
স্পোর্টস ডেস্কঃ
অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটে এখন শোকের ছায়া চলছে। না ফেরার দেশে চলে গেছেন দেশটির সাবেক ওপেনার ও অ্যাশেজ তারকা কিথ স্ট্যাকপোল। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) পরপারে পাড়ি জমান ইতিহাসের প্রথম ওয়ানডের স্বাক্ষী ও উইজডেনের সাবেক বর্ষসেরা এই ক্রিকেটার। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।
১৯৬৬ অ্যাশেজের অ্যাডিলেইড টেস্ট দিয়ে তার অভিষেক। তখন ছিলেন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান, পাশাপাশি করতেন লেগ স্পিন। ১৯৬৯ সালে নতুন পথচলা শুরু হয় তার ওপেনিংয়ে। ক্রমেই জায়গা করে নেন বিল লরির উদ্বোধনী জুটির সঙ্গী হিসেবে। ক্যারিয়ারের সফলতম অধ্যায় রচনা করেন ওপেনিংয়েই।
স্ট্যাকপোলের টেকনিক খুব পোক্ত ছিল না। কিন্তু আগ্রাসী ব্যাটিং দিয়ে তা পুষিয়ে দিতেন। বলে প্রবল জোরে হিট করার জন্য পরিচিত ছিলেন তিনি। সেরাটা জমা রাখতেন তিনি অ্যাশেজের জন্য। দেশের মাঠে ১৯৭০-৭১ অ্যাশেজে সাত ম্যাচে রান করেছিলেন তিনি ৫২.২৫ গড়ে ৬২৭। ক্যারিয়ার সেরা ২০৭ রানের ইনিংসটি খেলেছিলেন ওই সিরিজেই।
স্ট্যাকপোল ১৯৭২ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত অ্যাশেজে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন। ৫৩.৮৮ গড়ে সংগ্রহ করেন ৪৮৫ রান। তার ব্যাটিং সিরিজ ২-২ সমতায় শেষ হতে অবদান রাখে। সেই পারফরম্যান্সের পুরস্কার পান তিনি ‘উইজডেন ক্রিকেটার অব দা ইয়ার’ স্বীকৃতি পেয়ে। ওই সফরে দলের সহ-অধিনায়কও ছিলেন তিনি।
১৯৭৪ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়েলিংটন টেস্টে দুই ইনিংসেই শূন্য রানে হওয়ার ম্যাচটিই তার ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট। পিঠের চোটের কারণে পরে ক্রিকেট ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। সব মিলিয়ে ৪৩ টেস্টের ক্যারিয়ার তার। সাত সেঞ্চুরি ও ১৪ ফিফটিতে রান ২ হাজার ৮০৭। বল হাতে উইকেট ১৫টি।
ওয়ানডে খেলেছেন ছয়টি। এর মধ্যে ছিল ইতিহাসের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচটিও। তিনটি উইকেট নিয়েছিলেন তিনি মেলবোর্নের সেই ম্যাচে। পরে বিল লরির সঙ্গে ইনিংস শুরু করে আউট হয়ে যান ১৫ বলে ১৩ রান করে। এই কিংবদন্তির মৃত্যুতে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার চেয়ারম্যান মাইক বেয়ার্ড বলেছেন, ‘ক্রিকেট খেলায় বড় অবদান রাখাদের অন্যতম ছিলেন কিথ। তার প্রভাব ভবিষ্যতে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকবে।’
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২২ সেঞ্চুরিতে রান করেছেন ১০ হাজার ১০০, উইকেট নিয়েছেন ১৪৮টি। ক্রিকেটে অবদানের জন্য ১৯৭৪ সালে তিনি ‘মেম্বার অব দা অর্ডার অব দা ব্রিটিশ এম্পায়ার’ বা ‘এমবিই’ পান। খেলা ছাড়ার পর কোচিং করিয়েছেন। তার হাত ধরে গড়ে উঠেছেন অনেক ক্রিকেটার। পরে রেডিও ও টিভি ধারাভাষ্যকার হিসেবেও আলাদা পরিচিতি গড়েছিলেন, কলাম লিখতেন পত্রিকায়।