
অনলাইন ডেস্কঃ
চিকিৎসকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। রোববার (১৭ আগস্ট) রাতে নিজের ফেসবুক পেজে দুঃখ প্রকাশ করে পোস্ট দেন তিনি।
পোস্টে তিনি লেখেন, গতকাল (শনিবার) একটি অনুষ্ঠানে ডাক্তারদের সম্পর্কে আমি কিছু কথা বলেছিলাম। প্রথমে রোগী হিসেবে আমার ভালো অভিজ্ঞতার কথা বলেছি। তারপর অন্যদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে জানা কিছু সমালোচনার কথা বলেছি। সেখানে আমি বলেছি, এই সমালোচনাগুলো সব ডাক্তারদের জন্য প্রযোজ্য না। বলেছি, অনেক ডাক্তার আছেন ভালো, কিন্তু অন্য অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগও আছে। কিছু অভিযোগ স্টেটমেন্ট আকারে বলেছি, কিছু প্রশ্ন আকারে।
আইন উপদেষ্টা পোস্টে লিখেছেন, পত্রপত্রিকা যখন এগুলো ছাপিয়েছে তখন আমার সম্পূর্ণ বক্তব্য তুলে ধরেনি। ফলে কারো কাছে মনে হতে পারে যে, রোগীর কথা মন দিয়ে না শোনা, বেশি টেস্ট করতে দেয়া বা ওষুধ কোম্পানির সঙ্গে যোগযোগ- আমি এসব অভিযোগ ঢালাওভাবে সব ডাক্তারদের সম্পর্কে করেছি। কিন্তু এটি ঠিক নয়। আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে জানাচ্ছি, আমার এসব অভিযোগ একশ্রেণির ডাক্তারদের বিরুদ্ধে, সব ডাক্তারদের বিরুদ্ধে না।
তিনি পোস্টে আরও লেখেন, আমার বক্তব্য যেভাবে কিছু পত্রিকায় ছাপানো হয়েছে, মনে হতে পারে অভিযোগগুলো সবার উদ্দেশ্যে করা। প্রচণ্ড ত্যাগ, সততা আর দক্ষতা নিয়ে এদেশের যে বিপুল সংখ্যক ডাক্তার রোগীদের সেবা করেন, তাদের কাছে এটি গভীর মনোবেদনার কারণ হতে পারে। এমন ডাক্তার ভাই-বোনদের কাছে আমি এজন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। তবে কিছু কিছু ডাক্তারের (তারা সংখ্যায় কম হতে পারেন) ক্ষেত্রে এসব অভিযোগ সত্যি কিনা তা বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধও তাদের কাছে করছি।
এর আগে শনিবার (১৬ আগস্ট) এক অনুষ্ঠানে চিকিৎসকদের অনেকেই তাদের রোগীদের স্বার্থ না দেখে ওষুধ কোম্পানির স্বার্থ রক্ষা করেন বলে মন্তব্য করেন ড. আসিফ নজরুল।
রোগীদের নির্দিষ্ট কোম্পানির ওষুধ কিনতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠে আসে আইন উপদেষ্টার বক্তব্যে।
আসিফ নজরুল বলেন, বাংলাদেশের বড় বড় হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের জন্য ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করার নির্দিষ্ট সময় কেন বরাদ্দ থাকে, যা পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে দেখা যায় না।
আইন উপদেষ্টা প্রশ্ন তুলে বলেন, চিকিৎসকরা কি ওষুধ কোম্পানির দালাল বা মধ্যস্বত্বভোগী হিসেবে কাজ করছেন?
এই বক্তব্যের পর চিকিৎসকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, বিএনপিপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব), ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম ও জাতীয় নাগরিক পার্টি এই বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেয়।