
অনলাইন ডেস্কঃ
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সতর্ক করে বলেছেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কিছু অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটছে, যার ইঙ্গিত ভালো নয়। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, সবাই একতাবদ্ধ ও সতর্ক না থাকলে দেশে আরেকটি এক-এগারোর পুনরাবৃত্তি অসম্ভব নয়। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ‘ফ্যাসিবাদ থেকে গণতন্ত্রে উত্তরণের পথে আইনজীবীদের ভূমিকা: আলোচনা ও ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানের বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিএনপি নেতা।
বর্তমান সরকারের প্রস্তাবিত পিআর নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ‘অবাস্তব কল্পনা’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, এ পদ্ধতি সাধারণ মানুষ বোঝে না এবং এটি দেশের বাস্তবতার সঙ্গে যায় না।
তার ভাষায়, একটি মহল দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র চায় না। এমনকি শেখ মুজিবুর রহমানও গণতান্ত্রিক পদ্ধতির পক্ষে ছিলেন না। পিআর পদ্ধতি নিয়ে তিনি আরও বলেন, প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘এই যে বিষয়গুলো তৈরি করা হচ্ছে কেন? এই বিতর্কগুলো তৈরি করা হচ্ছে কেন? এর পেছনে আপনি যদি মনে করেন এমনি এমনি করা হচ্ছে, তা নয়। এর পেছনে একটা বিশেষ উদ্দেশ্য আছে। সেই উদ্দেশ্যটা সেই এক– এগারোতে ফিরে যাবেন, সেই উদ্দেশ্যটা, সেই একেবারে ফিরে চলে যাবেন এরশাদ সাহেবের ক্ষমতা দখল করা পর্যন্ত। এ দেশে গণতন্ত্রকে চলতে দিতে চায় না। একটা মহল আছে যারা বারবার গণতন্ত্রের গলা টিপে ধরে। এমনকি শেখ মুজিবুর রহমানও এই কাজটা করেছেন একদলীয় শাসনব্যবস্থা (বাকশাল) প্রবর্তন করে।’
বিএনপি লিবারেল ডেমোক্রেসি (উদার গণতন্ত্র) চায় উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা চাই, আমাদের দেশের জনগণ তার ভোটের অধিকার ফিরে পাক। সে ভোট দিক। ভোট দিয়ে তার প্রতিনিধি সে নির্বাচিত করুক। পার্লামেন্ট (সংসদ) তৈরি হোক, সরকার তৈরি হোক। তারা চালাবে পাঁচ বছর। সেই পাঁচ বছরে যদি তারা ব্যর্থ হয়, না পারে, আবার নির্বাচন হবে। নির্বাচনে জনতা তাদের বাদ দিয়ে দেবে, অন্য দলকে দেবে। তাই তো? এই জায়গাটায় যেতে এত তর্ক–বিতর্ক কেন?
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, নির্বাচন আয়োজন নিয়ে এখন দেরি করা অনুচিত। তার মতে, আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যেই নির্বাচন হওয়া উচিত। তা না হলে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মর্যাদাও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এসময় বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক চেতনা এখন আর জুলাইয়ের গণ-আন্দোলনের স্পিরিট বহন করছে না। এখন রাজনীতি আর ঐক্যের জন্য নয় বরং ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষার লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, তরুণরা এখন আন্দোলনের জন্য নয়, চাঁদার জন্য চিঠি দিচ্ছে যা আন্দোলনের মৌলিক উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুতির ইঙ্গিত দেয়।