
অনলাইন ডেস্ক:
খুলনা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও খুলনা-২ আসনে ধানের শীষে মনোনয়ন প্রত্যাশী শফিকুল আলম তুহিন বলেছেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) জনগণের ভোটে ক্ষমতায় গেলে খুলনাকে আধুনিক পর্যটন শিল্প নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের এই ঐতিহাসিক শহরকে ঘিরে একটি বৃহৎ পর্যটন অর্থনীতি দাঁড় করানোর পরিকল্পনা নিয়েছে বিএনপি। সুন্দরবনকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক মানের অবকাঠামো তৈরি, ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক স্থাপনাগুলোর সংরক্ষণ, আধুনিক হোটেল-রিসোর্ট নির্মাণ, নদীপথ ও সড়কপথে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার মাধ্যমে খুলনাকে দেশের অন্যতম পর্যটন হাবে রূপান্তর করা হবে।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) খুলনা প্রেসক্লাব ব্যাংকুয়েট হলে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এ্যাসোসিয়শন ও বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন ঐক্য পরিষদ খুলনা আয়োজিত আলোচনা ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেছেন, খুলনা শুধু সুন্দরবনের জন্যই নয় বরং ইতিহাস, ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম পর্যটন নগরীতে পরিণত হওয়ার বিশাল সম্ভাবনা রাখে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এ সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দেওয়া হবে।
আর পর্যটন নগরীতে পরিণত হলে খুলনা কেবল দেশের অর্থনীতিতেই নতুন মাত্রা যোগ করবে না বরং আন্তর্জাতিক মানচিত্রেও পর্যটন শিল্প নগরী হিসেবে পরিচিতি পাবে। শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বিএনপি নেতা শফিকুল আলম তুহিন বলেছেন, জাতি গড়ার কারিগরদের যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা দেওয়া ছাড়া দেশকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। শিক্ষক সমাজ আমাদের মেধার ভাণ্ডার, তাদের প্রাপ্য অধিকার নিশ্চিত করা প্রতিটি রাষ্ট্রের প্রধান দায়িত্ব। আজকের ছাত্ররাই আগামী দিনের রাষ্ট্রের চালিকাশক্তি। আর সেই ছাত্রদের আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব শিক্ষকদের। তাই শিক্ষকদের বঞ্চনা,
অবমূল্যায়ন বা অবহেলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তুহিন প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, আধুনিক প্রশিক্ষণ এবং সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিতে বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া হবে। তিনি অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, শিক্ষককে শ্রদ্ধা করা এবং তাদের সহযোগিতা করা প্রতিটি পরিবারের নৈতিক দায়িত্ব।
বেসরকারি বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়া এক ধরনের বৈষম্য ও শিক্ষার্থীদের প্রতি অন্যায়। শিক্ষা সকলের মৌলিক অধিকার, আর সেই অধিকারে কোনো বৈষম্য চলতে পারে না। একই পাঠ্যক্রমে পড়াশোনা করা সত্ত্বেও সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে, আর বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পারবে না-এটা শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্যের স্পষ্ট দৃষ্টান্ত। তুহিন অভিভাবকদের ক্ষোভের কথা উল্লেখ করে বলেন, অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের ভালো শিক্ষা দেওয়ার জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করান। এখন সেই শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন ও প্রতিভাকে সীমাবদ্ধ করা হলে তা তাদের মনোবল ভেঙে দেবে।
তিনি আরও প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈষম্য দূর করে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষার্থীদের সমান সুযোগ দেওয়া হবে।
বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী বেগম রেহানা ঈসার সভাপতিত্বে ও শিক্ষক নেতা কে এম এ জলিলের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা ও মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ও প্যানেল আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক রেজিস্ট্রার অধ্যক্ষ মাজহারুল হান্নান, বিশিষ্ট সাংবাদিক তরিকুল ইসলাম, বিশিষ্ট আইনজীবী ও নাগরিক নেতা এড. কুদরত-ই-খুদা, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা, হুমায়রা মুসলিমা বাবলী, সাংবাদিক মিজানুর রহমান মিলটন, শিক্ষক নেতা ইকবাল হাসান তুহিন, শ্যামল কুমার রায়, অতিকুর রহমান রুম্মান প্রমূখ।
আলোচনা শেষে প্রশ্নত্তোর পর্বে উপস্থিত শিক্ষকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বিএনপি নেতা শফিকুল আলম তুহিন। আলোচনা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।