
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
রিকন্ডিশন্ড গাড়ি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকেলস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিল করে স্বাধীন নিরপেক্ষ কমিশনের অধীনে নির্বাচন চেয়ে আদালতে রিট করা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে সাত দিনের মধ্যে এটি নিষ্পত্তি করার জন্য আদালত নির্দেশ দিলেও তা মানছে না সংশ্লষ্টরা। উল্টো ‘স্বৈরাচারের দোসরদের’ পক্ষে অবস্থান নিয়ে তাদের বহাল রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ অবস্থায় আদালতের নির্দেশের কপি পাওয়ার পর আগামী ২৩ ডিসেম্বর দুপুরে এ বিষয়ে শুনানির আয়োজন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে শুনানি হবে বলে এক চিঠিতে জানিয়েছেন সিনিয়র সহকারী সচিব পলক কুমার মণ্ডল। ১১ ডিসেম্বর এই চিঠি ইস্যু করা হয়। যদিও তার আগে ২১ ডিসেম্বর বারবিডার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভুক্তভোগীরা মনে করছেন, এটি আদালতের প্রতি এক ধরনের অবমাননা।
গত ১ নভেম্বর বারভিডা’র বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিল করে স্বাধীন নিরপেক্ষ কমিশনের অধীনে নির্বাচন চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন সংগঠনটির সদস্য মোহাম্মাদ দিনুল ইসলাম। এই আবেদনের শুনানি শেষে গত ৯ ডিসেম্বর সাত দিনের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার জন্য সংশ্লিষ্টদের আদেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আকরাম হেসেন চৌধুরী ও কেএম রাশেদুজবজামান রাজার দ্বৈত বেঞ্চ। এ নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে বারভিডা’র সদস্যদের মধ্যে।
সংগঠনটির সদস্যদের অভিযোগ, আদালতের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বারভিডায় চলছে নির্বাচনের (২০২৪-২০২৬) প্রস্তুতি।নির্বাচনে স্বৈরাচারের দোসররা প্রার্থী হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনবিরোধী ও ছাত্র হত্যা মামলার আসামিও এতে প্রার্থী হয়েছেন।
বারভিডা’র সদস্যদের অভিযোগ, বেআইনিভাবে এই নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। এই কমিশন বাতিল করে বারভিডায় নতুন প্রশাসক নিয়োগ করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি তাদের। বর্তমান নির্বাচন কমিশন মেয়াদোত্তীর্ণ বলে জানান তারা।
বিষয়টি নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক, সচিব ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান বরাবর অন্তত পাঁচটি চিঠি দিয়েছেন বারভিডা’র সদস্যরা। এসব চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২২ সালের ২৯ জুন বারভিডা’র ২০২২-২০২৪ দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে কার্যনির্বাহী কমিটির প্রেসিডেন্ট, জেনারেল সেক্রেটারি, ভাইস প্রসিডেন্টসহ ১৩টি পদের পরিচালনা পরিষদসহ বাকি ১২ জন নির্বাচিত সদস্যের সমন্বয়ে মোট ২৫ জনের কমিটি গঠিত হয়। বাণিজ্য সংগঠন আইন, ২০২২ এর ধারা ১৪ এর বিধান অনুযায়ী এর মেয়াদ শেষ হয় গত ২৮ জুন। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সংগঠনের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে বেআইনিভাবে মেয়াদ বৃদ্ধি করে এবং সহকারী প্রশাসক নিয়োগ না করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে তিন দফায় মোট আট মাস মেয়াদ বর্ধিত করা হয়। যা বাণিজ্য সংগঠন আইনের পরিপন্থি।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ৫ আগস্ট দেশের পট পরিবর্তনের পূর্বে এফবিসিসিআইসহ বারভিডাকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করা হয়। এছাড়াও স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে বারভিডা’র নেতাদের বিরুদ্ধে। এসব অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে অভিযোগ করেও প্রতিকার পায়নি সাধারণ সদস্যরা।
বারভিডা’র সদস্যরা চিঠিতে উল্লেখ করেন, বিধিবহির্ভুত এসব কার্যকলাপ প্রতিরোধে একজন সহকারী প্রশাসক নিয়োগ জরুরি। বারভিডায় একজন সহকারী প্রশাসক নিয়োগ করে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির বেআইনিভাবে গঠিত নির্বাচন কমিশন বাতিল করার দাবি জানান তারা।