
বিশেষ প্রতিনিধি:
আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি বিএনপির বর্ধিত সভা হতে যাচ্ছে। দীর্ঘ সাত বছর পরে দলের এই বর্ধিত সভা হতে যাচ্ছে। জানা গেছে, এই সভায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে সভাপতিত্ব করবেন। লন্ডনে অবস্থানরত বেগম জিয়া সুস্থ থাকলে শুভেচ্ছা বক্তব্য দিতে পারেন। বর্ধিত সভা সামনে রেখে দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে আহ্বায়ক করে একটি প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সুত্র বলছে, দলের কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের বিভিন্ন পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীরাও আসন্ন বর্ধিত সভায় অংশ নেবেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বর্ধিত সভায় তৃণমূল নেতাদের কথা শুনবেন। একইসঙ্গে তিনি আগামী দিনে দলের সাংগঠনিক তৎপরতা ইসু্যতে মতামত, পরামর্শ এবং দিক নির্দেশনা তুলে ধরবেন।
সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, উপদষ্টোমণ্ডলী, জেলা, মহানগর, থানা, উপজেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সদস্য এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক অংশ নেবেন। বর্ধিত সভার স্থান এখনও ঠিক করা হয় নি।
সুত্রমতে, দীর্ঘদিন বিএনপির জাতীয় কাউন্সিল হচ্ছে না, তবে এবারের বর্ধিত সভা কাউন্সিলেরও না। দলের নেতারা জানিয়েছেন, ২৭ ফেব্রুয়ারির বর্ধিত সভা উপলক্ষ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি সারা দেশের মূল দলসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর শীর্ষনেতা এই সভায় মতামত তুলে ধরবেন।
দলীয় সূত্র জানায়, বিগত দেড় দশকের বেশি সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা নানাভাবে আওয়ামী লীগের হাতে নির্যাতিত, নিপীড়িত হয়েছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি তৃণমূল পর্যায়ে অসংখ্য নেতাকর্মীকে হত্যা, গুম ও খুন করা হয়েছে। অনেকেই পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। মামলা-হামলায় জর্জরিত হয়েও দলের নেতাকর্মীরা মনোবল হারাননি। যে কারণে বিগত সময়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন অব্যাহত রেখেছিলেন। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে রাজপথে থেকে নেতাকর্মীরা স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে দলের বির্ধিত সভায় তৃণমূল নেতাদের সুখ, দুঃখের পাশাপাশি প্রত্যাশার কথা শুনতে চান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। একইভাবে সাংগঠনিক পরিধিসহ সার্বিক বিষয়ে মতামত নেবেন তিনি।
বর্ধিত সভা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে আহ্বায়ক করে ২৭ সদস্য বিশষ্টি বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিতে সদস্য হিসাবে রয়েছেন, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন-নবী খান সোহেল, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, আব্দুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, কাজী ছাইয়েদুল আলম বাবুল, মাহবুবের রহমান শামীম, অ্যাডভোকেট সৈয়দ শাহীন শওকত, আসাদুল হাবিব দুলু, জিকে গউছ, অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, শরিফুল আলম, শামা ওবায়েদ, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, আজিজুল বারী হেলাল, এবিএম মোশাররফ হোসেন, রকিবুল ইসলাম বকুল, মীর সরাফত আলী সপু, প্রফেসর ড. মোর্শেদ হাসান খান, ডা. রফিকুল ইসলাম, রফিকুল আলম মজনু ও আমিনুল হক।
এছাড়াও ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে শহীদ উদ্দীন চেৌধুরী এ্যানিকে, অভ্যর্থনা কমিটির আহ্বায়ক হাবিব-উন-নবী খান সোহেল ও মো. আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী, আপ্যায়ন কমিটির আহ্বায়ক এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, শৃঙ্খলা কমিটির আহ্বায়ক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মিডিয়া কমিটির আহ্বায়ক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, চিকিত্সা সেবা কমিটির আহ্বায়ক হিসাবে ডা. রফিকুল ইসলামকে রাখা হয়েছে।
দীর্ঘ সাত বছর পর বিএনপির এই বর্ধিত সভা হচ্ছে। এর আগে ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর একটি হোটেলে নির্বাহী কমিটির বর্ধিত সভা করেছিল বিএনপি। তখন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ওই সভায় সভাপতিত্ব করেছিলেন। এবারের বর্ধিত সভায় সুস্থ থাকলে লন্ডন থেকে তিনি শুভেচ্ছা বক্তব্য দিতে পারেন।