
অনলাইন ডেস্কঃ
খুলনার উত্তপ্ত রাজপথে যখন ভয়, শঙ্কা, আর দমন-পীড়নের ছায়া।আমরা ১৫-৪০ জন ছাত্র শিববাড়ির দিকে মিছিল নিয়ে এগিয়ে যাই।
নেতৃত্বে ছিলাম আমি (মহরম হাসান মাহিম), নাজমুল, মুনতাসির,তাহশিক ভাই এবং আরও কয়েকজন নির্ভীক সহযোদ্ধা।
চারপাশে ছিল পুলিশের ব্যারিকেড, Rab, ডিবি,ফ্যাসিস্ট সরকারের গোটা যন্ত্র তখন শিববাড়িতে মোতায়েন।
অনেকেই নাম ম্যানশনের ভিতর সীমাবদ্ধ থাকতে চাইলেও, ইতিহাস তো ঘরের ভেতর লেখা হয় না। ইতিহাস রচিত হয় রাজপথে, মুখোমুখি দাঁড়িয়ে।
সেদিনের ঘটনা শুরু হয় নাজমুল ভাইয়ের ফোন দিয়ে,মাহিম, কই তুমি?
আমি বলি, আমি অটোতে আসি,ময়লাপোতা। তিনি বলেন, আসতে পাঁচ মিনিট লাগবে।
সেই সময় সাব্বির জানালো সে ইতিমধ্যেই শিববাড়ি আছে। এরপর তারা একত্রিত হয়। আমি নিউমার্কেট ও শিববাড়ির মাঝখানের মিয়াবাগ রোডে, “Sanves by Tonny”-এর সামনে এসে দাঁড়াই।
মুহূর্তেই যোগাযোগ হয় মুনতাসির ভাইয়ের সঙ্গে,তখন জানান কেউ শিববাড়ি ঢুকতে পারছে না। আমি বলি, এখানে কিছু ছাত্র এসেছে, ভাই এখানে আসেন।
পরবর্তীতে ১৫-২০ জনের একটি মিছিলের প্রস্তুতি হয়।
আমি বলি, ভাই, ঢুকতে হবে।স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে নাজমুল ভাইয়ের কণ্ঠ। মুনতাসির ভাই ফোনে নিশ্চিত হতে থাকেন পরিস্থিতির।সেই সাহসিকতা থেকেই শুরু হয় শিববাড়ি অভিযান।
প্রথম ঢোকার সময় আমাদের তুলনায় পুলিশ ছিল অনেক বেশি।তবুও আমরা পিছপা হইনি। ৩০ মিনিটের মধ্যেই আমাদের পাশে দাঁড়িয়ে যায় শত শত ছাত্র-ছাত্রী একসময় সেই সংখ্যাটা পৌঁছে যায় ১০০৪০০-রও বেশি।
দুপুরের আগে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়মান আহাদ ভাই, হেলাল ভাই, আল শাহরিয়ার ভাই এসে উপস্থিত হন।তাদের আগমন আমাদের চেতনায় নতুন মাত্রা যোগ করে।
হেলাল ভাই, আহাদ ভাই কথা বলেন, আমাদের মনোবল আরও দৃঢ় হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হল বন্ধ থাকায় সর্বোচ্চ ১৫-২০ জন ছাত্র নিয়ে তারা এসেছিলেন। আয়মান আহাদ ভাই ক্রুশিয়াল মুভমেন্টে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সবাই যখন ফ্রেমবাজি করেছে,তখন নিভৃতে কাজ করেছেন। আমার মনে আছে,৩১ জুলাই থানায় আমাদের নিয়ে শিক্ষকদের সাথে আহাদ ভাই গিয়েছিলেন। আমরা সেদিন অন্যকাউকে পায়নি। এ জনপদের একজন নির্ভিক যোদ্ধা।
লেখক: মহররম হোসেন মহিমের ওয়াল থেকে,
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিনিয়র জয়েন কনভেনর, খুলনা জেলা শাখা
বিশেষ বিশেষ দ্রষ্টব্য : এই লেখা লেখকের একান্তই নিজস্ব