
অনলাইন ডেস্কঃ
আয় এবং ব্যয়ের হিসাব নিয়ে দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ গোলকধাঁধার মধ্যে। আয়ের চেয়ে অনেক ক্ষেত্রে ব্যয় বেশি হচ্ছে। যদিও সরকারি হিসাব বলছে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি কমছে।
সরকারি হিসেবে, গত জুন মাসে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি ৭ দশমিক তিন নয় শতাংশে দাঁড়ায়। আর খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি দাঁড়ায় ৯ দশমিক তিন সাত শতাংশ। তবে তথ্য যাই আসুক না কেন, বাজারে গিয়ে চাল-সবজি আর মাছ কিনতে ভোক্তাদের হাঁসফাঁস অবস্থা। গুনতে হচ্ছে বাড়তি অর্থ। অন্যদিকে, সেবামূল্যও অস্বস্তি বাড়াচ্ছে।
ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, এক সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম ৪ শতাংশ, পেঁয়াজের দাম ৯ শতাংশ বেড়েছে। আর সবজি ও মাছের দাম অসহনীয়।
অর্থনীতিবিদ ড. মুস্তফা কে মুজেরি বলেন, দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের মানুষ ভালো নেই। দেশের অর্থনীতি ভালো অবস্থায় আছে এমনটা বলা ঠিউক হবে না। বর্তমানে অর্থনীতি নিম্ন পর্যায়ে আবদ্ধ হয়ে আছে।
এদিকে, অনিশ্চয়তা আর অবকাঠামোগত নানা শঙ্কায় উৎপাদন বাড়ছে না। বিদ্যুৎ-জ্বালানি সংকট, ব্যাংকের উচ্চ সুদহার, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাসহ নানা কারণে অনেক উদ্যোক্তা হাতগুটিয়ে রয়েছেন। নানা ইস্যুতে গত জুন মাস জুড়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে আন্দোলন চলে। এতে রাজস্ব আয়ের স্বাভাবিক কর্মকান্ড বন্ধ হয়ে যায়। এতে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হয়।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কারোপের ফলে আমদানি-রফতানি নিতে নতুন শঙ্কা তৈরি হয়েছে। অন্যান্য প্রতিযোগী দেশের চেয়ে বেশি শুল্কহার নির্ধারণ করায় পোশাক খাতে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
বিজিএমইএ’র সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, জ্বালানি সমস্যার কারণে স্পিনিং, টেক্সটাইল ও ফেব্রিক প্রস্তুতকারীদের উৎপাদন ক্ষমতা কমেছে।
তবে প্রবাসী আয়ে ভর করে রিজার্ভ বাড়ছে। এক্ষেত্রে রিজার্ভের পতন ঠেকানো গেছে এমনটা বলা যায়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমদানি নিয়্ন্ত্রণ করে রিজার্ভ ধরে রাখার কৌশল কি টেকশই পন্থা? পাওনা বাদ দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ এখন ২৪ দশমিক চার পাঁচ বিলিয়ন ডলার। আর মোট রিজার্ভ ২৯ দশমিক পাঁচ দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
অপরদিকে দেশের অভ্যন্তরীণ আয় বাড়ছে না। গত অর্থবছরে রাজস্বে রেকর্ড পরিমাণ ঘাটতি রয়েছে। সংশোধিত বাজেটের চেয়েও কম রাজস্ব আদায় হয়েছে।
২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। কিন্তু আদায় হয়েছে ৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। সে হিসেবে মোট রাজস্ব ঘাটতি ৯৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
এনবিআরের সাবেক সদস্য ফরিদ উদ্দিন বলেন, গত ১০ বছর ধরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হচ্ছে না। আমাদের অর্থনীতিতে রাজস্ব আদায়ের সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু আদায়ের মেশিগুলোর আধুনিকায়ন করা হয়নি। পাশাপাশি লোকবলের সংকট রয়েছে।
অন্যদিকে দেশের পুঁজিবাজারেও স্বস্তি নেই। বিনিয়োগ করে নি:স্ব হয়েছেন অনেক বিনিয়োগকারী।