
অনলাইন ডেস্ক:
বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সাম্প্রতিক বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেছেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন পূজামণ্ডপের আশপাশে মেলা-মদ-গাঁজার আড্ডা বসতে দেওয়া হবে না। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার এমন মন্তব্যকে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা উস্কে দেওয়ার অপচেষ্টা মাত্র। ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সাথে মাদক বা অশুভ কর্মকাণ্ডকে জড়িয়ে বক্তব্য দেওয়া কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বাংলাদেশের মানুষ সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। পূজামণ্ডপ শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের নয়, এটি দেশের সংস্কৃতি ও সম্প্রীতির প্রতীক। অথচ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দিয়ে সাম্প্রদায়িক বিভাজন সৃষ্টি করতে চাইছেন।
সাবেক ছাত্রনেতা হেলাল আরও বলেন, মাদক ও অপরাধ প্রতিরোধ করা সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু তা কোনো ধর্মীয় উৎসবের সাথে যুক্ত করা হলে জনগণের মধ্যে ভুল বার্তা যায়। আমরা দাবি করছি- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবিলম্বে এ ধরনের মন্তব্য প্রত্যাহার করে জনগণের কাছে ক্ষমা চাইবেন। ধর্মীয় উৎসবগুলোতে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করা আমাদের সবার দায়িত্ব। কোনো ধরনের বিভাজনমূলক বক্তব্য এই সম্প্রীতির পরিবেশকে নষ্ট করবে।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টায় দিঘলিয়ার মাঝিরগাতী এ কে এম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে উপজেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় এ নেতা আরো বলেন, গত ১৭ বছর ধরে জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে। কিন্তু জনগণ রক্ত দিয়ে সংগ্রাম করেছে একটি নতুন সরকার ও নতুন দিনের বাংলাদেশ গড়ার জন্য। তিনি বলেন, দশমীর দিনে প্রতিমা বিসর্জনের সময়সূচি নির্ধারণে পুরোহিত ও পঞ্জিকার মতামতই চূড়ান্ত হওয়া উচিত। এখানে অন্য কারো হস্তক্ষেপ গ্রহণযোগ্য নয়। যেমন ঈদের নামাজ চাঁদ দেখেই নির্ধারিত হয়। গত ৫০ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হিন্দুরাই সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতি হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের নজির স্থাপনের আহ্বান জানান। পাশাপাশি চাঁদাবাজি ও দখলবাজির বিরুদ্ধে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। হিন্দুরা বিএনপিকে ভোট দেয় না-এই ধারণাটি ভুল। বিএনপি হবে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানদের মিলনস্থল। আগামী নির্বাচনে গাজীরহাটের মানুষই তা প্রমাণ করবে। এছাড়া তিনি স্থানীয় নানা সমস্যা, বিশেষ করে পানীয় জলের সংকট প্রসঙ্গে নেতাকর্মীদের বয়োজ্যেষ্ঠ ও অভিজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের উদ্যোগ নিতে আহ্বান জানান।
গাজীরহাট ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি রামপ্রসাদ অধিকারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, যুগ্ম আহ্বায়ক খাঁন জুলফিকার আলী জুলু, অধ্যাপক মনিরুল হক বাবুল ও দিঘলিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. সাইফুর রহমান মিন্টু।
সভায় আরও বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোল্লা বিল্লাল হোসেন, সাবেক সহ-সভাপতি বাবু সুবোধ কুমার বিশ্বাস, ছাত্র-যুব মতুয়া মহাসংঘের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বাবু প্রসেনজিৎ সিকদার প্রমুখ। ভা সঞ্চালনা করেন গাজীরহাট ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মুকিত মীর ও সাধারণ সম্পাদক মো. বাদশা গাজী।