
অনলাইন ডেস্কঃ
দেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সব সমস্যা সমাধানের প্রথম ধাপ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে দলের বর্ধিত সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হচ্ছে সব সমস্যা সমাধানের প্রথম ধাপ। যত দ্রুত সম্ভব সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। তার আগে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঠামো ঠিক করতে হবে।
একতরফা নির্বাচন করে কারও লাভ হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, একতরফা নির্বাচন হলে আবারও গণ্ডগোল হবে। এর একটি স্থায়ী সমাধান দরকার। পুলিশ ও প্রশাসন যেন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। সরকার যেন নিরপেক্ষভাবে কাজ করে সেই নিশ্চয়তা থাকতে হবে।
ডিসেম্বর বা ডিসেম্বরের আগে নির্বাচন হলেও জাতীয় পার্টির আপত্তি নেই জানিয়ে তিনি বলেন, অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে নির্বাচনে ডিসি ও এসপিরা নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারবেন। বর্তমান সরকার তাদের দলের জন্য কী ভূমিকা নেবেন, তা-ও পরিষ্কার হওয়া দরকার।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিচার ব্যবস্থায় কেউ বাধা দিচ্ছে না, বিচারের সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে বিভিন্ন অজুহাতে নির্বাচন পেছানো হচ্ছে। বর্তমান সরকার বুঝতে পারছে না, নির্বাচন দীর্ঘায়িত করে দেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করছে। এই সরকার দেশ চালাতে পারবে না।
জিএম কাদের বলেন, এই সরকার বৈধ না, আবার অবৈধও না। কারণ, আমরা মেনে নিয়েছি তাই মাঝামাঝি হয়ে গেছে। নির্বাচিত সরকারকেই বৈধ সরকার বলা হয়। এই সরকার নির্বাচিত নয় কিন্তু হাইকোর্ট এই সরকারকে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন, আমরা মেনে নিয়েছি। সরকার যে সংস্কারই করুক তা নির্বাচিত সংসদে পাশ করতে হবে। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো সংস্কারের প্রয়োজন নেই।
দেশের ৫০ ভাগ মানুষকে বাদ দিয়ে সরকার যে সংস্কার করতে চাচ্ছে, তা কোনোদিনই কার্যকর হবে না বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সংস্কার হচ্ছে নির্বাচন পেছানোর বাহানা। নির্বাচন পেছানোর কারণে তারা কতবড় গর্তে পড়বে, তা তারা বুঝতে পারছে না। সামনের দিকে মহাসংকট আসবে, পয়সা থাকবে না, বিদেশ থেকে মালামাল কিনতে হবে। আমাদের চাল পর্যন্ত কিনতে হচ্ছে।
নির্বাচন নিয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে আমি এবং জাতীয় পার্টির ৭০ ভাগ নেতা-কর্মী নির্বাচনে অংশ নেয়নি। আমাকে নির্বাচিত করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল, আমি রাজি হইনি। কিন্তু ২০১৪ সালের স্থানীয় নির্বাচনে বিএনপিসহ প্রায় সব দলই অংশ নিয়েছিল। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তো দেশের সব রাজনৈতিক দলই অংশ নিয়েছিল। আমরাও সবার সঙ্গে নির্বাচনে গিয়েছিলাম।
২০২৪ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে ‘বিশেষ’ কারণে নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল দাবি করে তিনি বলেন, আমাদের নির্বাচনে যেতে হয়েছে, এটা বেআইনি কাজ নয়। এতে দোসর বলা যায় না, আমার দল যদি নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেয়, আমি নির্বাচন করতে পারি। আমি তো কোনো আইন ভঙ্গ করিনি। নির্বাচনের আগে ও পরে তৎকালীন সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছি। আমার চেয়ে কঠোর সমালোচনা কেউ করেনি।
গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, নির্বাচন সঠিক হয়নি এর বিশদ বর্ণনা দিয়ে বক্তৃতা করেছি, কলাম লিখেছি। সব রেকর্ড আছে। গ্যাস, বিদ্যুৎ, পদ্মা সেতু ও উন্নয়নের নামে দুর্নীতি ও লুটপাটের কঠোর সমালোচনা আমার চেয়ে কেউ বেশি করেনি।