
অনলাইন ডেস্কঃ
ইরানের রাজধানী তেহরানের পশ্চিমে মেহরাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নতুন করে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এই হামলায় রাজধানী তেহরানের মেহরাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগুন জ্বলছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে বিমানবন্দরটির অভ্যন্তরে আগুন জ্বলতে ও ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। বিস্ফোরণের কিছু সময় পর বার্তাসংস্থা এএফপির এক সাংবাদিক জানিয়েছেন, তেহরানের মেহরাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিমানঘাঁটিতে বড় আকারের আগুন থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যাচ্ছিল। ইরানের বিপ্লবী গার্ড কর্পস পরিচালিত ফার্স নিউজ এজেন্সি নিশ্চিত করেছে যে বিমানবন্দর এলাকায় কমপক্ষে দুটি বোমা হামলা হয়েছে।
শনিবার (১৪ জুন) ভোরে ইরানের তাসনিম নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিমানবন্দর এলাকায় একটি ‘বিস্ফোরণ’ হয়েছে। এরপর বিমানবন্দরটি থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা যাচ্ছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
ইরানের বিপ্লবী গার্ড কর্পস পরিচালিত ফার্স নিউজ এজেন্সি নিশ্চিত করেছে যে, কমপক্ষে দুটি মিসাইল বিমানবন্দর এলাকায় আঘাত হেনেছে।
ইরানি মিডিয়াও জানিয়েছে যে বিমানবন্দরের পশ্চিমে ভার্দাভার্ড এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। বিমানবন্দরটিতে এখন আগুন জ্বলছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে বিমানবন্দরটির অভ্যন্তরে আগুন জ্বলতে ও ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। আল–জাজিরা জানিয়েছে, ইরানের তাসনিম নিউজ এজেন্সি এই ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে।
স্থানীয় মেহের নিউজ এজেন্সির বরাতে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, বিমানবন্দর এলাকায় একটি ‘বিস্ফোরণ’ হয়েছে। এরপর বিমানবন্দরটি থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা যাচ্ছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছেন, ইসরায়েলের হামলার প্রতিক্রিয়ায় তার দেশকে ‘সংযম’ দেখাতে বলাটা ‘অযৌক্তিক’। নিজ দেশে ইসরায়েলি হামলার মধ্যে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির সঙ্গে বৈঠক করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পরে টেলিগ্রামে দেয়া এক পোস্টে ওই বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে এ কথা লিখেন তিনি।
পোস্টে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও লিখেন, ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড ইরানের জাতীয় সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইরানের প্রতিক্রিয়া ‘দৃঢ়’ হবে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার ভোররাতে ২০০ যুদ্ধবিমান দিয়ে ইরানের প্রায় ১০০ স্থানে হামলা করেছে দখলদার ইসরায়েল। নৃশংস এই হামালায় ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, বিজ্ঞানীসহ অন্তত ৭৮ জন নিহত হয়েছে। দখলদার বাহিনীর হামলায় আহত হয়েছেন তিন শতাধিক মানুষ। এই হামলার উপযুক্ত জবাব দেয়ার অঙ্গীকার করেছে ইরান।
ইসরাইলের হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল ইরানের পরমাণু স্থাপনা, ব্যালিস্টিক মিসাইল স্থাপনাগুলো, সামরিক ঘাঁটি ও আকাশ প্রতিরক্ষা সিস্টেম। পরবর্তীতে শুক্রবার বিভিন্ন সময় নতুন করে আরও বেশ কিছু হামলা চালায় ইসরাইল।
পরে রাতে ইসরাইলে পাল্টা হামলা চালায় ইরান। এদিন রাতে অন্তত দুই দফায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। এসব হামলায় অন্তত একজন ইসরাইলি নারী নিহত ও অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় দেশটির রাজধানী তেহরানে জাতীয় পতাকা হাতে শত শত নাগরিক আনন্দ মিছিলে বের করতে দেখা গেছে।