
অনলাইন ডেস্কঃ
যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা নিয়ে সন্তান জন্ম দিতে গেলে এবার পড়তে হতে পারে বড় বিপাকে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, শুধু সন্তান জন্ম দেওয়ার উদ্দেশ্যে পর্যটন ভিসার (B1/B2) অপব্যবহার এখন থেকে আর সহ্য করা হবে না। এই প্রক্রিয়াকে ‘বার্থ ট্যুরিজম’ বলে অভিহিত করে এটিকে সরাসরি নিষিদ্ধ করেছে তারা।
সম্প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সন্তান জন্ম দেওয়ার উদ্দেশ্যে পর্যটন ভিসার (B1/B2) অপব্যবহারকে তারা ‘বার্থ ট্যুরিজম’ হিসেবে বিবেচনা করছে এবং এটি সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস শনিবার (১৪ জুন) তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে বিষয়টি আবারও স্পষ্ট করে জানায়। সেখানে বলা হয়, “অনেক ভিনদেশি বাবা-মা শুধুমাত্র সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে আসেন এবং চিকিৎসা খরচের জন্য সরকারি সহায়তা গ্রহণ করেন। এই ব্যয় আমেরিকার করদাতাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। ভবিষ্যতে এই অভিভাবকরা তাদের ভিসা নবায়নেরও যোগ্যতা হারাতে পারেন।”
যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী শিশু স্বয়ংক্রিয়ভাবে মার্কিন নাগরিকত্ব লাভ করে—মার্কিন সংবিধানের এই বিধানকে কেন্দ্র করেই দীর্ঘদিন ধরেই ‘অ্যাঙ্কর বেবি’ কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছেন অনেক বিদেশি দম্পতি। এই পদ্ধতিতে কেউ কেউ সন্তানের মাধ্যমে পরবর্তীতে স্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের পথ খোঁজেন। তবে মার্কিন কর্তৃপক্ষ এখন সেই প্রবণতা বন্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সম্প্রতি বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত ভিসা আবেদনকারীদের যাচাই-বাছাইয়ের প্রক্রিয়া আরও কঠোর করা হয়েছে। আবেদনকারীর ভ্রমণের উদ্দেশ্য নিয়ে slightest সন্দেহ দেখা দিলে ভিসা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করা হচ্ছে।
যাদের ভিসা আছে, তারাও ঝুঁকিতে। এই সতর্কবার্তা শুধু নতুন আবেদনকারীদের জন্যই নয়, যারা পূর্বে পর্যটন ভিসায় গিয়ে সন্তান জন্ম দিয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ওই ভিসাধারীরা ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ কিংবা ভিসা নবায়নের ক্ষেত্রে জটিলতার মুখে পড়তে পারেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বিধিনিষেধের ফলে যারা যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসা, ভ্রমণ বা স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার জন্য যাচ্ছেন, তাদেরও অতিরিক্ত জবাবদিহি ও যাচাইয়ের মুখোমুখি হতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা আবেদন করতে ইচ্ছুক বাংলাদেশিদের প্রতি পরামর্শ হচ্ছে, আবেদনপত্রে প্রকৃত তথ্য প্রদান করা এবং চিকিৎসা বা সন্তান জন্মদানের উদ্দেশ্যে থাকলে তা যথাযথ চিকিৎসা ভিসার (B-2 Med Visa) আওতায় করার চেষ্টা করা। পাশাপাশি সমস্ত চিকিৎসা ব্যয় নিজের বহনযোগ্যতা প্রমাণের উপযুক্ত কাগজপত্র জমা দেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে।
সতর্কবার্তা এবং নতুন নীতিমালার ফলে, যারা যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের কথা ভাবছেন, বিশেষ করে যাদের পূর্বে সন্তানের জন্মসংক্রান্ত রেকর্ড রয়েছে, তাদের এখন আরও বেশি সচেতন হতে হবে।