
অনলাইন ডেস্কঃ
কানের ক্যানসারে ভুগছেন তাহমিনা আক্তার। নিতে হবে রেডিওথেরাপি। সম্প্রতি মাদারীপুর থেকে রাজধানীর জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউটে এসেছেন থেরাপি নিতে। তাকে জানানো হয়েছে, কার্ড খালি নাই। এর আগেও ফিরে গেছেন চারবার।
এই ইনস্টিটিউটের রেডিওথেরাপি কক্ষের সামনে এমন অসহায় অপেক্ষা কয়েকশ রোগীর। বেশিরভাগই ঢাকার বাইরে থেকে আসা। বেসরকারিভাবে খরচ অনেক বেশি হওয়ায় সরকারি হাসপাতালে তাদের ছুটে আসা। কিন্তু আশায় গুড়েবালি।
এ যেন মৃত্যুপথযাত্রী ক্যানসার রোগীদের কান্না দেখার কেউ নেই। রেডিওথেরাপি নিতে গিয়ে ক্ষয় করছেন জুতোর তলা। দেশের সরকারি হাসপাতালে রেডিওথেরাপির মাত্র ৭টি মেশিনই কয়েক হাজার রোগীর ভরসা। ৬০ জেলাতে মেশিনই নেই। সিরিয়াল পেতেই কমপক্ষে ৬ মাস করতে হয় অপেক্ষা!
ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউটে একসময় প্রতিদিন ছয় থেকে সাতশ রোগী রেডিওথেরাপির সুযোগ পেতেন। মেশিন চালু ছিল ৬টি। এখন সেটা এসে ঠেকেছে দু’টিতে। সেবা পাচ্ছেন একশজনের বেশি। সময়ক্ষেপনের কারণে বাড়ছে ক্যানসার ছড়ানোর শঙ্কা।
জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম বললেন, বড় মেশিন যেটাকে লিনাক (লিনিয়ার এক্সিলারেটর) বলি, এটাতে রোগীর চাপ অনেক বেশি, আমরা প্রতিদিন একটা মেশিনেই ৮০-৯০ জনকে চিকিৎসা দিতে পারি। এখন তো কোবাল্ট মেশিন বেশি ব্যবহার করা হয় না কোথাও। যদিও বাংলাদেশে আছে কিন্তু আমরা কোবাল্টের পক্ষে বেশি না, লিনাকের পক্ষে বেশি। এখন তৃতীয় মেশিন কেনার প্রক্রিয়া চলছে।
সারাদেশে রেডিওথেরাপির ১৪টি যন্ত্রের ৭টিই নষ্ট। সচল ৪টি পুরাতন মডেলের কোবাল্ট সিক্সটি। আর তিনটি আধুনিক প্রযুক্তির লিনিয়ার এক্সিলারেটর। ৬০ জেলার মানুষকে থেরাপির জন্য আসতে হয় ঢাকায়। এখানকার তিনটি মেশিনই একমাত্র ভরসা।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের মতো একটা দেশে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটে ছয়টা মেশিন ছিল, সেখানে দুটো কাজ করছে অতএব বাকি রোগীরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কিন্তু আমরা ক্রয় প্রক্রিয়া চালু করে রেখেছি। সেগুলো কেনার জন্য আমরা একটা বড় বরাদ্দ দিয়ে প্রকিউরমেন্ট অন করতেছি। সেগুলো শেষ হলে এই সমস্যাগুলো দূর হবে।
এদিকে, স্তন, জরায়ু ও প্রোস্টেট ক্যানসারের জন্য দেয়া হয় ব্রাকিথেরাপি। এর জন্য দেশে মাত্র ৮টি মেশিন থাকলেও নষ্ট তিনটি।