
অনলাইন ডেস্কঃ
খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৭টি। এর মধ্যে সমিতি নেতৃবৃন্দই বাদি হয়ে ৫টি মামলা করেছেন। অভ্যুত্থানের সময় ছাত্রদের ওপর হামলা, বিএনপির অফিস ভাংচুরের ঘটনায় মামলা হয়েছে আরও ৭টি। প্রতিটি মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। পরোয়ানা মাথায় নিয়েই ফেসবুকে সরব রয়েছে সাইফুল ইসলাম। প্রায়-ই ভিডিও বার্তা, লাইভসহ ছবি পোস্ট করেন তিনি। অথচ আইনশৃংখলা বাহিনী বলছে, তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট দলীয় কার্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর সংঘর্ষ হয়। সেই সংবাদ পেয়ে অস্ত্র হাতে সাইফুল কার্যালয়ের দিকে যান। সম্প্রতি ওই ছবি দিয়ে নগরীতে পোস্টারিং করা হয়েছে। এতে তাঁকে ধরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
জাতীয় সংসদ ছাড়াও খুলনা সিটি করপোরেশন, আইনজীবী সমিতি, জেলা ক্রীড়া সংস্থা, চেম্বার অব কমার্সসহ গত ১৫ বছরে বিভিন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন সাইফুল। দলীয় প্রভাব ব্যবহার করে কোথাও কোথাও বিজয়ী হয়ে একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা এবং অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এ নিয়ে আইনজীবী সমিতির বর্তমান কমিটি ৫টি মামলা করেছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে আরও দুটি মামলা হয়েছে। গত একবছর ধরে তিনি পলাতক রয়েছে।
সূত্রটি জানায়, গত ২৮ আগস্ট খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির ৭৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাইফুল ইসলামসহ ৫ জনের নামে সদর থানায় মামলা হয়েছে।
মামলার বাদী সমিতির সদস্য সচিব নুরুল হাসান রুবা জানান, এই অভিযোগ ছাড়াও ২০২৪ সালে ক্যাশ থেকে ৭০ লাখ টাকা গ্রহণ, তার ব্যক্তিগত প্রচারণার বিলবোর্ড-ফেস্টুনের ২ লাখ ১৮ হাজার টাকা বিল আইনজীবী সমিতির তহবিল থেকে পরিশোধসহ অনেক অনিয়মের অভিযোগ আছে।আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে বিচারকদের চাপ প্রয়োগের ঘটনায় শুনানিতে ২০২২ সালের ২২ নভেম্বর তাকে ভর্ৎসনা করে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ বলেছিলেন, ‘শুধু আইনজীবী সমাজেরই না, আপনি খুলনার কলঙ্ক।’
খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সচিব নুরুল হাসান রুবা আরও জানান, প্রায় দেড় ডজন মামলা মাথায় নিয়ে আসামি ফেসবুকে আত্মপ্রচার-অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে, আর আইনশৃংখলা বাহিনী তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে-এর চেয়ে লজ্জাজনক ঘটনা আর হতে পারে না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনা জেলা কমিটির সাবেক সদস্য সচিব সাজিদুল ইসলাম বাপ্পী বলেন, অভ্যুত্থানের আগের দিন শর্টগান দিয়ে সাইফুল ইসলাম সাধারণ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি ছুড়েছেন। গত ১৫ বছরে শত শত কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন। অথচ তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করছে না। তিনি ফেসবুকে গর্বের সঙ্গে নিজেকে জাহির করছেন। এটা ছাত্র-জনতার রক্তের সঙ্গে প্রতারণা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, তাকে গ্রেপ্তার করতে কয়েক দফা অভিযান চালানো হয়েছে। তিনি প্রতিবারই স্থান পরিবর্তন করছেন। পুলিশের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।