
অনলাইন ডেস্কঃ
নতুন বছরের প্রথম দিনে লাখ লাখ খুদে শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে পাঠ্যবই তুলে দেওয়ার সরকারি প্রশংসিত উদ্যোগটি অতিমুনাফালোভী একটি সিন্ডিকেটের কবলে পড়েছে। বিগত কয়েক বছর বিনামূল্যের বিপুলসংখ্যক এ বই ছাপার কাজটি নিয়ন্ত্রণ করতেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর আস্থাভাজন প্রেস মালিকরা। এমনকি গত বছরের আগস্টে সরকার পরিবর্তনের পর দেশের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটেও একজন সাবেক মন্ত্রীর ভাইয়ের নেতৃত্বে ওই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য উল্টো আরও শক্তিশালী হয়েছে। দরপত্র প্রক্রিয়ায় কারসাজির মাধ্যমে সিন্ডিকেটটি এ বছর সরকারের জন্য পাঠ্যবই ছাপানোর খরচ গত বছরের চেয়ে ৩২৩ কোটি টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে। চলতি বছর শুধু প্রেস মালিকদের মধ্যে সমঝোতার কারণে বিপুল অঙ্কের বাড়তি এ খরচ হচ্ছে, অথচ ২০২১-২৩ সালে পাঠ্যবই ছাপানোয় সরকারের সাশ্রয় হয় ৫০০ কোটি টাকা। পাঠ্যবই ছাপানোর এ দরপত্র প্রক্রিয়ায় বড় কয়েকটি প্রেস নিজেদের মধ্যে সমঝোতা, ছোট ও মাঝারি প্রেসকে হুমকি দিয়ে বেশি দর দিতে বাধ্য করা এবং ই-জিপিতে দরপত্র দেওয়ার পাসওয়ার্ড নিয়ন্ত্রণের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্য ৩০ কোটির বেশি পাঠ্যবই ছাপাবে সরকার। এজন্য মোট ৮২৬টি লটে ভাগ করে দরপত্র আহ্বান করছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এরই মধ্যে বেশিরভাগ লটের দরপত্র মূল্যায়ন শেষ করে শিক্ষার দুটি মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে সংস্থাটি। এসব দরপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বই ছাপাতে গিয়ে ৩২৩ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছে সরকার। বড় প্রেস মালিকদের সিন্ডিকেটের কারণে দরপত্রগুলো প্রতিযোগিতামূলকের বদলে একচেটিয়া হয়েছে। যদিও প্রেস মালিকদের দাবি, চলতি বছর নতুন নতুন কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়ায় খরচ বাড়বে, এজন্য বাড়তি দরে দরপত্র দিতে হয়েছে। এনসিটিবি চেয়ারম্যানের মতে, এ সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে, কারণ তারা এমনভাবে দর দিয়েছে যে, তা বাতিল করাও সম্ভব নয়।
এনসিটিবি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, প্রাথমিকের ৯ কোটি ১৯ লাখ এবং মাধ্যমিকে ২১ কোটি ৪২ লাখ বইয়ের জন্য ৮২৬টি লটে ভাগ করে বই ছাপার দরপত্র দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিকের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণি এবং মাধ্যমিকের ষষ্ঠ-অষ্টম শ্রেণির ৪৪৫টি লটের দরপত্র মূল্যায়নের কাজ শেষ করে অনুমোদনের জন্য নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। যার ধারাবাহিকতায় গতকাল মঙ্গলবার অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির ৪ কোটি বই কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বাকি শ্রেণিগুলোর বইয়ের দরপত্র অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত এ কমিটিতে উপস্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে।
এনসিটিবির মুদ্রণ শাখার তথ্য বলছে, বইয়ের দরপত্রের কাজ দেওয়া হয় ফর্মা (৮ পৃষ্ঠায় এক ফর্মা) হিসেবে। আগামী শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের ৩০ কোটি বইয়ের জন্য মোট ৫৭৬ কোটি ফর্মা ধরে দরপত্র হয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিকে মোট ১৩০ কোটি ৬ লাখ ৬৯ হাজার এবং মাধ্যমিকের ৪৪৫ কোটি ৭১ লাখ ১৬ হাজার ফর্মা ধরা হয়েছে। গত বছরের সঙ্গে চলতি বছরের দরপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চলতি বছর প্রাথমিকের প্রতি ফর্মায় ৩৯ পয়সা এবং মাধ্যমিকে ৫০ পয়সা বেশি দর দিয়েছেন প্রেস মালিকরা। সমঝোতা করে দরপত্রের কারণে দুই স্তরের পাঠ্যবই ছাপাতে সরকারের বাড়তি খরচ হচ্ছে ৩২৩ কোটি টাকা। আর এসব সমঝোতায় নেতৃত্বে দিচ্ছেন শেখ হাসিনার সরকারের সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের ছোট ভাই আনন্দ প্রিন্টার্সের স্বত্বাধিকারী রাব্বানি জব্বার। তার সঙ্গে ছিলেন বাতিল হওয়া মুদ্রণ শিল্প সমিতির শীর্ষ কয়েকজন নেতা ও ব্যবসায়ী। দরপত্র দেওয়ার আগে কয়েক দফা বৈঠক করে কোন প্রেস কত লটের কাজ পাবে এবং কত দর দেওয়া হবে, তা-ও নির্ধারিত হয় ওই বৈঠকগুলোতে। অভিযোগ রয়েছে, ছোট প্রেসগুলোর ই-জিপিতে দরপত্র জমার পাসওয়ার্ড পর্যন্ত রয়েছে মুদ্রণ শিল্প সমিতির নেতাদের হাতে। তারাই দর ও লট নির্ধারণ করেছেন। কয়েকজন প্রেস মালিক সমঝোতার বিপরীতে নিজেদের মতো করে দরপত্র দেওয়ার চেষ্টা করলেও তাদের ২০২৩ সালের মতো পরিণতি (ওই বছর একচেটিয়া দরপত্র হয়) ভোগের হুমকি-ধমকি দিয়ে নির্ধারণ করে দেওয়া দর দিতে বাধ্য করা হয়। যদিও কোনো কোনো প্রেস সামনে নবম শ্রেণিতে নিজেদের মতো করে দরপত্র দেওয়ার চিন্তা করছে।
এনসিটিবির কর্মকর্তারা বলছেন, এ সিন্ডিকেট ভাঙতে হলে আন্তর্জাতিক দরপত্র দিতে হবে। যেমন বিগত সময়ে প্রাথমিকে কাজ করত ভারতীয় কয়েকটি প্রেস। তাদের ঠেকাতে প্রাক্কলনের চেয়ে গড়ে ১০ থেকে ২৫ শতাংশ কমে দর দিতেন দেশের প্রেস মালিকরা। ২০২৩ সালে যা ৩০ শতাংশে নেমে আসে। ২০২৪ সালে কাজ পাওয়ার পরও ভারতের দুটি প্রতিষ্ঠানের কাজ বাতিল করে পূর্ণ দরপত্র দিলেই এক লাফে সেই দর বেড়ে যায় ২০ শতাংশের ওপরে। এতে সরকারের বাড়তি খরচ হয় ৫২৫ কোটি টাকা। এদিকে বর্তমানে সরকারের এ বই ছাপার কাজ করতে আগ্রহী চীন, কোরিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশের মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান। এমন প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক দরপত্র হলে আর্থিক সাশ্রয়ের পাশাপাশি বইয়ের মান ভালো হবে বলে মনে করছেন এনসিটিবির কর্মকর্তারা।
কালবেলার হাতে আসা চলমান দরপত্রের নথিপত্রের অনুলিপি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, প্রাথমিকের ২৪২ লটের মধ্যে ১৪৪ লটের দরপত্র মূল্যায়ন হয়েছে। সেখানে প্রতি ফর্মায় দর দেওয়া হয়েছে ৩ টাকা ৪৫ পয়সা, যেখানে সরকারের প্রাক্কলন ছিল ৩ টাকা ৪৩ পয়সা। গত বছর ছিল ২ টাকা ৬৫ পয়সা। অর্থাৎ প্রাথমিক স্তরে গত বছরের চেয়ে চলতি বছর ফর্মা প্রতি গড়ে দর বেড়েছে ৭৮ পয়সা। সে হিসাবে প্রাথমিকের ১৩০ কোটি ৬ লাখ ৬৯ হাজার ফর্মায় খরচ বেড়েছে ১০০ কোটি ৪৫ লাখ টাকার বেশি। ২০২৩ সালে দর ছিল ১ টাকা ৯০ পয়সা। দুই বছরের ব্যবধানে ফর্মাপ্রতি খরচ বাড়িয়েছে ১ টাকা ৪৫ পয়সা। সে হিসেবে শুধু সমঝোতার জন্য দুই বছরের ব্যবধানের প্রাথমিকের বই ছাপাতে খরচ বেড়েছে ১৮৮ কোটি টাকা।
একাধিক প্রেস মালিক জানান, ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রাথমিক স্তরে ভারতের কয়েকটি প্রেস দরপত্রে অংশ নিত। তাদের ঠেকাতে দেশের প্রেস মালিকরা জোটবদ্ধ হয়ে কম মূল্যে কাজ নিতে সর্বনিম্ন মানের বই দিতেন। ২০২৩ সালের আগের বছরগুলো দর ছিল ২ টাকার কম। ২০২৪ সালে ১ কোটির বেশি বই ছাপানোর কাজ পায় ভারতের দুটি প্রতিষ্ঠান। যদিও গত ৫ আগস্টের পর সেই কাজ বাতিল করে সরকার। গত বছর শুধু ভারতীয় প্রতিষ্ঠান না থাকাতেই দেশের প্রেসগুলো একজোট হয়ে এক লাফে ফর্মাপ্রতি দর প্রায় দেড় টাকা বাড়িয়ে দেয়।
একইভাবে মাধ্যমিক পর্যায়ের বই ছাপার কাজের দরও বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে মোট ৫৮৪টি লটের মধ্যে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির ৩০০ লটের দরপত্র মূল্যায়ন হয়েছে। মাধ্যমিকে চলতি বছর গড়ে ৩ টাকা ১৮ পয়সায় কাজ নিয়েছেন প্রেস মালিকরা। গত বছর প্রথমে দরপত্র দেয় ২ টাকা ৬৮ পয়সা দরে। ৫ আগস্টের পর সেই দরপত্র বাতিল করে সরকার। দীপু মনির সিন্ডিকেট ভাঙবে—এমন আভাস পাওয়ায় প্রেস মালিকরা আগের চেয়ে গড়ে ১৯-২০ পয়সা বেশি ধরে দরপত্র জমা দেন। অর্থাৎ শুধু সরকার বদলের ফলে এক বছরে সরকারের বাড়তি খরচ হয় (দশম শ্রেণিসহ) ৭২৬ কোটি টাকা। গত বছরের প্রথম দরপত্রের সঙ্গে চলতি বছরের তুলনা করলে ফর্মাপ্রতি দর বেড়েছে ৫০ পয়সা। সে হিসেবে মাধ্যমিকের ৪৪৫ কোটি ৭২ লাখ ফর্মায় খরচ বেড়েছে ২২২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। একই বইয়ের ২০২৩ সালের দর ছিল ১ টাকা ২৯ পয়সা। তার সঙ্গে তুলনা করলে খরচ বেড়েছে (প্রতি ফর্মার ব্যবধান ১.০৯ পয়সা) ৪৮৫ কোটি টাকা।
সার্বিক বিষয়ে এনসিটিবি চেয়ারম্যানের চলতি দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী বলেন, ‘সব প্রেস মালিক যদি একজোট হয়ে যান, তাহলে আমাদের কী করার আছে! আমাদের নিজস্ব সোর্স, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে এটা জানার চেষ্টা করেও পারেনি। তারা এমনভাবে দর দিয়েছেন যে, না পারব দরপত্র বাতিল করতে, না পারব সিন্ডিকেট ভাঙতে।’ তার মতে, দর যাই দেওয়া হোক না কেন এবার বইয়ের মানের ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। কাজ পাওয়া প্রতিটি প্রেসে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হবে, আর সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ থাকবে এনসিটিবিতে। এ ছাড়া কাগজ ও বইয়ের মান তদারকির দায়িত্বে থাকা ইন্সপেকশন এজেন্সি নিয়োগেও কড়াকড়ি থাকবে।
প্রেস মালিকদের দাবি, এ বছর বই ছাপানোর জন্য দেওয়া নির্দিষ্ট শর্তগুলোই দর বাড়ার প্রধান কারণ। এবার কাগজের স্থায়িত্ব বা বাস্টিং ফ্যাক্টর ১৬ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে। কাগজের পুরুত্ব (জিএসএম) ৮২ থেকে বাড়িয়ে ৮৫ গ্রাম করা হয়েছে। এর পাশাপাশি যুক্ত হয়েছে অপটিক্যাল ব্রাইটনিং এজেন্ট (ওবিএ) ব্যবহারের শর্ত। বাস্টিং ফ্যাক্টর ও ওবিএ ব্যবহারের ফলে কাগজে ন্যাচারাল কালার বা অফ-হোয়াইট কালার আসবে। চিকিৎসকদের পরামর্শে শিশুশিক্ষার্থীদের চোখের সুরক্ষায় এমন শর্ত যুক্ত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০ শতাংশ বাস্টিং ফ্যাক্টর আনতে হলে এসব কাগজে শতভাগ পাল্প বা মণ্ড ব্যবহার করতে হবে। কোনো কারণে যদি আগের মতো পুরোনা কাগজ ‘রিসাইকেল্ড’ বা পুনর্ব্যবহার এবং আংশিক পাল্প মিলিয়ে কাগজ বানালে ২০ শতাংশ বাস্টিং ফ্যাক্টর আসবে না। আগে ১৪ বা ১৬ বাস্টিং ফ্যাক্টরে ‘ভার্জিন’ (অব্যবহৃত) পাল্প বা মণ্ডের সঙ্গে ‘রিসাইকেল্ড’ (ব্যবহৃত) পাল্প মিলিয়ে কাগজ বানানো হতো এবং সেই কাগজ দিয়ে পাঠ্যবই ছাপানো হতো। চলতি বছর সেটি আর সম্ভব নয়।
প্রেস মালিকদের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রতি ফর্মার জন্য মোট খরচ হয়েছে ২ টাকা ৯৫ পয়সা, যার মধ্যে কাগজের দাম ২ টাকা শূন্য ৮ পয়সা, কাভার ২৫ পয়সা, প্রিন্টিং ১২ পয়সা, বাইন্ডিং ১৫ পয়সা, কাভার ইউভি বা প্রিন্টিং ৫ পয়সা, পরিবহন খরচ ৫ পয়সা, ব্যাংক ঋণের সুদ ৮ পয়সা এবং কর বাবদ ২১ পয়সা। এ খরচের ওপরে তারা ১৫ থেকে ২০ পয়সা লাভ ধরে দরপত্র জমা দিয়েছেন।
বিগত তিন বছরের দরপত্র বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত তিন অর্থবছরে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র হওয়ায় বই ছাপায় সরকারের সাশ্রয় হয় প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০২১ সালে সাশ্রয় হয় ৩০০ কোটি টাকা। আর ২০২২ ও ২০২৩ সালে ১০০ কোটি টাকা করে সাশ্রয় হয়। ওই বছর প্রতিটি লটের বিপরীতে গড়ে সাত-আটটি দরপত্র জমা পড়লেও চলতি বছর সর্বোচ্চ চারটি করে দরপত্র জমা পড়ে। এটাকে কোনোভাবেই প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র বলতে নারাজ সংশ্লিষ্টরা।
এ প্রসঙ্গে এনসিটিবির সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) অধ্যাপক ড. রিয়াদ চৌধুরী বলেন, ‘প্রেস মালিকদের সিন্ডিকেট পুরোনো। চলতি বছর সেই সিন্ডিকেট করে দর দিয়েছে, সেটা আমরা অনুমান করতে পেরেছি।’ তার মতে, এবার বইয়ের মানে কোনো ছাড় পাবে না—এমনটা জেনেই প্রেস মালিকরা আগেই ভালো দরে কাজ নিচ্ছেন। রিয়াদ চৌধুরী বলেন, ‘উদ্দেশ্য যদি ভালো হয়, তবে সেই সিন্ডিকেট দরকে সাধুবাদ জানাতে চাই।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাবেক সভাপতি তোফায়েল খান বলেন, ‘এনসিটিবি পুরোনো লোকগুলোর ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় এ সিন্ডিকেট ভাঙা সম্ভব হয়নি। এজন্য ক্যাপাসিটি চার্জ ও অভিজ্ঞতার শর্ত শিথিল করে নতুনদের কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। কিন্তু সেটি না করে নতুন নতুন আরও কঠিন শর্ত যুক্ত করায় এতে নতুন প্রতিষ্ঠানের কাজ পাওয়া তো দূরের কথা, উল্টো পুরোনো সিন্ডিকেট আরও শক্তিশালী হচ্ছে।’
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, শর্ত শিথিল করায় গত বছর নবম শ্রেণির এক লটের বিপরীতে সাত-আটটি প্রেস প্রতিযোগিতা করলেও অন্যান্য শ্রেণিতে সর্বোচ্চ তিনটির বেশি হয়নি।
সূত্রঃ কালবেলা