
অনলাইন ডেস্কঃ
মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণের দাবিতে সাতক্ষীরার রেঞ্জের আওতাধীন গহীন সুন্দরবন থেকে বনদস্যুরা সাত জেলেকে অপহরণ করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সোমবার (২৫ আগস্ট) ও মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুই দফায় সুন্দরবনের দাড়গাং নদী সংলগ্ন খাল থেকে চারজন ও হোগল ডোকরা খাল এবং কালির খাল থেকে বাকী তিনজনকে অপহরণ করা হয়।
অপহৃত জেলেরা হলেন- সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পার্শেখালি এলাকার ছাকাত সরদারের ছেলে ইব্রাহীম সরদার, গফুর গাজীর ছেলে আব্দুল হাকিম, সুজন মুন্ডার ছেলে সুজিত মুন্ডা, কালিঞ্চি এলাকার বোরহান গাজীর ছেলে সাত্তার গজী, কেনা গাজীর ছেলে আকিনুর, কৈখালীর আইনাল গাজীর ছেলে বুলবুল গাজী ও রমজাননগরে তারানীপুর গ্রামের কাদের হোসেনর ছেলে আরাফাত হোসেন।
অপহরণের শিকার জেলেদের বরাত দিয়ে সুন্দরবন থেকে ফিরে আসা তাদের সহকর্মী আবুল হোসেন, আব্দুল আজিজসহ স্থানীয়রা জানান, তারা সুন্দরবনের দাড়গাং নদী সংলগ্ন খালে নৌকা ও জালদড়া মেরামতের কাজ করছিলেন। এ সময় ছয়/সাতজনের একটি বনদস্যু দল সোমবার ও মঙ্গলবার দুই দফা সেখানে হানা দেয়। এক পর্যায়ে তারা চারটি নৌকা থেকে চারজনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এছাড়া হোগল ডোকরা খাল ও কালির খাল থেকে বাকী তিনজনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
স্থানীয় অপর একটি সূত্রের দাবি, অপহৃত জেলেরা সুন্দরবনে ঢোকার প্রস্তুতি নয়, তারা অবৈধভাবে সুন্দরবনে প্রবেশ করে অবৈভাবে মাছ ও কাকড়া শিকার করছিল।
এদিকে, ৬০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে আসা জেলে সুজন মুন্ডা জানিয়েছেন, সুন্দরবনে মুন্না বাহিনী নামে নতুন একটি বনদস্যু বাহিনী এসব জেলেদের অপহরণ করেছে।
রমজাননগর ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ লালটু জানান, বনদস্যুরা জেলেদের মুক্তিপণ বাবদ মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা করে দাবি করেছে। তিনি আরো দাবি করে, বনদস্যুদের স্থানীয় সহযোগীরা ৩/৪ দিন আগে ২৫-৩০ হাজার টাকার কাঁচামাল বাজার সদয় করে সুন্দরবনে পাঠিয়েছে।
পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো. ফজলুল হক বলেন, বর্তমানে সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা চলছে। ১ সেপ্টেম্বর থেকে অনুমতি নিয়ে জেলেরা মাছ ধরতে পারবেন। তিনি দাবি করেন, বন-সংলগ্ন খালে নৌকা প্রস্তুতের সময় কয়েক জেলে অপহৃত হয়েছেন বলে তিনি শুনেছেন।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির মোল্লা বলেন, জেলে অপহরণের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। জলদস্যুদের সহযোগিতা কিংবা তাদের জন্য বাজার করে পাঠানোর প্রমাণ পাওয়া গেলে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।