
অনলাইন ডেস্কঃ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘বিএনপি ১৭ বছর আন্দোলন করেছে। আমরা দরকার হলে আরো ১৭ বছর আন্দোলন করব।’
শুক্রবার (০১ আগস্ট) বিকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়িতে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে যাত্রাবাড়ীর শহীদ ফারুক সড়কে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শহীদদের স্মরণে এই সমাবেশ হয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, বিশেষ সহকারি শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদ, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, মীর আলী নেওয়াজ, ইশরাক হোসেন, দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক লিটন মাহমুদ, নবী উল্লাহ নবীসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য রাখেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, কিছু কিছু নেতৃবৃন্দ বিএনপির নেতৃবৃন্দকে কটাক্ষ করেন। অনেকে আছেন আমাদের বিরুদ্ধে তারা কথা বলছেন বিভিন্নভাবে। আমাদেরকে কটাক্ষ করে আমাদের সম্মানহানি করে কথা বলছে যাদের ৫ আগস্টের আগে জীবনেও কোনদিন মাকে দেখা যায় নাই। অনেকে বলে, ১৭ বছর কোথায় ছিলাম। আরে ভাই ১৭ বছর কোথায় ছিলাম এখানে আমি যদি কাউকে জিজ্ঞাসা করি সে বলবে, ১৭ বছর জেলে ছিলাম, এত বছর আন্দোলন করেছি, এতো রাস্তায় কাটিয়েছি। একদিনে ওই শেখ হাসিনার পতন হয় নাই।
অন্তবর্তীকালীন সরকার কি ‘জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সরকার’ কিনা এমন প্রশ্ন তুলে তিনি বলেছেন, এনসিপি সরকারের সকল সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছে। কি বলব? এই সরকারের মাথা থেকে নিচ পর্যন্ত পচে গেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, এই সরকার বোধহয় এনসিপির সরকার।
সমাবেশ উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশ্যে মির্জা আব্বাস বলেন, কী মনে হয় আপনাদের? উনারা যখন-যেখানে যান প্রটোকল পান। সরকারি প্রটোকল, পুলিশ, বিডিআর আর্মির গার্ড থাকে, সার্কিট হাউস ব্যবহার করেন, সরকারি যান পান। এমনভাবে বিষয়টা জানানো হয় যে, অমুক নেতা আসছেন দেখে রাখবেন।
প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ভাই আমরা তো বহু জায়গায় যাই বহু গেলাম কই আমরা তো পাই না? মন্ত্রী ছিলাম বহুদিন, ঢাকা মেয়র ছিলাম। কই আমরা তো পাই না সরকারি প্রটোকল।
মির্জা আব্বাস বলেন, এই সরকারের বয়স ১০/১১ মাসের বেশি হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত স্বৈরাচারের দোসরদের একজনেরও বিচার করতে পারেন নাই। হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে নাই, বহু লোক দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলো আরামের সঙ্গে। আপনারা বিচার করছেন না। আমি বলি, ১০ মাসে একজন গর্ভবতী মা শিশুর জন্ম দেন। আপনারা একটি নতুন বন্দোবস্তের জন্ম দিতে পারলেন না, পেরেছেন? অবশ্যই শহীদদের রক্তের বিনিময়ে আজকে কি পেরেছি আমরা? অনেকে আমরা টাকার কুমির হয়েছি, যাদের ঘরে একসময় খাওয়া ছিল না তারা কিছু খাওয়া পাচ্ছি। আপনারা মনে রাখবেন এই অন্যায়ের বিনিময়ে যা অর্জন করছেন, যারা ভক্ষণ করছেন পান করছেন শহীদদের রক্ত পান করছেন আপনারা এই কথা মাথায় রাখতে হবে। কেনো শহীদ পরিবারের সদস্যরা ‘এখনো সরকারের সহযোগিতা পাচ্ছে না’ তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন তিনি।
নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের কথা আমরা প্রথম থেকে বলে আসছি। তখন থেকেই আপনারা বলছেন, নির্বাচন করা যাবে না। আরে ভাই নির্বাচন করা ছাড়া দেশ চালাবে কিভাবে? নির্বাচন নিয়ে এতো গড়িমসি কেনো? আমি বুঝতে পারি না। আমি একটা জিনিস বুঝতে পারি জাস্টিস ডিলেইড জাস্টিস ডিনাইড। অর্থাৎ বিচারক যদি দেরি করে বুঝতে হবে বিচারক রায় ভালো দেবে না। এটা আমরা বুঝতে পারি। আমি বলব- আর দেরি কইরেন না।
মির্জা আব্বাস বলেন, আমি এখনও মনে করি, নির্বাচন তারা সুষ্ঠ না হওয়ার জন্য যত প্রক্রিয়া আছে তারা সেগুলা করার চেষ্টা করবে। মানুষকে বোঝাবে যে, বিএনপির বিরুদ্ধে ভুল বুঝাবে তারা মানুষকে। কিন্তু বিএনপি ১৭ বছর আন্দোলন করেছে। আমরা দরকার হলে আরো ১৭ বছর আন্দোলন করব কিন্তু সমস্যা নাই আমাদের। অবশ্যই দেশে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে। নির্বাচন নিয়ে যেকেনো ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বানও জানান মির্জা আব্বাস।