
অনলাইন ডেস্কঃ
অধ্যাদেশ ও নির্বাহী আদেশে জুলাই সনদে যেসব সংস্কার করা যাবে, সেগুলো সরকার বাস্তবায়ন করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপের পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, কমিশন সনদ বাস্তবায়নে চারটি পদ্ধতি আলোচনায় দিয়েছেন। এ বিষয়ে লিখিত ও মৌখিক মতামত দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, সংবিধান সংশোধনী-সংক্রান্ত ১৯টি মৌলিক বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নে কী প্রক্রিয়া অনুসরণ করা যায়, সেই বিষয়ে মতামতের জন্য কমিশন বৈঠক ডেকেছিলেন। প্রত্যেকে প্রত্যেকের মতামত দিয়েছেন। সনদে যেসব সংস্কার রয়েছে, সেগুলো রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনী ইশতেহারে রাখবে ও সনদের অঙ্গীকারে সই করবে। যারাই নির্বাচিত হবে, তারা পরবর্তী দুবছরে সংশোধনীগুলো বাস্তবায়নের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সংসদ ছাড়া সংবিধান সংশোধনের পথ নেই। এখানে প্রশ্ন আসছে, সাংবিধানিক আদেশ জারির মাধ্যমে সংশোধনীগুলোকে এখনই কার্যকর করা যায় কিনা? কোনো কোনো রাজনৈতিক দল শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের উদাহরণ দিচ্ছেন। যেকোনো রকমের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সাংবিধানিক সংশোধনের বিষয়ে যেন আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিই।
তিনি বলেন, বিএনপি সনদে সইয়ের জন্য প্রস্তুত।
সনদে সই করলেও বিএনপি যেসব সংস্কারের নোট অব ডিসেন্ট (আপত্তি) দিয়েছে, ক্ষমতায় গেলে বাস্তবায়ন করবে কিনা, এমন প্রশ্নে সালাহউদ্দিন বলেন, বিএনপি মাত্র দুটি নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে। যদি ক্ষমতায় যাই, তবে যেভাবে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে, সেভাবেই বাস্তবায়ন করব।
বিএনপি পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠনের সিদ্ধান্তে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে। ওই সময় দলটি জানায়, যেসব সিদ্ধান্তে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়ন করবে না।
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নিজেই বলেছেন, যেসব সংস্কারে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য হবে, সেগুলো পরবর্তী সংসদে বাস্তবায়ন হবে। বিএনপি তার বক্তব্যকে সমর্থন করছে।
সংলাপে জামায়াতে ইসলামী বলেছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জনগণের অভিপ্রায়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারে আদেশ জারির ক্ষমতা রয়েছে। তবে সালাহউদ্দিনের অবস্থান বিপরীতে।
তিনি বলেন, সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আদালতের মতামতে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার সাংবিধানিক সরকার। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রয়েছে। সংবিধানের কোনো অংশ স্থগিত বা বাতিল হয়নি। তাই আদেশ জারির মাধ্যমে দ্বৈত সংবিধানে যেতে পারি না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে পদ্ধতিগত ত্রুটির কারণে আদালতে প্রশ্ন উঠতে পারে, আমরা যেন ভুল সিদ্ধান্ত না নিই।