
বিনোদন ডেস্কঃ
আজ শুক্রবার বাদ জুমা বনানী কবরস্থানে বাবা সৈয়দ বজলুর রহমানের কবরে সমাহিত হবেন একুশে পদকজয়ী খ্যাতিমান রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী পাপিয়া সারোয়ার। এমনটাই জানিয়েছেন শিল্পীর স্বামী সারোয়ার এ আলম।
শিল্পীর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই ক্যানসারে ভুগছিলেন পাপিয়া সারোয়ার। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গেল বছর দিল্লিতেও নিয়ে যাওয়া হয়। দেশের একাধিক হাসপাতালে হয়েছে চিকিৎসা।
সবশেষ রাজধানীর তেজগাঁওয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন পাপিয়া সারোয়ার। বুধবার থেকেই অবস্থা জটিল হতে থাকে। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
শিল্পীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে পাপিয়া সারোয়ারের মরদেহ ঘণ্টা খানেকের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে রাখা হবে। যেখানে সবাই শিল্পীকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাবেন। এরপর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে ধানমন্ডি ঈদগাহ্ মাঠে। বাদ জুমা জানাজা শেষে শিল্পীর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে বনানী কবরস্থানে। সেখানেই হবে দাফন।
পাপিয়া সারোয়ারের জন্ম বরিশালে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ছিলেন। পরে ১৯৭৩ সালে ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্রসংগীতে ডিগ্রি নিতে ভারত যান।
তার আগে তিনি ১৯৬৬ সালে ছায়ানটে ওয়াহিদুল হক, সনজীদা খাতুন এবং জাহেদুর রহিমের কাছে এবং পরবর্তীতে বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে সংগীতদীক্ষা নেন।
দীর্ঘ সংগীত ক্যারিয়ারে রবীন্দ্রসংগীতের জন্য কোটি শ্রোতার ভালোবাসা পেয়েছেন। আধুনিক গানেও তিনি সফল। ‘নাই টেলিফোন নাইরে পিয়ন নাইরে টেলিগ্রাম’ গানটি তাকে আপামর বাংলা গানের শ্রোতাদের কাছে জনপ্রিয়তা দিয়েছে।
পাপিয়া সারোয়ারের দুই কন্যা জারা সারোয়ার ও জিশা সারোয়ার। এরমধ্যে বড়মেয়ে জারা থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে। পড়ান সেখানকার একটি স্থানীয় কলেজে। ছোট মেয়ে থাকেন কানাডায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সংকটাপন্ন মায়ের শারীরিক অবস্থার কথা শুনে বুধবার রাতেই দুই মেয়ে দেশে পৌঁছান।
পাপিয়া সারোয়ার ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি থেকে রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ লাভ করেন। ২০২১ সালে পেয়েছেন একুশে পদক।
সর্বশেষ চলতি বছর বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মবার্ষিকীতে চ্যানেল আইয়ের আয়োজনে `রবীন্দ্র মেলা‘য় কিংবদন্তী রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ারকে আজীবন সম্মাননায় ভূষিত করা হয়।