতে শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করেছিলাম। আজ তারা কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় মহাখালী রেলগেটে এসে বসে পড়েছেন। আমরা তাদের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। বলেছি, কোনোভাবেই রেলপথ অবরোধ করে জনদুর্ভোগ করা যাবে না। আপনাদের কর্মসূচি কলেজ প্রাঙ্গণে করতে পারেন। তারা জানিয়েছেন, আলোচনা করে আমাদের জানাবেন।’