
বিশেষ প্রতিনিধি:
চব্বিশ ফেব্রুয়ারি খুলনা মহানগর বিএনপির সম্মেলন সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীরা সোমবারে উৎসব মুখর পরিবেশে মনোনয়ন ফর্ম কিনেছেন। জানা গেছে, সভাপতি- সাধারণ সম্পাদক পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের জন্য মনোনয়ন ফর্মের দাম ছিলো ৫০ হাজার টাকা।
অন্যদিকে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে প্রার্থীদের জন্য মনোনয়ন ফর্মের দাম ছিলো ৩০ হাজার টাকা। সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী সাবেক যুবদল নেতা নাজমুল হুদা চৌধুরী সাগর প্রথম মনোনয়ন ফর্ম কিনেন, এর পরপরই সভাপতি প্রার্থী, বর্তমান মহানগর কমিটির আহবায়ক এডভোকেট শফিকুল আলম মনা ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী, বর্তমান কমিটির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন নিজ নিজ সমর্থকদের নিয়ে ফর্ম কিনেন।
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন অন লাইন নিউজ পোর্টাল প্রথম সময় নিউজ ডটকমকে সোমবার সকালে জানান, ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর আহ্বায়ক কমিটি গঠন হয়েছিলো। অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি নেতা-কর্মীদের সার্বিক সহযোগিতায় আমরা সফলভাবে সম্মেলন করতে যাচ্ছি। ভ্যানু নির্ধারণ হয়েছে সার্কিট হাউজ মাঠ। সাবেক ছাত্রনেতা ও সাবেক যুবদল নেতা তুহিন আরও জানান, সম্মেলন হবে বর্ণাঢ্য ও জাক জমকপূর্ণ।
এবারের খুলনা মহানগর বিএনপি’র দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিলে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথি থাকবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিশেষ অতিথি থাকবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ ছাড়া দলের চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা, ডাকসুর সাবেক ভিপি, সাবেক মন্ত্রী আমান উল্লাহ আমান, খুলনা বিএনপির দুই অভিভাবক, জনপ্রিয় সাবেক দুই ছাত্র নেতা আজিজুল বারি হেলান ও রকিবুল ইসলাম বকুল বিশেষ অতিথি থাকবেন।
এদিকে পুর্ব ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী সোমবার রাত সাড়ে ৯টার মধ্যেই যারা মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন তারা জমা দিয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে যাচাই-বাছাই ও বিকেলে প্রত্যাহার করা যাবে। একই দিন সন্ধ্যায় চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন।
তুহিন আরও জানান, মূলত দলের ৫টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক পদ ছাড়াও সাংগঠনিক সম্পাদকের তিনটি পদে নগরীর ৫ থানার ৫০৫ জন কাউন্সিলর ভোট প্রদান করবেন। নির্বাচনে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা ব্যবহার করা হবে। ইতিমধ্যে ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি।
নেতৃত্ব নির্বাচনে ভোটদান পদ্ধতি নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে হবে এমন দাবি তুহিনের। এছাড়া সম্মেলন সফল করতে ২১টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ভোটার তালিকায় আওয়ামী লীগের কেউ কেউ আছেন নানা মহল থেকে উথ্যাপিত এমন অভিযোগের জবাবে তুহিন জানান, এমন গুজব ছড়ানো হচ্ছে, যার সাথে বাস্তবতার কোন মিল নেই। আমরা নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ড- থানা কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে সম্মেলন করতে যাচ্ছি, এটাই বসস্তবতা যা অনেকের গাত্রদাহের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। তারাই এসব অপপ্রচার করছে।
বর্তমান কমিটির নেতারা আবারও নেতৃত্বে আসবেন নাকি নতুন নেতৃত্বে আসবে সেটিই এখন খুলনা বিএনপিতে আলোচিত বিষয়। প্রার্থী হিসাবে দলের নেতারা নিজ নিজ ফোরামে তৎপর থাকার পাশাপাশি কেন্দ্রেও যে যার চ্যানেলে লবিং করছেন। তবে তুহিন বলেছেন, ভোটের মাধ্যমে খুলনাতে এবার নেতৃত্ব নির্বাচন হবে, যা সারা বাংলাদেশে বিএনপির রাজনীতিতে খুলনা একটি মডেল হিসেবে কাজ করবে।
এর আগে সম্মেলনে প্রার্থী হবেন কিনা এখনও সিদ্ধান্ত নেনটি এমনটি জানিয়ে এডভোকেট শফিকুল আলম মনা এই প্রতিবেদককে বক্তব্য দিলেও মনোনয়ন পত্র কেনার মধ্য দিয়ে মনা প্রার্থী হিসাবে এখন দৃশ্যমান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নেতা প্রথম সময়কে বলেছেন, দলের হাইকমান্ড থেকে মনা গ্রীন সিগনাল পেয়েছেন এবং মনেোনয়ন পত্র কিনেছেন।সভাপতি হিসাবে মনোনয়ন আরও কিনেছেন সাবেক ছাত্রদল নেতা তরিকুল ইসলাম জহির ও সাহাজি কামাল টিপু।
সুত্র বলছে, দল থেকে অনেকটা অভিমানে কিছুটা দূরে সরে থাকা সুন্দরবন কলেজের সাবেক ভিপি জহির অতি সম্প্রতি বকুলের আহবানে দলের বিশেষ সভায় যোগ দেন এবং সভাপতি প্রার্থী হিসাবে নতুন করে লাইম লাইটে আসেন।
সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক প্রার্থী এমন দুজন নেতা এই প্রতিবেককে বলেছেন, প্রার্থী যেই হোক, যে পদে হোক সব কিছুই নির্ভর করছে হেলাল- বকুল ও পাপুলের উপরে। তারা যেভাবে চাইবেন, সেই ভাবেই নতুন নেতৃত্ব আসবেন।
উল্লেখ্য, আসন্ন খুলনা মহানগর বিএনপি’র দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিলে সোমবারে সভাপতি পদে ৩ জন, সাধারণ সম্পাদক পদে ৩ জন ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ৬ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পুর্বনির্ধারিত তফসিল মোতাবেক সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত সাধারণ নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে এসব মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন প্রার্থীরা।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক এড. মাসুদ হোসেন রনি জানান, সভাপতি পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন এড. এস এম শফিকুল আলম মনা, তারিকুল ইসলাম জহির, সাহাজী কামাল টিপু। সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন শফিকুল আলম তুহিন, কাজী মাহমুদ আলী ও নাজমুল হুদা চৌধুরী সাগর এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মনোনয়ন কিনেছেন সাবেক যুবদল নেতা ও বর্তমান মহানগর কমিটির যুগ্ন আহবায়ক শের আলম সান্টু, মাসুদ পারভেজ বাবু, মাহবুব হাসান পিয়ারু, হাসানুর রশিদ চৌধুরী মিরাজ, তারিকুল ইসলাম তারিক ও শেখ সাদী।