
অনলাইন ডেস্ক:
৭১ এর মহান মুক্তিযোদ্ধা ও গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় শহীদ জিয়া শির্ষক আলোচনা সভা শনিবার সাড়ে ১২ টায় খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাঙ্কুয়েট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। খুলনা মহানগর ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা দলের যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি শেখ আলমগীর হেসেন এতে সভাপতিত্ব করেন।
এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম, প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, বিএনপি খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি এ্যাড. এসএম শফিকুল আলম মনা, খুলনা জেলা বিএনপির আহবায়ক,মোঃ মনিরুজ্জামান মন্টু, খুলনা মহানগর বিএনপির সাধারন সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন সহ প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক মন্ত্রী মেজর অব: হাফিজউদ্দিন বলেন, যে গণতন্ত্রের জন্য বাংলাদেশে স্বাধীনতার আগে- পরে এই পর্যন্ত ৯০, ২৪, ৬৯ এ গনঅভ্যুত্থান হয়েছে সেই গণতন্ত্র এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে যে স্বাধীনতা আমরা অর্জন করেছিলাম সেই স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন হয়ে যাবে। স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম, করতে হবে ২৪ এ ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের পরে আমরা সবাই প্রত্যাশা করেছিলাম বাংলাদেশের গনতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু হবে। কিন্তু গনতন্ত্র এখন এমন পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে যে রক্ষা করাই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন আমরা মুক্তিযোদ্ধারা এই মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশ থেকে আমাদের নেতা তারেক রহমান এবং ডক্টর ইউনুস কে ধন্যবাদ জানাতে চাই যে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন একটা স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে অর্থাৎ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যে বাতাস সেটা বইতে শুরু করেছে।
তিনি বলেন, লক্ষ্য করছি আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে যে ফ্যাসিবাদ মাফিয়াকে বিতাড়িত করলাম- পরাস্ত করলাম, কিন্তু তোমরা যেভাবে জাতীয় সংসদের সামনে জুলাই ঘোষণা পত্র পেশ করলে আমার সমস্ত দল সেগুলো মেনে নিয়ে একটা সম্প্রীতির অবস্থা তৈরি করেছিলাম।কিন্তু কিছু কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচনকে নিয়ে এখনো ষড়যন্ত্র তৈরী করে যাচ্ছে। বিভিন্ন রকম বয়ান তৈরি করেছেন। আপনারা যদি বলেন নির্বাচনে অংশ নেব না, নির্বাচনে এইটা করতে হবে সেইটা করতে হবে অথচ আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে জুলাই ঘোষণা পত্র দিয়েছি সুতরাং আমরা বিএনপি’র পক্ষ থেকে আহ্বান জানাতে চাই সকল রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে।
সাবেক মন্ত্রী, বিএনপির বর্ষিয়ান এই নেতা বলেন, আমরা যদি উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি এবং একে অপরের সম্প্রীতি বজায় রেখে নির্বাচনে অংশ নেই তহলেই আমরা একটা সুন্দর সুষ্ঠ নির্বাচন দেখতে পাবো। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই হাসিনার আমলের সেই ডামি নির্বাচন আর এই বাংলাদেশে হবে না, তাহলে কিন্তু সেই নির্বাচন বাংলাদেশের জনগণ মেনে নেবে না। তিনি আরও বলেন, আমরা চাই এই নির্বাচনের সকলে যারা আমরা ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের পার্টিসিপেট করেছিলাম এই নির্বাচনে সবাই ঐক্যবদ্ধ ভাবে পার্টিসিপেট করি।
বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করছি, কেউ কেউ বলছেন যে পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচনে যাব না, কেউ কেউ বলছেন, বিচার ছাড়া নির্বাচনে যাব না, আবার কেউ বলছেন সংস্কার ছাড়া নির্বাচনে যাব না। আমরা আপনাদের বলি দেশ ও জাতির স্বার্থে আপনরা সকলে আসুন আগামী ২০২৬ সালের নির্বাচনে আমরা সকলে একসাথে পার্টিসিপেট করি। দেশ ও জাতির স্বার্থে রাজনৈতিক দল গুলোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি এই প্রশ্নে সম্মত হয়েছে যে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠনে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য বিএনপি সেখানে সমস্ত রাজনৈতিক দলের সাথে ঐক্যমত হয়েছে।
আপনারা দেখেছেন বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বিশ্ববিদ্যালয় ডাকসু নির্বাচনের আহ্বান করেছে। ছাত্রদল নির্বাচনকে স্বাগত জানিয়েছেন।আমরা নির্বাচনে পার্টিসিপেট করতে চাই, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ১৯ টি হলে কমিটি দিয়েছিল। গত কালকে রাত্রে থেকে দেখলাম, গুপ্ত কিছু ছাত্র সংগঠন আর নতুন একটি ছাত্র সংগঠন তারা অশ্লীল কুরুচিপূর্ণ ভাষা যেটি আজ পর্যন্ত বিগত ৫০ বছরে ছাত্র- ছাত্রীর ইতিহাসে এত বাজে স্লোগান দিয়ে আমি কখনো কোন ছাত্র সংগঠনকে দেখিনি, মিছিল করতে আপনাদের টেলিভিশন পত্রপত্রিকায় গতকালকে দেখেছেন তারা কি ভাষা ব্যবহার করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন হলে বিশটা হলে ওরা কোন কমিটি দিতে পারবে না। কেননা তারা শঙ্কিত হয়েছে যে ছাত্রদল হল কমিটি ঘোষণা করলে ছাত্রদলের ভোটব্যাংঙ্ক বেড়ে যাবে। তাই তারা বলতে চাচ্ছে কোন হলে ছাত্র দলের কমিটি দেয়া চলবে না। তারা বলতে ছাত্র রাজনিতী নিষিদ্ধ করা হোক, কোন দেশ আছে যেখানে রাজনীতি বা ছাত্র আন্দোলন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হয় না এমন কোন নজির কেউ দেখাতে পারবেন না, এমন প্রশ্ন রাখেন মেজর অব: হাফিজ।
সুতরাং আজকে যারা এই ডাকসু নির্বাচনকে নিয়ে বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্র করছেন নির্বাচন বন্ধের আয়োজন করছেন, তাদের সুদূরপ্রসারী চিন্তা হল যে বাংলাদেশের নির্বাচন না করে যদি কোন ভাবে ক্ষমতায় থাকা যায় ক্ষমতার ভাগ নেয়া যায়।