
অনলাইন ডেস্কঃ
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) শিক্ষার্থী আবিদুর রহমান আবিদ হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া ছাত্রলীগের ১২ নেতাকর্মীকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে বিচারিক আদালতের রায় কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিচারপতি মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। মামলার বাদী নিহত আবিদের মামা নেয়ামত উল্লাহর করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ আসে।
আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী অজি উল্লাহ ও আজিমুদ্দিন পাটোয়ারি। আদেশের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
২০১১ সালের ২১ অক্টোবর চমেক ছাত্রাবাসে ছাত্রদল কর্মী সন্দেহে তৎকালীন বিডিএস তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবিদুর রহমান আবিদকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে। আবিদের পরিবারের দাবি, ছাত্রদলের কমিটি গঠনের চেষ্টাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ নেতাদের হামলার শিকার হন তিনি। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ঘটনায় ছাত্রলীগের চমেক শাখার ১২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যার মামলা দায়ের করা হয়। তবে ২০১৯ সালের ১০ জুলাই অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত সব আসামিকে খালাস দেন। পরে বাদী পক্ষের আপিলের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট রুল জারি করে এবং আসামিদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
আসামিরা হলেন, মফিজুর রহমান জুম্মা (তৎকালীন ছাত্রসংসদের ভিপি), সোহেল পারভেজ সুমন (ছাত্রলীগের সভাপতি), বিজয় সরকার (সাধারণ সম্পাদক), হিমেল চাকমা, ফেরদৌস রাসেল, শান্ত দেবনাথ, মাহাফুজুর রহমান ধীমান, নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, দেবাশীষ চক্রবর্তী, মোস্তফা কামাল, রাশেদুর রেজা সানি ও সালমান মাহমুদ রাফসান।
হাইকোর্টের রুলে নিম্ন আদালতের রায় বাতিল না করার কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, আসামিরা যদি আত্মসমর্পণ না করেন তবে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হতে পারে।
আবিদের মৃত্যুর পর সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ উত্তাল হয়ে ওঠে। তারা চমেক প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন। পরে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সেলিম মো. জাহাঙ্গীর কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন এবং ছাত্র সংসদ কার্যক্রমসহ সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থগিত করা হয়।
নিহতের মামা নেয়ামত উল্লাহ বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় ছাত্রলীগ ও ছাত্র সংসদের ২২ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুলিশের দেয়া অভিযোগপত্রে ১২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
২০১৯ সালের ১০ জুলাই অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী রায়ে সব আসামিকে খালাস দেন। সেই রায়ের বিরুদ্ধেই হাইকোর্টে আবেদন করেন বাদী।