
বিশেষ প্রতিনিধি:
আওয়ামী লীগ আমলে প্রমোশন পাওয়া পিজি হাসপাতালের এক ডাক্তার ভোল পাল্টে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন এমনভাবে নিজেকে উপস্থাপন করে আবারও প্রমোশন বাগিয়ে নিয়েছেন। রাতারাতি ভোল পাল্টে এই ডাক্তার অতি সম্প্রতি অতিমাত্রায় বিপ্লবী বনে গেছেন। তার হম্বি তম্বিতে সাধারণ ডাক্তাররা একজোট হয়ে পিজি হাসপাতালের রেজিস্ট্রারকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তরুনী এক নারী ডাক্তারের সাথে তার বেপরোয়া পরকিয়া চলমান। তাদের প্রেম কাহিনী ডাক্তার- নার্স- অফিস কর্মকর্তা কর্মচারীদের মুখে মুখে। বিষয়টি পিজি হাসপাতালে একরকম ওপেন সিক্রেট।
জানা গেছে, এই ডাক্তারের নাম ওমর সাদিক খান। ২০০৩ সালে তিনি মেডিকেল অফিসার হিসাবে চাকুরীতে যোগ দেন। তখন বিএনপির শাসন আমল ছিলো। ডাক্তার ওমরের পিতা সরকারের একজন সচিব ছিলেন। সচিব কোটায় তিনি চাকরিতে যোগ দেন। বিএনপি ঘরানার এই ডাক্তার ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তিনি আওয়ামী লীগার বনে যান। আওয়ামী লীগের সাথে তাল মিলিয়ে চলেন।
সুত্রমতে, ময়মনসিংহ মেডিকেলে স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদের ফর্ম পুরন করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ডাক্তার হৃদয় রঞ্জন এর সহযোগিতায় ২০১৮ তে সহকারি অধ্যাপক হিসাবে পদন্নোতি পান। শেখ হাসিনার পতন পর্যন্ত তিনি স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের ব্যানারে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পরে বেশ কিছু দিন তিনি চুপচাপ ছিলেন।
পরে ২০০৩ সালে বিএনপি আমলে যোগদানের সময়কে রেফারেন্স হিসাবে রেখে নিজেকে আওয়ামী লীগের আমলে নির্যাতিত ও পদবঞ্চিত ধরে তার সাথে বৈষম্য করা হয়েছে এমন ভাবে নিজেকে আবারও উপস্থাপন করেন। তার এমন পাল্টে যাওয়াতে অফিস কলিগরা রীতিমতো বিস্মিত। নানামুখী সমালোচনা স্বত্বেও তিনি সহযোগী অধ্যাপক হিসাবে পদন্নোতি বাগিয়ে নেন। গত সতেরো বছর যারা পদবঞ্চিত ছিলেন, তাদের সাথেই তিনি পদন্নোতি বাগিয়ে নেন।
এই ব্যাপারে অভিযুক্ত ডাক্তার ওমরকে সেলফোনে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এই প্রতিবেদকের সাথে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। পদন্নোতির বিষয়ে তিনি পিজি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতে পরামর্শ দেন। পদন্নোতি ছাড়া আরও অন্য বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি কথা বলেন নি, কথা বলতে ইচ্ছুক নন এমন কথা বলে এক পর্যায়ে সেলফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
অন্য দিকে, পিজি হাসপাতালের রেজিস্ট্রার বলেছেন, আওয়ামী লীগের আমলে পদন্নোতি পাওয়া লোকজন এই আমলে পদন্নোতি পাবে না, এমন কথা লেখা আছে কি? আওয়ামী লীগের আমলে চাকুরী পাওয়া ব্যক্তিতো এখন পিজিতে ভিসি হয়েছেন। তাকে দেয়া ডাক্তারদের অভিযোগ পাওয়ার পরে কোন তদন্ত হয়েছে কিনা বা ডাক্তার ওমরের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সমুহের ব্যাপারে তার অফিশিয়াল বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি এমন অভিযোগ কবে পেয়েছেন, সেটা তার এই মুহুর্তে মনে পড়ছে না বলে জানিয়েছেন।
তবে, প্রাপ্ত সুত্র বলছে, ২০০৩-০৬ সালের মধ্যে নিয়োগপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার থেকে আওয়ামীলীগ আমলে সুবিধা নিয়ে ২০১৮ সালে সহকারি অধ্যাপক হওয়া ও ২০২৪ এর ৫ই আগস্টের পর সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পাওয়া একমাত্র সৌভাগ্যবান ব্যক্তি হচ্ছেন ডাক্তার ওমর সাদিক। তার এবারের পদন্নোতি কেউ মেনে নিতে পারেন নি। বিষয়টি নিয়ে পিজি হাসপাতালে মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিদ্যমান।
জানা গেছে, যারা সহকারী অধ্যাপক হিসেবে বিএনপি সরকারের সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরিতে জয়েন করেছিলো তারা আওয়ামিলীগ আমলে পদোন্নতি পেলেও সেটা ২/৩ বছর দেরি করে হয়েছিল।
পরবর্তী পর্ব- ডাক্তার ওমরের পরকিয়া: টক অব দ্য পিজি হাসপাতাল