
অনলাইন ডেস্কঃ
বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল বলেছেন, প্রতি বছর চন্দ্র আষাঢ়ের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা শুরু হয়। পুরীর জগন্নাথ মন্দির থেকে এই রথযাত্রার প্রচলন হয়। শাস্ত্র মতে মানুষের দেহ হচ্ছে রথ এবং ঈশ্বর হচ্ছেন তার সারথি। পরমেশ্বর ভগবান শ্রীজগন্নাথকে দর্শন করলে এই জড় জগতের জন্ম মৃত্যুর আবদ্ধতা ও মায়া মমতা থেকে মুক্তি লাভ সম্ভব। এই বিশ্বাসকে ধারণ করে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা রথযাত্রা উৎসব উদযাপন করে আসছে। রথযাত্রা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে অন্যতম ধর্মীয় উৎসব এবং বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। শুক্রবার (২৭ জুন) বিকাল ৩টায় দৌলতপুর পাবলা বণিকপাড়ায় শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব-১৪৩২ বঙ্গাব্দ ধর্মীয় শোভাযাত্রা উদ্বোধন কালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, জগন্নাথদেব হলেন জগতের নাথ বা অধীশ্বর। জগৎ হচ্ছে বিশ্ব আর নাথ হচ্ছেন ঈশ্বর। তাই জগন্নাথ হচ্ছেন জগতের ঈশ্বর। তার অনুগ্রহ পেলে মানুষের মুক্তিলাভ হয়। জীবরূপে তাকে আর জন্ম নিতে হয় না। এই বিশ্বাস থেকেই রথের উপর জগন্নাথ দেবের প্রতিমূর্তি রেখে রথ নিয়ে যাত্রা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর মুক্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। বাংলাদেশে মুক্ত পরিবশে সবাই যার যার ধর্ম পালন করছে। গত ১৬ বছর ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনে স্বাধীনতা ছিলো না। গণতন্ত্রের পক্ষে কেউ কোনো কথা বলতে গেলে, তাকে বর্বোচিত আক্রমণ সইতে হয়েছে। পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্টজনদের দিয়ে বাংলাদেশকে সন্ত্রাসের রাজত্ব বানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ছাত্রজনতা সেটি করতে দেয়নি। প্রতিহত করেছে। ধর্মীয় সংখ্যালঘু মানেই নিজেকে দুর্বল ভাবার কোনো কারণ নেই। এই বাংলাদেশ আপনার-আমার, আমাদের সবার। বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিক সব ক্ষেত্রে সমান অধিকার ভোগ করবে-এটাই বিএনপির নীতি, এটাই বিএনপির রাজনীতি। আমাদের দল বিএনপি বিশ্বাস করে, দল-মত-ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার সবার। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মহানগর বিএনপির সভাপতি এড. শফিকুল আলম মনা বলেন, বিগত অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক সরকার নিজেদের শাসন-শোষণ থেকে জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে বিভিন্ন সময়ে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি তৈরির অপচেষ্টা চালিয়েছে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারা এখনো সে চেষ্টা চালাচ্ছে।
মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন বলেন, সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগুরু, দল-মত, ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্র ও সমাজে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই।
এসময় খালিশপুর ও দৌলতপুর এবং খানজাহান আলী থানার বিএনপি’র ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ধর্মীয় শোভাযাত্রাটি দৌলতপুর পাবলা বণিকপাড়া থেকে শুরু হয়ে দৌলতপুর আকাক্সক্ষা টাওয়ার হয়ে বিএল কলেজের পাশ দিয়ে পুনরায় পাবলা বনিকপাড়ায় যেয়ে শেষ হয়। হিন্দু ধর্মের সকল নারী পুরুষ ও শিশু এই শোভাযাত্রা অংশগ্রহণ করেন।