
বিশেষ প্রতিনিধি:
নিজের ফেসবুক পেজে আলহামদুলিল্লাহ লিখে খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি, সদর আসনের সাবেক এমপি, দলের পদ পদবি থেকে অব্যাহতি পাওয়া নজরুল ইসলাম মঞ্জু রীতিমতো আলোচনায়। এটা খুলনায় এখন টক অব দ্য টাউন। গত কদিন ধরে খুলনায় মঞ্জু শিবিরে আনন্দ উল্লাস চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হয়ে উঠেছেন তার (নজরুল ইসলাম মঞ্জু) অনুসারীরা। তিনি আবারও দলে ফিরছেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচনে সদর আসনে মনোনয়নও পাচ্ছেন, এমনটি দাবি করে অভিনন্দন জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন তার অনুসারীদের কেউ কেউ।
তবে শিক্ষকতা পেশায় জড়িত আছেন, মঞ্জুর ঘনিষ্ঠ এমন একজন সহযোগী এই প্রতিবেদককে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, তিনি নিজেই নিজের পোস্টে এমন না লিখলেই পারতেন। যদি তিনি মনে করেন, এমন ধরনের কোন সুসংবাদ তার আসছে, এটা তিনি আমাদের কাউরে বা অপেক্ষাকৃত জুনিয়রদের দিয়ে পোস্ট করাতে পারতেন বা দলের থেকে ঘোষনা আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারতেন।
ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা সাবেক এই ছাত্রনেতা আরও বলেন, দলের বাইরেও তার হাজার হাজার শুভাকাঙ্ক্ষী, ভক্ত- সমর্থক আছে। তাদের মধ্যেও তার দেয়া আলহামদুলিল্লাহ পোস্টে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। আমরা নিজেরাও তার কারনে বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়েছি। সন্দেহ নেই, তিনি নেতা হিসাবে অসম্ভব জনপ্রিয়। একজন দক্ষ সংগঠক। কিন্তু এই ক্ষেত্রে তিনি শিশুসুলভ আচরণের পরিচয় দিয়েছেন। তার ইমেজ আজ প্রশ্নবিদ্ধ।
নিজের ফেসবুক পেজে আলহামদুলিল্লাহ লিখে খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি, সদর আসনের সাবেক এমপি, দলের পদ পদবি থেকে অব্যাহতি পাওয়া নজরুল ইসলাম মঞ্জু রীতিমতো আলোচনায়। এটা খুলনায় এখন টক অব দ্য টাউন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, চারটি ঘটনায় নজরুল ইসলাম মঞ্জু আলহামদুলিল্লাহ লিখতে পারেন। নিজ অনুসারী ও বিএনপির একাধিক নেতাদের সাথে কথা বলে এমন ধারণা পাওয়া গেছে।
প্রথমত, এমপি থাকাকালীন তিনি একটা প্লট পেয়েছিলেন। সময়মতো অর্থ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে তার সেই প্লট বাতিল হয়ে যায়, অতি সম্প্রতি তিনি সেই প্লটটি ফেরত পেয়েছেন। দ্বিতীয় কারণ, তার সন্তান এমেরিকায় গেছেন, ভালো জব পেয়েছেন। সেই জন্য তিনি আলহামদুলিল্লাহ লিখতে পারেন, ৩য় কারনটা হচ্ছে রাজনৈতিক যেটাকে সবাই প্রাধান্য দিচ্ছেন।
সূত্রমতে, বেগম জিয়া মুক্তি পাবার পরে নজরুল ইসলাম মঞ্জু দেখা করেছেন এমন খবর বাজারে চাউর আছে। মঞ্জুর অনুসারিদের দাবি, নজরুল ইসলাম মঞ্জুর প্রতি বেগম জিয়া বরাবরই সহানুভূতিশীল। তিনি মঞ্জুর বিষয়টি প্রথম থেকেই তিনি অবগত।
মঞ্জুর ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, মঞ্জুর বিষয়টি বেগম জিয়া দলের তিন শীর্ষ নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাউদ্দিন আহমেদের সাথে আলোচনা করেছেন। তাদেরকে বলেছেন তারেক যেনো মঞ্জুর বিষয়টি কনসিডার করে। তবে এই খবরের সত্যতা মেলেনি। একাধিক দায়িত্বশীল নেতারা বলেছেন, এমন বিষয় আমাদের জানা নেই।
মঞ্জুর অন্যতম সমর্থক মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি সেকেন্দার জাফর উল্লাহ খান সাচ্চু বলেছেন, আলহামদুলিল্লাহ সংক্রান্ত কোন তথ্য তার কাছে নেই। তিনি বলেন, পোস্ট দেবার পরে মঞ্জুর সাথে বিভিন্ন সময়ে কথা হলেও আলহামদুলিল্লাহ নিয়ে মঞ্জুর সাথে কোন কথা হয় নি। সাচ্চু আরও বলেছেন, সমাধান হচ্ছে- হবে, এটা বহুদিন ধরেই শুনছি। আন্দোলন- সংগ্রামে বিএনপির জনবল দরকার হলেও এখন সেই ক্রাইসিস কেটে গেছে। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, বিএনপি এখন নেয়ার টু পাওয়ার, নেয়ার টু ডোর। এখন কেন প্রয়োজন হবে মঞ্জু বা আমাদের? পাল্টা প্রশ্ন সাচ্চুর।
যুবদল করে এসেছেন এমন একজন মূলধারার খুলনা বিএনপি নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ওরা দুই- চার মাস পরপর আলহামদুলিল্লাহ লিখে, আমাদের এটা দেখতে দেখতে সয়ে গেছে। গত দুই বছর ধরে এটা দেখে আসছি। দলের মহানগর শাখার সাবেক যুগ্ম আহবায়ক, সাবেক ছাত্রদল নেতা কাজি মাহমুদ বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত। তিনি দলের স্বার্থে যেটা ভালো মনে করবেন আমরা মাঠ পর্যায়ে নেতা কর্মীরা সেটাই ফলো করবো।
দলের মহানগর শাখার সাবেক যুগ্ম আহবায়ক, সাবেক কাউন্সিলর কাজি মোহাম্মাদ রাশেদ বলেছেন, রাজনীতির পথ বড় পিচ্ছিল, এখানে একবার স্লিপ কাটলে মেইন ট্রাকে ফিরে আসা বড় কঠিন। কাজি রাশেদ বলেন, মঞ্জুর ব্যাক করা না করা সম্পুর্ণ নির্ভর করছে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মর্জির উপর। যে কোন কারনেই হক, বিষয়টি জটিল আকার ধারণ করেছে যা গত দুই বছরেও সমাধান হয় নি।
কাজি রাশেদ আরও বলেন, মনা- তুহিনের নেতৃত্বে খুলনা মহানগর কমিটি গঠন হয়ে গেছে, পাঁচ থানা ওয়ার্ড কমিটিগুলোর সম্মেলনও হয়ে গেছে। অন্যদিকে ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে অনিন্দ ইসলাম অমিত ইতিমধ্যে নিজের বলয় তৈরি করেছেন, সে ক্ষেত্রে অমিতই পরবর্তীতে সাংগঠনিক সম্পাদক হচ্ছেন, এটা অনেকটা নিশ্চিত। নেতা-কর্মীদের প্রত্যাশাও তেমন।
জানা গেছে, লন্ডন থেকে অতি সম্প্রতি দলের প্রভাবশালী দুই নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে দেখা করে দেশে এসেছেন। এদের একজন হলেন, সাবেক এমপি, বিসিবির সাবেক সভাপতি আলি আসগর লবি ও দলের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক যশোরের অনিন্দ ইসলাম অমিত।
মঞ্জু বিষয় নিয়ে তারেক রহমানের সাথে কোন কথা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে দলের বর্ষিয়ান নেতা, সাবেক এমপি, সদ্য লন্ডন ফেরত আলি আসগর লবি বলেন, আমি আমার বিষয়টি নিয়েই মনোযোগি ছিলাম, সেখানে অন্য বিষয় নিয়ে আলোচনার কোন স্কোপ ছিল না। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান না তুললে কোন আলোচনা নিজ থেকে তোলা যায় না। এটা অড লুকিং।
ভিন্ন সূত্রে চতুর্থ কারন হিসাবে জানা গেছে, দলের সদস্য সংগ্রহ অভিযানের ফর্ম গঠনতন্ত্র মতে বর্তমান মহানগর কমিটিই পাবে। এই ফর্ম কেন্দ্র থেকে মঞ্জুর অনুসারীরা তুলে আনার জন্য মঞ্জুকে অনুরোধ করে। যেটা তারা আনতে ব্যর্থ হয়। মঞ্জুর অনুসারীদের ধারণা, এতো দিন তারা সদস্য হিসাবে পরিচয় দিতে পারলেও ভবিষ্যতে তারা নতুন করে ফর্ম পূরণ করতে না পারলে সদস্য হিসাবেও পরিচয় দিতে পারবেন না।
সূত্র বলছে, গত সপ্তাহে খানজাহান আলি থানার এক নেতা মঞ্জুকে অন্তত ১০০ ফর্ম এনে ছোট খাট অনুষ্ঠান করে সদস্য সংগ্রহ করা অভিযান করার জন্য মঞ্জুকে পরামর্শ ও চাপ দেন। খানজাহান আলি থানার সেই নেতা অনুনয় বিনয় করে মঞ্জুকে বলেন, পোলাপান ধরে রাখা খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছে। মঞ্জু অনুসারীদের কেউ কেউ বলছেন, এসব কারনে আমরা কমবেশি সবাই হতাশ। তাই সবাইকে চাংগা রাখতেই তিনি আলহামদুলিল্লাহ লিখেছেন, এমন মন্তব্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে মঞ্জুর এক অনুসারীর।
স্থানীয় গনমাধ্যম সূত্রমতে, খুলনা মহানগর বিএনপির বর্তমান নেতারা বলছেন, নজরুল ইসলাম মঞ্জুর বিষয়ে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। তারাও ফেসবুক পোস্ট দেখে বিভ্রান্ত হচ্ছেন।
খুলনা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে নজরুল ইসলাম মঞ্জুর সম্পর্ক চার দশকেরও বেশি সময়ের। ৮০ র দশকে এরশাদ জামানায় মাত্র ১৬ জনকে নিয়ে ছাত্রদল থেকে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন মঞ্জু। ১৯৮৭ সাল থেকে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হন। ১৯৯২ সাল থেকে ১৭ বছর সাধারণ সম্পাদক, ২০০৯ সাল থেকে ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১২ বছর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হন তিনি। সেবার সারা দেশে বিএনপি মাত্র ৩০ টি আসন পায়, যার মধ্যে মঞ্জু একজন।
২০২১ সালে ৯ ডিসেম্বর খুলনা মহানগর বিএনপির ৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। আহবায়কের দায়িত্ব পান দীর্ঘদিন জেলার রাজনীতি করে আসা বিএনপি নেতা এডভোকেট শফিকুল আলম মনা, সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান সাবেক ছাত্রনেতা শফিকুল আলম তুহিন। সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক হিসাবে দায়িত্ব পান সাবেক ছাত্রদল নেতা তরিকুল ইসলাম জহির। এতে বাদ পড়েন মঞ্জু ও তাঁর অনুসারীরা। ১২ ডিসেম্বর দলের এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। সেই সংবাদ সম্মেলনে মঞ্জু দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কড়া সমালোচনা করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ ডিসেম্বর শোকজ করা হয় তাঁকে। ২৫ ডিসেম্বর তাঁকে বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
মঞ্জুর পক্ষে তার কয়েকশো অনুসারী এক দিন পর থেকেই গণপদত্যাগ শুরু করেন। এর মধ্যে খুলনা মহানগর বিএনপি, ৫ থানা ও ৩১টি ওয়ার্ড বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। স্মমেলনের মধ্য দিয়েই জসব জায়গা থেকেই মঞ্জু অনুসারীরা বাদ পড়েন।
বাদ পড়ার ৬ মাস পরেই রাজনীতিতে কর্মসূচিতে সরব হন নজরুল ইসলাম মঞ্জু। কেন্দ্রীয় বড় কর্মসূচির প্রতিটিতেই পৃথক ব্যানার ও মিছিল নিয়ে যোগ দেন মঞ্জুসহ তার অনুসারীরা। জাতীয় দিবসগুলো বড় পরিসরে পালন হচ্ছে। গত ৩০ মে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে আলাদাভাবে পালন করেছে তার অনুসারীরা। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বরাবর কয়েকবার ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন, বেগম জিয়াসহ দলের অধিকাংশ সিনিয়র নেতাদের দ্বারস্থ হয়েছেন নুর ইসলাম মঞ্জু কিন্তু আজও সমাধান মেলে নি।
গত কয়েকমাস ধরে খুলনা-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী নির্ধারণ নিয়ে নানা জ্বল্পনা চলছে। মনোনয়ন পেতে কাজ করে যাচ্ছেন খুলনা মহানগর বিএনপির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন। এরই মধ্যে গত ৪ জুলাই নিজের ফেসবুকে অ্যাকাউন্টে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ লিখে পোস্ট দেন নজরুল ইসলাম মঞ্জু। এরপর থেকেই তাকে নিয়ে ছবি দেওয়ার হিড়িক পড়ে অনুসারীদের মাঝে। সেখানে মঞ্জুকে নিয়ে নানা প্রত্যাশা, দলে ফেরা এবং তার নির্বাচনী আসন খুলনা-২ এতে মনোনয়নলাভের বার্তা ছিলো।
সার্বিক বিষয় নিয়ে খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনা স্থানীয় গনমাধ্যমকে বলেছেন, ‘ফেসবুকে আমরাও আলহামদুলিল্লাহ লেখা দেখছি। কেউ বলছে, ছেলে আমেরিকায় চাকরি পেয়েছে, তাই লিখছে। কেউ বলছে, মনোনয়ন পাচ্ছে। দল থেকে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। তার প্রত্যাবর্তন বিষয়ে আমরা কিছু জানি না৷
খুলনা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে নজরুল ইসলাম মঞ্জুর সম্পর্ক ৪৬ বছরের। ১৯৭৯ সালে ছাত্রদল থেকে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন মঞ্জু। ১৯৮৭ সাল থেকে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক, ১৯৯২ সাল থেকে ১৭ বছর সাধারণ সম্পাদক, ২০০৯ সাল থেকে ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১২ বছর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হন তিনি।
দীর্ঘ চার দশক ধরে খুলনা বিএনপি এবং নজরুল ইসলাম মঞ্জু যেন এক নামেই জড়িয়ে ছিলেন। অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে দলের মধ্যে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও নিজের লোকদের সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ ছিল প্রতিপক্ষের।
নজরুল ইসলাম মঞ্জুর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের ছন্দপতন ঘটে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে। ৯ ডিসেম্বর খুলনা মহানগর বিএনপির ৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে বাদ পড়েন মঞ্জু ও তাঁর অনুসারীরা। ১২ ডিসেম্বর দলের এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ ডিসেম্বর শোকজ করা হয় তাঁকে। ২৫ ডিসেম্বর তাঁকে বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
স্থানীয় গনমাধ্যমের সুত্রমতে, মঞ্জুর চার দশকের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের এমন পরিণতি মানতে পারেননি অনুসারীরা। এক দিন পর থেকেই শুরু হয় গণপদত্যাগ। কিছু দিন রাজনীতিতে নিস্ক্রিয় ছিলেন মঞ্জু ও তার অনুসারীরা। এর মধ্যে খুলনা মহানগর বিএনপি, ৫ থানা ও ৩১টি ওয়ার্ড বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সব জায়গা থেকেই মঞ্জু অনুসারীরা বাদ পড়েন।
বাদ পড়ার ৬ মাস পরেই রাজনীতিতে কর্মসূচিতে সরব হন নজরুল ইসলাম মঞ্জু। কেন্দ্রীয় বড় কর্মসূচির প্রতিটিতেই পৃথক ব্যানার ও মিছিল নিয়ে যোগ দেন মঞ্জুসহ তার অনুসারীরা। জাতীয় দিবসগুলো বড় পরিসরে পালন হচ্ছে। গত ৩০ মে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে আলাদাভাবে পালন করেছে তার অনুসারীরা।
গত কয়েকমাস ধরে খুলনা-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী নির্ধারণ নিয়ে নানা জ্বল্পনা চলছে। মনোনয়ন পেতে কাজ করে যাচ্ছেন খুলনা মহানগর বিএনপির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন। এরই মধ্যে গত ৪ জুলাই নিজের ফেসবুকে অ্যাকাউন্টে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ লিখে পোস্ট দেন নজরুল ইসলাম মঞ্জু। এরপর থেকেই তাকে নিয়ে ছবি দেওয়ার হিড়িক পড়ে অনুসারীদের মাঝে। সেখানে মঞ্জুকে নিয়ে নানা প্রত্যাশা, দলে ফেরা এবং তার নির্বাচনী আসন খুলনা-২ এতে মনোনয়নলাভের বার্তা ছিল।
এই ব্যাপারে নজরুল ইসলাম মঞ্জুর সাথে কথা বলে তার বক্তব্য নেয়ার জন্য দফায় দফায় ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেন নি। হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ দিয়ে কথা বলতে চাইলেও তিনি উত্তর দেন নি বা কল ব্যাক না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায় নি।