
বিশেষ প্রতিনিধি:
আওয়ামী লীগ ও বর্তমান সরকারের আমলে পদন্নোতি নেয়া পিজি হাসপাতালের আলোচিত ও নানা কারনে বিতর্কিত ডাক্তার ওমর সাদিক খানের সাথে কন্যা সমতুল্য ডাক্তার ফারাহর পরকিয়া প্রেমের কারনে নিজ সংসারেই আগুন লেগেছে। স্বামী স্ত্রী কেউ কার সাথে কথা বলছেন না। তাদের দাম্পত্য কলহ নিজেদের বেড রুম পেরিয়ে পিজি হাসপাতাল ক্যাম্পাস পর্যন্ত ছড়িয়েছে।
জানা গেছে, তরুনী ডাক্তারের সাথে পরকিয়া ও অনৈতিক সম্পর্কের কারনে ডাক্তার ওমর সাদিকের সাথে স্ত্রী জেসমিনের বড় ধরনের দুরত্ব চলছে৷ সম্প্রতি ডাক্তারদের এক পিকনিকে এই দম্পতিকে এমনভাবে দেখেছেন সবাই। দিনভর ডাক্তার ওমর ও স্ত্রী জেসমিন একসাথে থাকলেও দুজন দুজনার সাথে কেউই কথা বলেন নি। এমন ঘটনা সবার দৃষ্টিগোচর হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, স্ত্রী জেসমিন পিকনিকে ছিলেন চুপচাপ। কোনরকম আনন্দ উচ্ছাস তার মধ্যে ছিলো না। একেবারেই ভিন্ন জগতের বাসিন্দা। স্বামীর পরকীয়ার কারণে তিনি দারুন ক্ষুদ্ধ। সন্তানদের সাথেই তিনি পিকনিকের দিন সময় কাটিয়েছেন। ওমরের সাথে ভুলেও কথা বলেন নি।
বেশ কিছুদিন ধরে ওমর দম্পতির সংসারে ফারাহর কারনে শীতল সম্পর্ক চলছে। এক ছাদের তলে থাকলেও দুজন এখন দুই ভুবনের বাসিন্দা। পিকনিকে স্ত্রী ডাক্তার জেসমিন যেতে চাননি। পুরান বন্ধু- বান্ধবের সাথে দেখা হবে শুধু এই জন্যই তিনি পিকনিকে যোগ দিয়েছিলেন। জানা গেছে, চাদা দেয়া সত্বেও আলোচিত পরকীয়া প্রেমের নায়িকা ডাঃ ফারাহ পিকনিকে যোগ দেননি।
সুত্রমতে, তিনটি কারনে ফারাহ পিকনিকে যোগ দেন নি। প্রথমত: ফারাহ- ওমরের পরকিয়া প্রেম এখন সবার মুখে মুখে, পিকনিকে গেলে সবাই তাদের ব্যাপারে উৎসাহী হবেন, ফলে একটা বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। দ্বিতীয়ত ফারাহর কাছে সংবাদ ছিলো, পিকনিকে ডাক্তার ওমরের স্ত্রী ডাক্তার জেসমিনও আসবেন, তিনি ফারাহকে সবার সামনে অপমান- অপদস্থ করতে পারেন, এমন আতংকে ফারাহ যোগ দেননি। তৃতীয়তঃ ফারাহর উপস্থিতিতে স্ত্রী জেসমিন ও অন্যদের সামনে ডাক্তার ওমর বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে যাবেন, এই জন্য ওমর নিজেও জেসমিনকে পিকনিকে না আসবার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। ফলে জেসমিন পিকনিকে আসেন নি।
জানা গেছে, অবিবাহিতা ডাক্তার ফারাহকে কেন্দ্র করে ডাক্তার ওমর দম্পতির সংসারে এখন সুনামি বইছে। তাদের পরকিয়ার কারনে ডাক্তার ওমর ও ডাক্তার জেসমিনের সংসার ভাংগনের মুখে। কোন রকমে সংসার টিকে আছে। খুলনার মেয়ে ফারাহ বরাবরই উচ্চভিলাসী। ফারাহর বোনও একজন ডাক্তার। বোনের প্রতি ঈর্ষা থেকেই তিনি ডাক্তার ওমরের প্রতি ঝুকে পড়েন। জেসমিনের বোনও আগে ডাক্তার ওমরের টিমে ডাক্তার হিসাবে কাজ করেছেন।
সুত্র বলছে, ডাক্তার ওমর ও ডাক্তার ফারাহর সাথে পরকিয়া ও অনৈতিক সম্পর্ক এখন ওপেন সিক্রেট। ওমর সাদিক বাবা বয়সী হওয়ায় পিজির অভ্যন্তরে বা পরিচিত মহলে তিনি এখন সুগার ড্যাড হিসাবে পরিচিত। ওটির নাম করে তারা বিভিন্ন সময়ে উত্তরার হাই কেয়ার হাসপাতালে এতোদিন যাওয়া আসা করেছেন। সেখানে মাস তিনেক আগে একজন রুগী মারা যাবার পরে আলোচিত এই পরকিয়া জুটির সেখানে যাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে৷
সুত্র বলছে, নতুন করে তারা রাজধানীর মহাখালীর মেট্রোপলিটন হাসপাতালে এখন আস্তানা গেড়েছেন। ওটির নাম করে রাত বিরাতে মেট্রোপলিটনের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন। দুজনার নাম্বার ট্রাক করে তাদের একত্রে অবস্থানের একাধিক তথ্য উপাত্ত এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। ট্রাকিংয়ে ডিউটির বাইরে এমনকি মধ্য রাতেও তাদেরকে উত্তরা- হাতিরঝিল কিংবা হাতিরপুলে একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে দেখা গেছে।
জানা তাদের প্রেম কাহিনী এখন তুঙ্গে। ডাক্তার- নার্স সহ কর্মরত অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে তাদের এই পরকিয়া প্রেম কাহিনী সমানে আলোচনা চলমান। ওমর সাদিক এই বিষয় নিয়ে কথা বলতে চানি নি। দফায় দফায় এই প্রতিবেদক তার সাথে কথা বলে বক্তব্য চাইলেও তিনি কথা বলতে রাজি হন নি। ফারাহ কথা বলতে চেয়া এই প্রতিবেদককে হোয়াটসঅ্যাপে ব্যাটিংয়ে আসতে বলেন। এই প্রতিবেদক চ্যাটিংয়ে প্রস্ন পাঠালেও তিনি পরবর্তীতে আর হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলেন নি।
ফারাহর মা অবশ্য প্রথম সময়কে বলেছেন, তার মেয়েটা একটি বাচ্চা। ওমর সাদিক বয়স্ক মানুষ। তার ঘরে সুন্দরী স্ত্রী, দুই ছেলে মেয়ে আছে। তার মেয়ের সাথে ডাক্তার ওমরের পিতা কন্যার সম্পর্ক। ফারাহ পরকিয়াতে জড়াতে পারেন না, এমন দাবি তার। ফারাহর মায়ের বক্তব্য ওমর সাদিক ও ফারাহর পরিচিত মহলে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। কেউই ফারাহর মায়ের কথা বিশ্বাস করেন নি।
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালে ডাক্তার ওমর মেডিকেল অফিসার হিসাবে চাকুরীতে যোগ দেন। তখন বিএনপির শাসন আমল ছিলো। ডাক্তার ওমরের পিতা সরকারের একজন সচিব ছিলেন। সচিব কোটায় তিনি চাকরিতে যোগ দেন। বিএনপি ঘরানার এই ডাক্তার ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে রাতারাতি তিনি আওয়ামী লীগার বনে যান।
আওয়ামী লীগের সাথে তাল মিলিয়ে চলে ২০১৮ তে সহকারি অধ্যাপক হিসাবে পদন্নোতি পান। শেখ হাসিনার পতন পর্যন্ত তিনি স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের ব্যানারে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পরে ২০০৩ সালে বিএনপি আমলে যোগদানের সময়কে রেফারেন্স হিসাবে রেখে নিজেকে আওয়ামী লীগের আমলে নির্যাতিত ও পদবঞ্চিত ধরে তার সাথে বৈষম্য করা হয়েছে এমন ভাবে নিজেকে আবারও উপস্থাপন করে পদন্নোতি বাগিয়ে নেন।
এই ঘটনা ডাক্তারদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া বিদ্যমনা। কেউই বিষয়টি ভালোভাবে মেনে নিতে পারেন নি। ডাক্তাররা ইতিমধ্যেই জাতীয় নাগরিক কমিটির সাথে যোগাযোগ করে তাদের ক্ষোভের কথা, পদন্নোতি নিয়ে বৈষম্যের কথা জানিয়েছেন। আওয়ামী লীগের দোসর হিসাবে গত সরকারের সুবিধাভোগী এই সরকার আমলেও কিভাবে পদন্নোতি পায়, সেই প্রশ্নই এখন সবার মুখে মুখে।
প্রাপ্ত সুত্র বলছে, ২০০৩-০৬ সালের মধ্যে নিয়োগপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার থেকে আওয়ামীলীগ আমলে সুবিধা নিয়ে ২০১৮ সালে সহকারি অধ্যাপক হওয়া ও ২০২৪ এর ৫ই আগস্টের পর সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পাওয়া একমাত্র সৌভাগ্যবান ব্যক্তি হচ্ছেন ডাক্তার ওমর সাদিক। বিষয়টি একেবারেই নজিরবিহীন। বর্তমান সময়ে দারুন আলোচিত ঘটনা।
পরবর্তী পর্ব: ডাক্তার ওমর ও ডাক্তার ফারাহর ভুলের কারনে দুই দুটি অমুল্য জীবন হারিয়ে গেছে, ভুক্তভোগীরা মামলা করতে ইচ্ছুক