
অনলাইন ডেস্কঃ
দেশজুড়ে আলোচিত মাগুরার আট বছরের শিশু আছিয়ার ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রেশ না কাটতেই বিভিন্ন স্থানে ধর্ষকরা ফের বেপরোয়া হয়ে উঠছে। মাগুরার ঘটনাটিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে একজনের মৃত্যুদে র রায় দেওয়া হলেও টনক নড়েনি ধর্ষকদের। বিকৃত রুচির এ অপরাধীরা গণপরিবহন, এটিএম বুথসহ যেখানেই সুযোগ পাচ্ছে সেখানেই ফাঁদ পাতছে। হামলে পড়ছে কন্যাশিশু ও নারীদের ওপর।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্যে, চলতি বছরের মে মাসে ৩১ কন্যাশিশুসহ মোট ৪৫ জন ধর্ষণের শিকার হয়। এর মধ্যে ছয় কন্যাশিশুসহ সাতজন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় আর তিন কন্যাশিশুসহ চারজনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। এ ছাড়া ১১ কন্যাশিশুসহ ১৪ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। নারী নেত্রীরা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, যখন একটি দেশে ‘চেইন অব কমান্ড’ বা নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় সব দিক দিয়ে দুর্বলতা থাকে তখন অপরাধীরা পার পেয়ে যায়।
মূলত এখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যথাযথ নজরদারির অভাবে একের পর এক ধর্ষণ ঘটছে। তাঁদের মতে ধর্ষণের মতো অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও শক্ত হতে হবে।
বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী এলিনা খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় যে সাজা দেওয়া হয়েছে তা ছিল ‘লোকদেখানো’। শুধু একজন আসামির শাস্তির রায় ঘোষণা করা হয়েছে।
কিন্তু অন্য সহযোগীদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু আইন করে এসব অপরাধের বিচার হবে না। এজন্য বাসস্ট্যান্ড, শপিং মলসহ জনসমাগমস্থলে সচেতনতামূলক ব্যানার-পোস্টার লাগাতে হবে। সরকারের ব্যর্থতা-এ ব্যাপারে কোনোরকম সভা-সেমিনারের আয়োজন করছে না। এসবের আয়োজন করা গেলে এ ধরনের অপরাধ কেন ঘটছে এবং তা কীভাবে থামানো যায় সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।
রাজবাড়ীর পাংশায় অষ্টম শ্রেণির দুই ছাত্রীকে ১৫ জুন তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। প্রাইভেট শেষে বাড়ি ফেরার পথে ধারালো ছুরির ভয় দেখিয়ে তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে দুটি মামলা হয়েছে। একই দিন সিলেট থেকে নবীগঞ্জ ফেরার পথে চলন্ত বাসে ঢাকার এক কলেজছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় জনতা বাসচালক সাব্বির মিয়াকে আটক করে সেনাবাহিনীতে সোপর্দ করে।
১৫ জুন গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি বেসরকারি ব্যাংকের এটিএম বুথের ভিতর এক পোশাকশ্রমিক কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়। ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে সেই বুথের নিরাপত্তারক্ষীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বুথের নিরাপত্তাকর্মী লিটন মিয়ার বিরুদ্ধে শ্রীপুর থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগীর বাবা। বেতনের টাকা তোলার সুবাদে এটিএম বুথের নিরাপত্তাকর্মী লিটনের সঙ্গে এ কিশোরীর পরিচয় হয়। লিটন তাকে বেশি বেতনে চাকরি দেওয়ার ব্যাপারে কথা বলার জন্য রবিবার সকালে ডেকে নিয়ে এটিএম বুথের ভিতরে ধর্ষণ করেন।