
অনলাইন ডেস্ক:
বহুল আলোচিত খুলনা কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্ষ ও বর্তমানে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষক ড, মো: শহিদুর রহমান খানকে ধর্ষন মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরন করেছে আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি গত ১৩ মার্চ তার সাবেক পিএ নারী কর্মকর্তার ধর্ষন মামলায় আত্নসমার্পন করে জামিনের আবেদন করেছিলেন। আদালতের বিচারক মো: আব্দুস সালাম দুপুরে জামিনের শুনানী শুনে বিকালে এই জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ দেন। বিষয়টি আদালতের সরকারী কৌশলী এড ফরিদ আহমেদ এবং সাবেক উপাচার্ষের কৌশলী এড মোমরেজুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুকৃবির) প্রথম উপচার্য মো. শহীদুর রহমান খানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন তাঁর ব্যক্তিগত নারী সহকারী। গত ১৩ মার্চ বাদী নিজে আদালতে হাজির হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এই মামলাটি করেছিলেন। এই মামলায় দুই নং আসামী খুলনা কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয়ের বর্তমান রেজিষ্টার খন্দকার মাজহারুল ইসলাম। এই মামলায় তিনি গতকাল আদালতে আত্নসমার্পন করে জামিন লাভ করে ছিলেন।
গত ১৩ মার্চ বাদী খুলনা কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয়ের নারী কর্মকর্তা আদালতে দালিলিক প্রমানাদি দিয়ে মামলার আবদেন জানোলে বিচারক মো. আব্দুস সালাম মামলাটি গ্রহণ করে সোনাডাঙ্গা থানাকে এজাহার হিসেবে গণ্য করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই মামলায় দুই নম্বর আসামি করা হয়ে ছিল বর্তমান রেজিস্ট্রার খন্দকার মাজাহারুল আনোয়ারকে।
ভিকটিমের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সুলতানা রহমান শিল্পী জানান, ভিকটিম বা মামলার বাদী খুকৃবির কন্ট্রোলার স্টোর কিপার হিসেবে ২০২১ সালে কর্মরত ছিলেন। অপরদিকে সেই সময় ভিসি নিজে কন্ট্রোলার বোর্ডের প্রধান এবং ২ নং আসামি ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার তাঁকে ভিসি স্যারে খাবারের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি বিভিন্ন সময় খাবার পৌঁছে দিতে গেলে ভিসি কুপ্রস্তাব দেন। বিষয়টি ভিকটিম ২ নং আসামিকে জানান।
একপর্যায়ে ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ২ নং আসামির সহযোগিতায় ভিসি তাঁকে ধর্ষণ করেন। পরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভিকটিমকে তাঁর স্বামীকে তালাক দিতে বলেন। বিষয়টি ১০০ টাকা স্ট্যাম্পে লিখিত হওয়ার পর ভিকটিম তাঁর স্বামীকে তালাক দেন। পরে বিয়ে না করেও বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি এবং স্বামী-স্ত্রীর মতো বসবাস করেন। এরপর তাঁকে পদোন্নতি দিয়ে উপচার্যের ব্যক্তিগত সহকারী করা হয়।
ভিকটিমের আইনজীবী আরও জানান, ২০২২ সালে ৩০ নভেম্বর থেকে ভিসি ভিকটিমের সঙ্গে সব যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।
ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রহমান খান ২০১৮ সালে ১১ সেপ্টেম্বর প্রথম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন তদন্ত করে এই উপাচার্যের বিরুদ্ধে স্ত্রী, ছেলেমেয়েসহ পরিবারের নয় সদস্যকে নিয়োগ দেওয়ার প্রমাণ পাওয়ায় তাঁকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।